কলকাতা, 6 জুলাই : সদ্য পেশ হওয়া কেন্দ্রীয় বাজেট প্রস্তাব নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। আজ একটি সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি । মূলত কর্মসংস্থান এবং মূল্য বৃদ্ধি রোধে কোনওরকম দিশা দেখানো হয়নি কেন্দ্রীয় বাজেটে, এমনটাই অভিযোগ তাঁর।
বাংলার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অধ্যাপক অসীম দাশগুপ্ত বলেন, এই বাজেট দেখে তিনি চিন্তিত । অসীমবাবু বলেন,"এমন একটা সময় বাজেট পেশ করা হয়েছে, যখন সারা দেশে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় দুটি সমস্যা বেকারত্ব এবং মূল্য বৃদ্ধি । এই সমস্যা দুটির দিকে কোনও আলোকপাত করা হয়নি এই কেন্দ্রীয় বাজেটে । কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বাজেটে এই দুটি সমস্যার কোন সুরাহার কথা বলেননি । উপরন্তু সমস্যার বৃদ্ধি করেছেন বেশ কিছু জায়গায় । এটাই আমার আশংকা । আগে আমরা গত কয়েক বছর ধরে দেখেছি বাজেটে কর্মসংস্থান তৈরি করার একটি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষিত হত । অর্থাৎ গুরুত্ব আরোপ করা হতো কর্মসংস্থানের সৃষ্টির ক্ষেত্রে । সেই লক্ষ্যমাত্রা ছিল বছরে 2 কোটি । ''
তাঁর দাবি, ইদানিংকালে দু' কোটি অতিরিক্ত কর্মসংস্থান অর্জন করা যায়নি । উপরন্তু বাড়তি বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে । যদিও আগের বাজেটে উদ্যোগ ছিল কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করার । লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে বাজেট স্তরে কর্মসংস্থান সৃষ্টির চিন্তার কথা থাকত । কিন্তু এই বাজেটে কর্মসংস্থান নিয়ে কোন বক্তব্য নেই । কেন নেই?" প্রশ্ন অসীমের ।
মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় সরকার কোনও লাগাম হাতে রাখেননি বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে তিনি বলেন, মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাজেটের শেষের দিকে বলা হল তেলের উপর কেন্দ্রীয় অতিরিক্ত উৎপাদন শুল্ক এবং সেস উভয় বৃদ্ধি করেছে যার জন্য পেট্রল-ডিজেলের ১ টাকা করে মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এর মানে খুব সম্ভবত, সব কটি রাজ্য মূল্যযুক্ত কর বৃদ্ধি করতে পারে । এর ফলে পরিবহনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রের মূল্য বৃদ্ধি পাবে । নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাবে ।
অর্থনীতিবিদ অসীম বাবু বললেন, ''সরকার জেনে শুনে মূল্য বৃদ্ধি করল । তেলের দাম যখন আন্তর্জাতিক বাজারে কম, তখন ভারত সরকারের বৃদ্ধি করার কী দরকার ছিল?''
কোনও ক্ষেত্রেই করের হার বাড়েনি । বা কমানো হয়নি । তাঁর কথায়, ''আজব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেটে। কেন্দ্রের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানগুলি বিক্রি করে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা পাওয়া যাবে । অনেক সংস্থাই লাভজনক । সেগুলো বিক্রি করে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার । ''
বাম আমলের অর্থমন্ত্রীর দাবি, ''ইচ্ছে করলে বেশির ভাগ লাভজনক সংস্থাই রাজস্বখাতে চেষ্টা করলে অর্থ আনতে পারত কেন্দ্র। মানুষের কল্যাণের জন্যই সরকার। ''
ছাঁটাই করে লাভ নেই, যে মুহূর্তে সংস্থাগুলি বিক্রি হয়ে যাবে, সব রকম লাভের মুখ দেখা বন্ধ হয়ে যাবে দেশের সরকারের, মন্তব্য করেন তিনি।
রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর কথায়, ''আলোচনার প্রয়োজন। মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। ভেদাভেদ সৃষ্টি হচ্ছে মানুষের মধ্যে। নতুন করে ভেদাভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে কেন্দ্র । ''