কলকাতা, 20 মার্চ: নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় গ্রেফতার অয়ন শীলের 1 এপ্রিল পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ সোমবার নগর দায়রা আদালতে ইডি-র তরফে দাবি করা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলার তদন্তে নেমে তারা কার্যত সোনার খনিতে প্রবেশ করেছে। কিন্তু কত পরিমাণ সোনা রয়েছে, সেটা অবশ্য তাদের এখনও অজানা। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষের মিডলম্যান হিসেবে কাজ করতেন অয়ন শীল ৷ আদলতে এমনটাই দাবি করেন ইডি-র আইনজীবী ৷ এরপরই ধৃত অয়ন শীলকে 14 দিনের জন্য় নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় ইডি ৷
আদালতে ইডি-র আইনজীবী দাবি করেন, কৃষ্ণ অর্জুনকে ধর্মের রাস্তা দেখিয়েছিল। এত দুর্নীতি হয়েছে যে এখানে একমাত্র কৃষ্ণ এলেই পথ দেখাতে পারবে। সেইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, রাজ্য়ের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীলের। আর সেখানে দু'জনের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করতেন হুগলি জেলার যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। অয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। আদালতে ইডি জানিয়েছে, নিয়োগে দুর্নীতির টাকা অয়নের হাত থেকেই পার্থের কাছে পৌঁছত বলে জানতে পেরেছে তারা। পালটা অয়ন শীলের আইনজীবীর দাবি, পুরসভায় যে নিয়োগ হয়েছিল সেটাতে ওএমআর তৈরির বরাত পেয়েছিল ওর সংস্থা।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলকে রবিবার গ্রেফতার করেছে ইডি (ED) ৷ তাঁকে দফায় দফায় জেরা করে এবং তাঁর ফ্ল্য়াট ও অফিসে তল্লাশী চালিয়ে যে পরিমাণ টাকা লেনদেনের তথ্য় পাওয়া যাচ্ছে এবং নিয়োগ সংক্রান্ত নথি পাওয়া যাচ্ছে তাতে তারা স্তম্ভিত। এতদিন ইডি শুধু শিক্ষা দফতরের (West Bengal Education Department) নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করছিল। এখন দেখা যাচ্ছে শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে নয়, রাজ্য সরকারের প্রায় সব দফতরের নিয়োগেই ব্য়াপক দুর্নীতি হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, অয়নকে গ্রেফতার করা হয়েছে মূলত রাজ্য়ের বিভিন্ন পৌরসভায় কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির জন্য । প্রাথমিকভাবে ইডি-র অভিযোগ, অয়নের (Ayan Shil) হাত ধরে প্রায় পাঁচ হাজার বেআইনি চাকরি হয়েছে। আদালতে ইডি দাবি করেছে, রাজ্যে চাকরি সংক্রান্ত র্যাকেট ছড়িয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: বহু প্রভাবশালীকে বিশেষ সুবিধা, বিনিময়ে পৌর-বরাত পেতেন অয়ন !
কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতারের পর শান্তনুর নাম পাওয়া যায়। শান্তনুর মোবাইল থেকে অয়নের কথা জানতে পারে ইডি। শান্তনু-কুন্তলের কথপোকথনও সামনে এসেছে। কুন্তল-অয়নের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের মধ্যেও যোগাযোগ ছিল বলে তদন্তকারী সংস্থার দাবি। পাশাপাশি চাকরি দেওয়ার নাম করে অয়ন 50 কোটি টাকা তুলেছে প্রার্থীদের থেকে ৷ এমন তথ্য়ও হাতে এসেছে বলে ইডি-র দাবি। এমনকি এই অয়ন ওএমআর শিট তৈরি করত বলেও অভিযোগ। এদিন আদালতে তদন্তকারী সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, শুধু শিক্ষক নিয়োগ নয়, মজদুর থেকে টাইপিস্ট সব নিয়োগেই দুর্নীতি হয়েছে। যার জন্য় ইডি মনে করছে তারা 'গোল্ড মাইনে' প্রবেশ করেছে।