কলকাতা, 20 মার্চ: রাজ্য়ের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন এমন অনেক অয়ন শীল ! আর সেই 'অয়ন শীল'দের হাতিয়ার করেই বাংলাজুড়ে নিয়োগ দুর্নীতির (WB Recruitment Scam) জাল বিস্তার করেছেন প্রভাবশালীরা ! শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী অয়ন শীলকে গ্রেফতার ও জেরা করার পর এমনটাই দাবি করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট বা ইডি (ED on Ayan Sil Involvement) ৷ তাদের আরও দাবি, শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্র নয় ৷ নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় বিস্তার লাভ করেছে রাজ্যের একাধিক পৌরসভা এবং পৌরনিগমগুলির অন্দরেও ! খুব সম্ভবত সেখানেও অবাধ যাতায়াত ছিল অয়ন শীলের ৷ ইডির হাতে আসা তথ্য বলছে, অয়নের কাছ থেকে বহু বিশেষ সুবিধা ভোগ করতেন প্রভাবশালীরা ৷ বদলে বিভিন্ন পৌরসভা ও পৌরনিগমে কাজের বরাত পেতেন অয়ন ৷
সল্টলেকের এফডি ব্লকের একটি বাড়ির একতলা ভাড়া নিয়েছিলেন অয়ন ৷ এই বাড়িতে ছিল তাঁর অফিস এবং থাকার ব্যবস্থা ৷ এখানে তল্লাশি চালাতেই চক্ষু চড়কগাছ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ৷ কারণ, এই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি ৷ যার মধ্য়ে বিভিন্ন পৌরসভা ও পৌরনিগমে চাকরির পরীক্ষার আসল ওএমআর শিটও রয়েছে ! এই ওএমআর শিট অয়নের অফিসে কীভাবে পৌঁছল, সেই বিষয়টি জানার চেষ্টা করছেন ইডি আধিকারিকরা ৷ তবে, ইডির একটি সূত্র বলছে, ইতিমধ্যেই গোয়েন্দাদের কাছে অনেক কিছু ফাঁস করে দিয়েছেন অয়ন ! জানিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ছাড়াও আরও অনেক রাঘব বোয়াল জড়িয়ে রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতির জালে ! যদিও এই প্রভাবশালীদের নাম এখনও কোনও তরফেই সামনে আনা হয়নি ৷
আরও পড়ুন: 2014 নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বেরিয়ে এল 2012 সালের নথি, সেখানেও দুর্নীতির আশঙ্কা ইডি-র
অয়নের ভাড়া বাড়ি থেকে একটি তালিকা উদ্ধার করা হয়েছে ৷ সেই তালিকায় অন্তত 20 জনের নাম রয়েছে ৷ এই 20 জন আদতে দালাল ! এই দালালরা সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন প্রভাবশালীদের সঙ্গে ৷ অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে যে বিপুল পরিমাণ টাকা তোলা হত, তা এই দালালদের মাধ্যমেই প্রভাবশালীদের হাতে পৌঁছত ! পরবর্তীতে সেই টাকা দুর্নীতির বিভিন্ন স্তরে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হত ৷ অন্যদিকে, প্রভাবশালীদের সুপারিশ অনুসারে নিয়োগপত্র পেতেন অযোগ্য প্রার্থীরা ৷ তাঁদের চাকরি দিতে বঞ্চিত করা হত যোগ্য প্রার্থীদের ৷ ইডির দাবি, রাজ্য়ের বহু স্কুলে এখনও এমন অনেক মানুষ চাকরি করছেন, যাঁরা অযোগ্য এবং অনৈতিকভাবে চাকরি আদায় করেছেন ৷