কলকাতা, 11 অক্টেবর : রেড রোডে শুরু হতে চলেছে মেগা দুর্গা কার্নিভাল । বিকেল ৪ টে থেকে শুরু অনুষ্ঠান । জঙ্গলমহল-সহ বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরের রাঙামাটির ছোঁয়ায় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে মঞ্চ-সহ রেড রোড । রাজ্য সরকার যখন কার্নিভালের প্রস্তুতিতে মত্ত ৷ তখন পুজো কার্নিভালকে অপ্রাসঙ্গিক বলে কটাক্ষ করলেন বিরোধীরা ৷
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র তীব্র ভাষায় কার্নিভালের নিন্দা করেছেন ৷ তিনি বলেন, "দুর্গাপুজোর কার্নিভাল দেখতে চায় না এরাজ্যের মানুষ। নানাবিধ সংকট এবং সমস্যার মধ্যে রয়েছেন রাজ্যবাসী। কার্নিভাল এর থেকে অনেক বেশি জরুরি ছিল রাজ্যে কর্মসংস্থান ৷ এটাই রাজ্যের দস্তুর । যখন দিনের পর দিন ন্যায্য বেতনের দাবিতে প্যারাটিচাররা রাস্তায় অনশন করে বসে থাকে তখন তাদের কথা কেউ শোনে না । যখন সরকারি কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে মহার্ঘ ভাতা না পেয়ে, পে কমিশনের স্পষ্ট বার্তা না পেয়ে, যন্ত্রণায় ভোগে তখন দুর্গাপুজোর জন্য অনুদান দশ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করে দেওয়া হয় পঁচিশ হাজার টাকা । এটাই হচ্ছে এরাজ্যের দস্তুর । কার্নিভালে কয়েক কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে প্রত্যেক বছর । এরাজ্যে এই অপচয় মানায় না । রাজ্যে অর্ধেকের বেশি লোক বেকার । দু'বেলা পেটপুরে ভাত খেতে পায়না ৷ পৃথিবীর একশোটা দেশ খুঁজলে পাওয়া যাবে, যেখানকার লোকসংখ্যার সঙ্গে এদেশের ফুটপাথে থাকা মানুষের সংখ্যা সমান । সেই রাজ্যে এই আতিশয্য মানুষ ক্ষমতার দম্ভে হয়তো মেনে নেয় । কিন্তু মন থেকে মেনে নেয় না ৷ "
CPI(M) বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য কার্নিভালকে অপ্রাসঙ্গিক বলে কটাক্ষ করেছেন ৷ তিনি বলেন, " সরকার কখনও এইরকমভাবে কোনও একটা ধর্মের বিশেষ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কার্নিভাল করতে পারে না । এটা আমাদের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের বিরোধী ৷ রাজ্য সরকারের যে লাখ,লাখ-কোটি কোটি টাকা খরচ হয় সেই টাকা দিয়ে পুজোর সময় রাস্তার ফুটে বসে থাকা অসংখ্য গরিব মানুষকে নতুন জামা কিনে দেওয়া যায় ৷"
তিনি আরও বলেন,"সরকার নিজের প্রচারে এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজের চটকে ব্যস্ত ৷ প্রকৃত অর্থে অনেক পুজো প্যান্ডেলের বাইরে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে বিশ্ববাংলা বিশেষ পুরস্কারে 'আমরা সম্মানিত' বলে লেখা থাকে । কিন্তু বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয় একটি-দুটি পুজোকে । স্বাভাবিকভাবেই এখানে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত হওয়ার সহজ মানে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙানো ৷ অতীতে পুজো নিয়ে এত রাজনীতি ছিল না ৷"
তন্ময় ভট্টাচার্যের বক্তব্য, "অধিকাংশ পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর কথায় বাধ্য হয়ে কার্নিভালে যাচ্ছেন ৷ সকাল থেকে সেজেগুজে আর কার্নিভালের অপেক্ষায় থাকতে চান না তাঁরা ৷ এমন কী তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোক্তারাও এই কার্নিভালের বিরোধিতা করেছেন । কিন্তু তাঁদের কিছু বলার ক্ষমতা নেই । যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী তাঁদেরকে আসতে বাধ্য করছেন ।"