ETV Bharat / state

কোরোনা রাজনীতির বিষয় নয়, বলছেন রাজ্যের চিকিৎসকরা

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, "দুর্ভাগ্যবশত পরিসংখ্যান নিয়ে কিছু মতভেদ আমরা দেখতে পাচ্ছি ।" তাঁর মতে, যে সরকার যত বেশি কেস খুঁজে বের করতে পারবে সেই সরকার বেশি সজাগ।

কোরোনা
কোরোনা
author img

By

Published : Apr 24, 2020, 8:24 PM IST

কলকাতা, 24 এপ্রিল : রাজ্য সরকার কোরোনা নিয়ে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে । এরপর একইদিনে দু'ধরনের তথ্য দেওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয় । যার জেরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোরোনা নিয়ে প্রকৃত তথ্য লোকানোর অভিযোগ আরও জোরদার হতে থাকে । কোরোনা নির্ণয়ের কিট নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক । এর মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল একে অপরকে চিঠি দিয়েছেন, রাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের আসা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংঘাত । এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের চিকিৎসকরা বলছেন, কোরোনা রাজনীতির বিষয় নয় ।

চিকিৎসকদের একাধিক সংগঠনের তরফে জানানো হচ্ছিল, এ রাজ্যে কোরোনার প্রকৃত তথ্য জানা যাচ্ছে না । প্রকৃত তথ্য জানার জন্য অনেক বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন । প্রকৃত তথ্য জানা সম্ভব না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে । এর পাশাপাশি চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যথাযথ সুরক্ষার প্রয়োজনের কথাও বলা হচ্ছিল । চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরা কোরোনা আক্রান্ত হয়ে পড়লে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে । এই ধরনের বক্তব্য থেকে এখনও সরে আসেনি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন । কোরোনা পরিস্থিতির বিষয়ে 2 এপ্রিল নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এক্সপার্ট কমিটি প্রথমে জানিয়েছিল, রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 53 । সাত জনের মৃত্যু হয়েছে । ওই দিন ঘণ্টা দুই পরই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান, রাজ‍্যে কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে । কোরোনা পজ়িটিভ থাকলেও অন্য কারণে চারজনের মৃত্যু হয়েছে । ওই দিন তখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 34 । খোদ সরকারের তরফে একই দিনে কিছুক্ষণের ব্যবধানে দু'ধরনের তথ্য দেওয়ায় তৈরি হয় বিভ্রান্তি । অনেকে জানতে চান, কোন তথ্য সঠিক ? রাজ্যের কোরোনা পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা ।

তবে শুধুমাত্র একই দিনে সরকারের তরফে দুই ধরনের তথ্য নয়, স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যের ভিত্তিতেও বিভ্রান্তি জারি রয়েছে । স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এই রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা যত বলা হচ্ছে, সেই তুলনায় অনেক কম সংখ্যক কোরোনা আক্রান্তের কথা বলা হচ্ছে স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যে । এ ক্ষেত্রেও প্রশ্ন উঠছে, কোন তথ্য সঠিক? এ দিকে গত কয়েকদিন রাজ্য সরকার কোরোনার যে তথ্য সংবাদমাধ্যমে পেশ করছে, তাতে গত কয়েকদিনে এ রাজ্যে আগের তুলনায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে । এই বিষয়ে মুখ্যসচিব নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তা অনুযায়ী কোরোনা নির্ণয়ে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে বলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে ।

কোরোনায় এ রাজ্যে মৃতের সংখ‍্যা? এই বিষয়েও প্রশ্ন জিইয়ে রেখে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা । কোরোনায় কারও মৃত্যু হয়েছে কি না তা স্থির করতে রাজ্য সরকার তৈরি করেছে অডিট কমিটি । এই ধরনের কমিটি কেন কোনও কোরোনা আক্রান্তের মৃত্যু কারণ স্থির করে দেবে, তা নিয়ে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন যেমন প্রশ্ন তুলছে, সম্প্রতি তেমনই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । আজ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের তরফে যে চিঠি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দেওয়া হয়েছে, তাতেও অডিট কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । সোশাল মিডিয়ায় এককভাবেও কোনও চিকিৎসক এই অডিট কমিটির বিষয়ে প্রশ্ন তুলে এমনও জানিয়েছেন, এই বিষয়টি চিকিৎসকদের কাছে অপমানজনক । প্রকাশ্যে না বলতে চাইলেও চিকিৎসকদের একাংশদের ধারণা, কেউ হয়তো অন্য রোগে আক্রান্ত । সেক্ষেত্রে তাঁর চিকিৎসা চলছে । ওষুধের মাধ্যমে আরও কয়েকদিন তিনি বেঁচে থাকতে পারতেন । কিন্তু, কোরোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে । কোরোনায় আক্রান্ত না হলে তিনি আরও কয়েকটা দিন বেঁচে থাকতে পারতেন । তা হলে, এ ক্ষেত্রে কেন কোরোনায় মৃত্যু হয়েছে বলা যাবে না?

এ রাজ্যে কোরোনায় আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা রাজ্য সরকারের পেশ করা তথ্যের থেকে অনেক গুণ বেশি বলে মনে করছেন সরকারি-বেসরকারি বহু চিকিৎসক । এদিকে এ রাজ্যে কতজন কোরোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, কত জন আক্রান্তের মৃত্যু হচ্ছে, এ সব বিষয়ে প্রকৃত তথ্য সরকারি তরফে চাপা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জারি রয়েছে । অভিযোগ উঠছে, প্রকৃত তথ্য চাপা দেওয়ার লক্ষ‍্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গোপনীয়তা আরও বাড়ানো হচ্ছে । এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "এ রাজ‍্যে কোরোনার প্রকৃত তথ্যের বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে । প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে ।"

21 এপ্রিল ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখা সহ সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকদের সাতটি সংগঠনের তরফে যৌথভাবে রাজ্য সরকারের কাছে 11 দফা দাবি পেশ করার কথা জানানো হয়েছে । এই দাবিগুলির মধ্যে কোরোনার স্বচ্ছ পরিসংখ্যানের বিষয়টিও রয়েছে । চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক চিকিৎসক কৌশিক চাকি বলেন, "কোনও ধোঁয়াশা থাকা বাঞ্ছনীয় নয় । রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র নিজেদের মধ্যে সঠিকভাবে কো-অর্ডিনেট করুক ।" তবে, তিনি বলেন, "সংখ্যা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই । সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মী এবং তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রাণ নিয়ে আমরা চিন্তিত । সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে মারামারি করা মানে আমরা মূল সমস্যা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি । অন্য রাজ্যে তো এ রকম কিছু হচ্ছে না । কোরোনা রাজনীতির বিষয় নয় ।"

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, "দুর্ভাগ্যবশত পরিসংখ্যান নিয়ে কিছু মতভেদ আমরা দেখতে পাচ্ছি ।" তিনি আরও বলেন, "অল্প সময়ের মধ্যে এ রকম অচেনা-অজানা এই কোরোনার বিষয়ে আমরা যতটা সঠিক এবং পাকাপোক্ত তথ্য পাব, আমাদেরই তত লাভ । হয়তো আমরা 25 জন করে সংক্রমণের হার দেখছি । একদিন যদি এই সংখ্যা বেড়ে 35 কিংবা 40 হয়, কিংবা 50 হয়, তাহলে এটা সরকারের কোনও ব্যর্থতা নয় । আমার সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গিতে, কোনও সরকার যদি আরও উদ‍্যোগী হয়ে আরও বেশি সংক্রমণ খুঁজে বার করতে পারে, তা হলে এটা সরকারের লাভ । কোরোনায় 12 জনের মৃত্যু হয়েছে না 22 জনের মৃত্যু হয়েছে, এটা কোনও বিতর্কের বিষয় হতে পারে না । বরং যে সরকার যত বেশি কেস খুঁজে বের করতে পারবে, আমি তো সেই সরকারকে আরও সজাগ বলে মনে করব।"

কলকাতা, 24 এপ্রিল : রাজ্য সরকার কোরোনা নিয়ে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে । এরপর একইদিনে দু'ধরনের তথ্য দেওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয় । যার জেরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোরোনা নিয়ে প্রকৃত তথ্য লোকানোর অভিযোগ আরও জোরদার হতে থাকে । কোরোনা নির্ণয়ের কিট নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক । এর মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল একে অপরকে চিঠি দিয়েছেন, রাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের আসা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংঘাত । এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের চিকিৎসকরা বলছেন, কোরোনা রাজনীতির বিষয় নয় ।

চিকিৎসকদের একাধিক সংগঠনের তরফে জানানো হচ্ছিল, এ রাজ্যে কোরোনার প্রকৃত তথ্য জানা যাচ্ছে না । প্রকৃত তথ্য জানার জন্য অনেক বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন । প্রকৃত তথ্য জানা সম্ভব না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে । এর পাশাপাশি চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যথাযথ সুরক্ষার প্রয়োজনের কথাও বলা হচ্ছিল । চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরা কোরোনা আক্রান্ত হয়ে পড়লে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে । এই ধরনের বক্তব্য থেকে এখনও সরে আসেনি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন । কোরোনা পরিস্থিতির বিষয়ে 2 এপ্রিল নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এক্সপার্ট কমিটি প্রথমে জানিয়েছিল, রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 53 । সাত জনের মৃত্যু হয়েছে । ওই দিন ঘণ্টা দুই পরই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান, রাজ‍্যে কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে । কোরোনা পজ়িটিভ থাকলেও অন্য কারণে চারজনের মৃত্যু হয়েছে । ওই দিন তখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 34 । খোদ সরকারের তরফে একই দিনে কিছুক্ষণের ব্যবধানে দু'ধরনের তথ্য দেওয়ায় তৈরি হয় বিভ্রান্তি । অনেকে জানতে চান, কোন তথ্য সঠিক ? রাজ্যের কোরোনা পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা ।

তবে শুধুমাত্র একই দিনে সরকারের তরফে দুই ধরনের তথ্য নয়, স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যের ভিত্তিতেও বিভ্রান্তি জারি রয়েছে । স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এই রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা যত বলা হচ্ছে, সেই তুলনায় অনেক কম সংখ্যক কোরোনা আক্রান্তের কথা বলা হচ্ছে স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যে । এ ক্ষেত্রেও প্রশ্ন উঠছে, কোন তথ্য সঠিক? এ দিকে গত কয়েকদিন রাজ্য সরকার কোরোনার যে তথ্য সংবাদমাধ্যমে পেশ করছে, তাতে গত কয়েকদিনে এ রাজ্যে আগের তুলনায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে । এই বিষয়ে মুখ্যসচিব নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তা অনুযায়ী কোরোনা নির্ণয়ে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে বলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে ।

কোরোনায় এ রাজ্যে মৃতের সংখ‍্যা? এই বিষয়েও প্রশ্ন জিইয়ে রেখে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা । কোরোনায় কারও মৃত্যু হয়েছে কি না তা স্থির করতে রাজ্য সরকার তৈরি করেছে অডিট কমিটি । এই ধরনের কমিটি কেন কোনও কোরোনা আক্রান্তের মৃত্যু কারণ স্থির করে দেবে, তা নিয়ে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন যেমন প্রশ্ন তুলছে, সম্প্রতি তেমনই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । আজ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের তরফে যে চিঠি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দেওয়া হয়েছে, তাতেও অডিট কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । সোশাল মিডিয়ায় এককভাবেও কোনও চিকিৎসক এই অডিট কমিটির বিষয়ে প্রশ্ন তুলে এমনও জানিয়েছেন, এই বিষয়টি চিকিৎসকদের কাছে অপমানজনক । প্রকাশ্যে না বলতে চাইলেও চিকিৎসকদের একাংশদের ধারণা, কেউ হয়তো অন্য রোগে আক্রান্ত । সেক্ষেত্রে তাঁর চিকিৎসা চলছে । ওষুধের মাধ্যমে আরও কয়েকদিন তিনি বেঁচে থাকতে পারতেন । কিন্তু, কোরোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে । কোরোনায় আক্রান্ত না হলে তিনি আরও কয়েকটা দিন বেঁচে থাকতে পারতেন । তা হলে, এ ক্ষেত্রে কেন কোরোনায় মৃত্যু হয়েছে বলা যাবে না?

এ রাজ্যে কোরোনায় আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা রাজ্য সরকারের পেশ করা তথ্যের থেকে অনেক গুণ বেশি বলে মনে করছেন সরকারি-বেসরকারি বহু চিকিৎসক । এদিকে এ রাজ্যে কতজন কোরোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, কত জন আক্রান্তের মৃত্যু হচ্ছে, এ সব বিষয়ে প্রকৃত তথ্য সরকারি তরফে চাপা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জারি রয়েছে । অভিযোগ উঠছে, প্রকৃত তথ্য চাপা দেওয়ার লক্ষ‍্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গোপনীয়তা আরও বাড়ানো হচ্ছে । এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "এ রাজ‍্যে কোরোনার প্রকৃত তথ্যের বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে । প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে ।"

21 এপ্রিল ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখা সহ সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকদের সাতটি সংগঠনের তরফে যৌথভাবে রাজ্য সরকারের কাছে 11 দফা দাবি পেশ করার কথা জানানো হয়েছে । এই দাবিগুলির মধ্যে কোরোনার স্বচ্ছ পরিসংখ্যানের বিষয়টিও রয়েছে । চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক চিকিৎসক কৌশিক চাকি বলেন, "কোনও ধোঁয়াশা থাকা বাঞ্ছনীয় নয় । রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র নিজেদের মধ্যে সঠিকভাবে কো-অর্ডিনেট করুক ।" তবে, তিনি বলেন, "সংখ্যা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই । সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মী এবং তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রাণ নিয়ে আমরা চিন্তিত । সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে মারামারি করা মানে আমরা মূল সমস্যা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি । অন্য রাজ্যে তো এ রকম কিছু হচ্ছে না । কোরোনা রাজনীতির বিষয় নয় ।"

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, "দুর্ভাগ্যবশত পরিসংখ্যান নিয়ে কিছু মতভেদ আমরা দেখতে পাচ্ছি ।" তিনি আরও বলেন, "অল্প সময়ের মধ্যে এ রকম অচেনা-অজানা এই কোরোনার বিষয়ে আমরা যতটা সঠিক এবং পাকাপোক্ত তথ্য পাব, আমাদেরই তত লাভ । হয়তো আমরা 25 জন করে সংক্রমণের হার দেখছি । একদিন যদি এই সংখ্যা বেড়ে 35 কিংবা 40 হয়, কিংবা 50 হয়, তাহলে এটা সরকারের কোনও ব্যর্থতা নয় । আমার সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গিতে, কোনও সরকার যদি আরও উদ‍্যোগী হয়ে আরও বেশি সংক্রমণ খুঁজে বার করতে পারে, তা হলে এটা সরকারের লাভ । কোরোনায় 12 জনের মৃত্যু হয়েছে না 22 জনের মৃত্যু হয়েছে, এটা কোনও বিতর্কের বিষয় হতে পারে না । বরং যে সরকার যত বেশি কেস খুঁজে বের করতে পারবে, আমি তো সেই সরকারকে আরও সজাগ বলে মনে করব।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.