কলকাতা, 23 মার্চ: এক ফোনেই হত চাকরি । এতটাই ছিল তাঁর ক্ষমতা। তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে অয়ন শীল (Ayan Shil) সম্পর্কে এমনটাই নিশ্চিত করছে ইডি কর্তারা। এমনকি কেউ যদি তাঁর সুপারিশ করা প্রার্থীর নাম বাতিল করার ফন্দি আঁটতেন, সেক্ষেত্রে প্রভাবশালীকে দিয়ে ফোন করিয়ে সেই সরকারি আধিকারিককে ধমকে চমকে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের বিরুদ্ধে । পাশাপাশি তাঁর মোবাইল ফোনও এখন ইডির আধিকারিকদের কাছে কার্যত বহুমূল্য সম্পদ হয়ে উঠেছে ।
অয়নের সল্টলেকের ভাড়া বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন যে নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি, তার মধ্যে অন্যতম হল অয়নের বেশ কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস । এই ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলি মধ্যে রয়েছে তার বান্ধবী শ্বেতা চক্রবর্তীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টও । সব মিলিয়ে মোট 32টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। এছাড়াও অয়নের মোবাইল এবং বিভিন্ন ই-মেইল আইডি ঘেঁটে তদন্তকারীরা বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিরও নাম পেয়েছেন যাঁরা অয়নকে বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সাহায্য করত।
জানা গিয়েছে অয়নের দ্বারা প্রস্তাব করা ভুয়ো চাকরি প্রার্থীদের নামের তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হত উপর তলার সঠিক জায়গায়। আর সেখান থেকেই যদি কোন সরকারি আমলা বা আধিকারিক বা কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি সেই চাকরিপ্রার্থীর নাম নিয়ে আপত্তি করতেন সেই ক্ষেত্রে একজন বিশেষ প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারস্থ হতেন অয়ন। ফোনে রীতিমতো ধমকানোর পর কড়া ভাষায় হোয়াটসঅ্যাপ করা হত বলেও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। অয়ন শীলের ব্যবহার করা মোবাইল ফোন এবং ই-মেইল আইডি ঘেঁটে ইডির তদন্তকারীরা এই সম্পূর্ণ বিষয়টি জানতে পেরেছেন বলে খবর।
আরও পড়ুন: শহীদ মিনারে অভিষেকের ছাত্র-যুব সমাবেশের অনুমতি দেয়নি সেনা, আদালতের যেতে পারে তৃণমূল
ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে কতটা প্রভাবশালী ছিলেন এই অয়ন শীল । তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট মিলেছে । তার মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটা চ্যাট ইংরেজি এবং হিন্দিতে। বাকি সমস্ত চ্যাট বাংলায়। এমনকি অয়নের ফোনে একাধিক ব্যক্তি এবং মহিলার কনট্যাক্ট নম্বরও রয়েছে যা বাংলা ভাষায় লেখা। ফলে বাংলা পড়তে রীতিমত কালঘাম ছুটছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তকারীদের । তবে এক্ষেত্রেও বাংলা জানা দু'জন বা একাধিক আধিকারিকদের তদন্তকারী দলে শামিল করা হবে কিনা সেই বিষয়ে অবশ্য এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যদিও ইডির তদন্তকারীদের দাবি অয়ন শীলের মোবাইলের বাংলা চ্যাটগুলি পড়লে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসতে পারে।