কলকাতা, 28 নভেম্বর : কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে পরাজিত হয়েছে BJP ৷ করিমপুর ও খড়গপুর সদর কেন্দ্রেও পিছিয়ে রয়েছে তারা (এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার সময়) ৷ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে BJP-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানালেন, এরকম ফলাফলের কারণ তাঁরা পর্যালোচনা করবেন ৷
দিলীপ ঘোষ বলেন, "কী কারণে এমন ফলাফল তা এখনই বুঝতে পারছি না ৷ পর্যালোচনা দরকার ৷ তবে ফলাফল খারাপ হয়েছে এটা ঘটনা ৷ আমাদের সংগঠন চাঙ্গা রয়েছে ৷ সেভাবেই সংগঠনকে প্রস্তুত করেছি ৷ এখন আমাদের পার্টির নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে ৷ অনেক নতুন নতুন মুখ আসবে ৷ নতুন উৎসাহে তাঁরা কাজ করবেন ৷"
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্র BJP-র দখলে রয়েছে ৷ এই লোকসভার অন্তর্গত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীর হার নিয়ে BJP-র রাজ্য সভাপতি বলেন, "ওখানে আমাদের সংগঠন ভালো ৷ ওখানে পঞ্চায়েতও আমাদের দখলে রয়েছে ৷ এত ভোটের ব্যবধানে আমাদের প্রার্থী কীভাবে পিছিয়ে গেল তা পর্যালোচনা করা হবে ৷"
সোমেন মিত্রর প্রতিক্রিয়া : মানুষের রায় মাথা পেতে নিচ্ছি ৷ তবে গত কয়েকবছর ধরে এরাজ্যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়নি ৷ এই নির্বাচনে যে সমস্ত জায়গায় ত্রুটি ছিল, সেগুলিকে উপযুক্তভাবে খতিয়ে দেখে নিয়ে আগামী দিনের এগিয়ে যেতে হবে ।
গৌতম দেবের প্রতিক্রিয়া : মানুষকে দেশছাড়া করার চেষ্টা করছে BJP ৷ মানুষ তার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচুর কাজ করেছে ৷ স্বাধীনতার পর এতকাজ হয়নি ৷ খড়গপুর দিলীপ ঘোষের এলাকা ৷ সেখানেই পরাজিত হয়েছে BJP প্রার্থী ৷ NRC- দিয়ে মানুষকে ভয় দেখানো যাবে না ৷ তা প্রমাণ হয়ে গেল ৷
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া : এই ফল BJP-র বিরুদ্ধে মানুষের অভ্যুত্থান ৷ যে কোনও নির্বাচনেই দল তৈরি থাকে ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের প্রেরণা ৷ তিনি চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত থাকেন ৷ আমাদের দুর্বল জায়গাগুলিকে মেরামত করার চেষ্টা করেছি ৷ আরও বেশি করে জনসংযোগের চেষ্টা করেছি ৷ সংঘটিত হয়েছি ৷ BJP-র বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলেছি ৷
অধীর চৌধুরির প্রতিক্রিয়া : আমাদের প্রার্থীরা তৃতীয় স্থানে থাকলেও জোট টিকিয়ে রাখা দরকার ৷ জোট এখন খুব প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ৷ কিন্তু, এই জোটই আগামীদিনে ফল দেবে ৷ বাংলাকে পথ দেখাবে ৷
গত লোকসভায় হাওয়ার কারণে পশ্চিমবঙ্গে BJP আসন পেয়েছে ৷ আর এই হাওয়ার জন্য দায়ি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর পার্টি ও পুলিশের সন্ত্রাসের কারণে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে BJP-তে গেছিল ৷ বাংলায় BJP কোনওদিন ছিল না ৷ আজও নেই আর আসবেও না ৷ পশ্চিমবঙ্গের মাটি কোনও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে জায়গা দেবে না ৷
ফলাফল সামনে আসার পর বিধানসভার বাইরে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা ৷ একে অপরকে মিষ্টি মুখ করান তাঁরা ৷
কংগ্রেস বিধায়ক তথা পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান সুখবিলাস বর্মা জানিয়েছেন, BJP-র পরাজয়ে তাঁরা খুশি । কোনও উপনির্বাচনে সাম্প্রতিককালে শাসকদল ছাড়া অন্য কোনও দল জয় লাভ করেনি ৷ বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "আমরা মানুষের রায় মাথা পেতে নিয়েছি ৷ তবে BJP-কে কোনওমতেই এদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না তা পরিষ্কার হয়ে গেল ৷ লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে BJP-কে সাধারণ মানুষ ভোট দিয়েছিল ৷ সেই ভুল জনগণের ভেঙেছে ৷ তবে BJP ও তৃণমূল একে অপরের পরিপূরক ৷"