কলকাতা , 18 মে : রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে 10 জুন পর্যন্ত । কিন্তু, তার পর কি স্কুল খোলা সম্ভব হবে ? হলেও কোন পদ্ধতিতে , কোন নিয়মে খোলা যাবে , কীভাবে স্কুল স্যানিটাইজ় করা হবে , কীভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে । এই ধরনের একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর । জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই বিস্তারিত আলোচনা করা হচ্ছে ।
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে আগেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে , লকডাউন পরবর্তী সময়ে 30 শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে স্কুল খোলা যেতে পারে । স্কুল খোলা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সম্পূর্ণ গাইডলাইন তৈরি করছে NCERT । পশ্চিমবঙ্গেও স্কুল খোলার জন্য গাইডলাইন তৈরির উদ্দেশে সব স্তরে বিস্তর আলোচনা শুরু করেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর । কয়েকদিন ধরেই চলছে এই আলোচনা । সূত্রের খবর , শিক্ষামন্ত্রীর স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচিবদের সঙ্গে আলোচনা থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক স্তর পর্যন্ত আলোচনা চলছে । এমনকী, অভিভাবকদের থেকেও চাওয়া হচ্ছে মতামত । আলোচনা করা হচ্ছে চিকিৎসকদের সঙ্গেও ।
দেশে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে । মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী , আগামী 10 জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সব স্কুল । কিন্তু, তারপরেই কী স্কুল খুলে দেওয়া সম্ভব হবে ? কী চাইছেন স্কুল শিক্ষার সঙ্গে যুক্তরা । জানা গেছে , অংশীদারদের অধিকাংশেরই বক্তব্য , 10 জুনের পর স্কুল খোলা সম্ভব নয় । প্রধান শিক্ষকদের মতে , এই মুহূর্তে কোনওভাবেই খোলা যাবে না । যেখানে 55-60 দিন বন্ধ রাখা যেতে পারে , সেখানে আরও এক মাস বন্ধ রাখা যেতে পারে । সূত্রের খবর, 10 জুনের পর স্কুল খোলা যাবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান দপ্তরও । আবার স্কুল খুললেও প্রাথমিকে খোলা হবে কি না তা নিয়েও মতামত নেওয়া হচ্ছে । জানা গেছে, প্রাথমিকে স্তর খোলার বিপক্ষেই মত দিয়েছেন অধিকাংশ ।
জানা গেছে, আলোচনায় 10 জুনের পর স্কুল খোলার পথে একাধিক বাধার বিষয় উঠে এসেছে । দপ্তর সূত্রে খবর , ট্রেন 30 জুন পর্যন্ত চলবে না । রাজ্যের বেশিরভাগ শিক্ষক এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পড়াতে যান । ট্রেন না চললে তাঁরা আসতে পারবেন না । শুধু শিক্ষক-শিক্ষিকা নয় । অভিভাবক, পড়ুয়া, স্কুলের অশিক্ষক কর্মচারীরাও অনেকাংশে যাতায়াতের জন্য ট্রেনের উপর নির্ভর করেন । ট্রেন না চললে তাঁরা কী করে স্কুলে আসবেন সেই বিষয়েও আলোচনা করা হচ্ছে । আবার স্কুল খুললেও নিচু ক্লাসের পড়ুয়ারা সামাজিক দূরত্ব কতটা মানবে সেই বিষয়েও চিন্তিত অনেকেই । তাঁদের বক্তব্য, "কারও কিছু হয়ে গেলে তার দায় কে নেবে ?" আবার, 30 শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে ক্লাস করানো কতটা সম্ভব হবে তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন । সেক্ষেত্রে এক একদিন এক একটি শ্রেণির ক্লাস করানো যেতে পারে বলে মত উঠে এসেছে আলোচনায় । স্কুল শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে , আগে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলে সেই অভিজ্ঞতা দেখে নিয়ে স্কুল খোলার পথে হাঁটাটাই শ্রেয় বলে মনে করছেন অনেকেই ।
কোন নিয়মে স্কুল খোলা হবে সেই বিষয়গুলি এখন আলোচনার পর্যায়েই রয়েছে । পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ও বিস্তারিত আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন , "এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি । পরিস্থিতির বিচার না করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না । আলোচনা চলছে । পরিস্থিতি আমাদের হাতের বাইরে । যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে তখন ব্যবস্থাপনার যাতে দেরি না হয় তার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দপ্তর । তবে, পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে তা এখন নিশ্চিত করে বোঝা যাচ্ছে না । 10 জুনের পর পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে । পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে ।"