কলকাতা, 21 সেপ্টেম্বর: আশ্বিনের শারদপ্রাতে আকাশে বাতাসে মায়ের আগমন বার্তা এসে গিয়েছে ৷ হাতে মাত্র কয়েকটা দিন ৷ তারপরেই বঙ্গবাসী মেতে উঠবে শারোদোৎসব আনন্দে ৷ শুরু হয়ে গিয়েছে মণ্ডপ সজ্জার কাজও ৷ 75তম বর্ষে পদার্পণ করেছে বেহালা মিত্র সংঘের দুর্গাপুজো। এ বছর তাদের থিম 'মানত'। কেমন চলছে মণ্ডপ সজ্জার কাজ, দেখতে উপস্থিত হয়েছিল ইটিভি ভারতের ক্য়ামেরা ৷
মণ্ডপের ভিতরে ঢুকতেই দেখা যায়, শিল্পীরা নানা কাজে ব্যস্ত ৷ তবে অবাক হতে হয় অন্য বিষয় দেখে ৷ সম্প্রতি বেড়ে ওঠা ডেঙ্গির হাত থেকে রক্ষা পেতে উদ্যোক্তারা শিল্পীদের জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছেন মশারি ও মশা মারার ধূপের ৷ ফলে মশারির ভিতর বসেই শিল্পীরা ব্যস্ত নানা কারুকার্য নিয়ে ৷ পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের স্বাস্থ্যের দিকটাও খেয়াল রাখা উচিত ৷ ক্লাবের তরফ থেকে নানা সেবামূলক কাজ করা হয়ে থাকে ৷ তাই যে সকল শিল্পীরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা যাতে কোনও ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্ত না হয়ে পড়েন তাই মশারি ভিতর রঙ, তুলি নিয়ে নকশার কাজ করতে ব্যস্ত শিল্পীরা ৷
75 বছর বলে কথা ৷ তাই থিমেও অভিনবত্ব ৷ পুজো উদ্যোক্তা হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, "উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা হল ভিল উপজাতি ৷ তাঁরা অবলুপ্তির শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ সেই সম্প্রদায়ের শিল্প, সংস্কৃতি, ভাবনা পুজো মণ্ডপে সজ্জার মধ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে ৷ যাতে সাধারণ মানুষও এই সম্প্রদায়ের মধ্য দিয়ে ভারতীয় শিল্প ও সংস্কৃতির আর এক দিক দেখতে পান ৷ আমাদের পুরো প্যান্ডেল হচ্ছে মাটির কাজ দিয়ে ৷ প্রথম প্রস্তর যুগের কাছাকাছি সময়ে ভিল উপজাতিদের সভ্যতা শুরু হয়েছিল ৷ সেই সময়, পাথরের উপর মাটির প্রলেপ দিয়েই তৈরি হত ঘরবাড়ি ৷ সেই বিষয়টাকেই এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে দর্শনার্থীদের ভালো লাগে ৷"
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর উৎসাহে এবার বার্সেলোনাতেও ধুমধাম করে দুর্গোৎসব
থিম শিল্পী তাপসী সাহা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ভিল উপজাতির মানুষদের পূজা অর্চনার রীতি, নীতি, আচার, অনুষ্ঠান শিল্প কারুকার্য উঠে আসবে থিমে। শিল্পীর কথায়, 'ভিল' উপজাতির মানত বা মন্নতের মধ্যে উন্নত চিন্তাশৈলীর পরিচয় পাওয়া যায়। সেই দিকই উঠে আসবে এই পুজো মণ্ডপের থিমে। পুজোয় প্রতিমা শিল্পী বানাচ্ছেন উৎপল ঘোষ, আবহ সঙ্গীতের দায়িত্বে রয়েছেন গৌতম ব্রহ্ম।
'মানত' থিমকে বাস্তবায়িত করতে মণ্ডপ সজ্জায় দিন-রাত এক করছেন শিল্পীরা ৷ নজর কাড়ার মতো বিষয়, সেই শিল্পীদেরও পূর্ণ মর্যাদা দিয়েই তাঁদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় কোনও খামতি রাখছেন না পুজো উদ্যোক্তরাও ৷ মায়ের আগমণ তাই শিল্পী ও উদ্যোক্তা উভয়ের কাছে বড় সুখের, বলেই মনে করা হচ্ছে ৷