কলকাতা, 3 এপ্রিল: রাজ্যে এখন বিধানসভা নির্বাচন চলছে । ইতিমধ্যেই দুইদফায় নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ৷ এদিকে, দেশের বিভিন্ন অংশের পাশাপাশি এ রাজ্যেও এখন অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনা সংক্রমণ । এই ধরনের পরিস্থিতির কারণে চিন্তায় রয়েছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন অংশ । যার জেরে, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য রাজনৈতিক মিটিং, মিছিল সহ অন্য সর্বত্র মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলার বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করার আবেদন জানালেন চিকিৎসকরা । একই সঙ্গে, অপ্রয়োজনীয় জমায়েতের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপের আবেদনও তাঁরা জানিয়েছেন । তাঁদের এসব আবেদন রাজ্যের মুখ্যসচিবের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনেও চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে ।
গতকাল স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, রাজ্যে একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন 1 হাজার 733 জন । এভাবে ফের অতি দ্রুত সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে চিকিৎসকদের বিভিন্ন অংশের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে । ওই সব অংশের তরফে জানানো হয়েছে, এ রাজ্যেও করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়ে গিয়েছে । এদিকে, এভাবে রাজ্যে সংক্রমণ বেড়ে চললেও, সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যাচ্ছে না অধিকাংশ মানুষকে । যার জেরে চিকিৎসকদের বিভিন্ন অংশের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে । এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে চিকিৎসক সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম ।
আরও পড়ুন, উদ্বেগে উদ্ধব, লকডাউনের হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যবাসীকে
ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে । এর মধ্যে দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে । গত কয়েক দিন ধরে এ রাজ্যেও করোনা সংক্রমণ অতি দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে ৷ এটা খুবই চিন্তার বিষয় । এই ধরনের পরিস্থিতি সামলাতে অবিলম্বে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাঁরা আবেদন রাখছেন । কোন কোন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই চিঠিতে আবেদন জানানো হয়েছে ? ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে:
- করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে । এর জন্য রাজনৈতিক মিটিং, মিছিল সহ অন্য সর্বত্র মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের পাশাপাশি ফিজ়িকাল ডিসট্যান্স মেনে চলার বিষয়টি বাধত্যামূলক করতে হবে ।
- কোনও উৎসব, ধর্মীয় কোনও অনুষ্ঠানের পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় জমায়েতের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে।
- করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়ার উপর আরও জোর দেওয়া প্রয়োজন । তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও যেভাবে এবার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে, তাতে তরুণ প্রজন্মকেও ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হোক
- করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ট্রেসিং, টেস্টিং, আইসোলেশন এবং ট্রিটমেন্ট-এর প্রয়োজন । অবিলম্বে টেস্টের সংখ্যা বাড়াতে হবে ।
তবে, শুধুমাত্র এইসব বিষয় নয় । ওই চিঠিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের তরফে চিকিৎসক রাজীব পাণ্ডে, চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ এবং চিকিৎসক কৌশিক লাহিড়ী জানিয়েছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সঙ্গে সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের যে সব স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন, তাঁদের জন্য অ্যাডিশনাল কোভিড অ্যালাওয়েন্স দেওয়া হোক । গত বছর করোনার বিরুদ্ধে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী লড়াই করেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকে করোনায় শহিদ হতে হয়েছে । সকলের জন্য সরকারি তরফে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হোক ।