কলকাতা, 17 সেপ্টেম্বর: রাত পোহালেই সোমবার, বিশ্বকর্মা পুজো। আর তার ঠিক পরের দিনই মঙ্গলবার পড়েছে গণেশ পুজো। ফলে কুমোরটুলি শিল্পীদের ঘরে এখন ছেয়ে আছে দুই-চার হাতি দেবতার মূর্তি। তবে বিশ্বকর্মা যেখানে সংখ্যায় 3000-3500 কাছাকাছি তৈরি হয়েছে। সেখানে পার্বতী নন্দন গণেশের মূর্তি 1100-1200'র বেশি। শিল্পের দেবতাকে পিছনে ফেলে ক্রমশ জনপ্রিয়তায় এগিয়ে গিয়েছে অর্থের দেবতা সিদ্ধি বিনায়ক গণেশ মূর্তির বিক্রি।
বিশ্বকর্মা মূর্তি কম হওয়া বা গণেশের মূর্তি বেশি সংখ্যায় হওয়ার কারণ নিয়ে এক শিল্পী মহলের বক্তব্য, কলকাতায় বড় কলকারখানা কমেছে অনেক দিন। বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ ছোট ছোট কারখানা প্রচুর বন্ধ হয়েছে। গাড়ির গ্যারাজ হোক, কাগজ কল হোক বা গেঞ্জি কারখানা অধিকাংশ গেটেই তালা ঝুলছে। তাই বিশ্বকর্মার অর্ডার কমেছে বেশ খানিকটা। এখন যারা পুজো করে তাদের করতে হয় হবে করে। খুব কম অর্ডার আসে বড় প্রতিমার। সংখ্যাটা হতে গোনা।
না-হলে বিশ্বকর্মা এখন 3-4 ফুটের প্রতিমাতেই সীমিত। আর লাভও কম। এদিকে ক্রমশ গণেশ পুজো বেড়েছে কলকাতা ও শহরতলি এলাকায়। যেমন ঘরে ঘরে পুজোর সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে তেমনই বেড়েছে বারোয়ারী গণেশ পুজোর। যেখানে একটা 3-4 ফুটের বিশ্বকর্মা মূর্তির শিল্পীরা দাম হাঁকছেন 2500-3000 টাকা, সেখানে 2.5-3 ফুটের গণেশ মূর্তির দাম প্রায় 5000 টাকা। শুধু তাই নয়, গণেশের সাজ, রং যত সুন্দর দাম ততই চড়া। বড় গণেশ প্রায় 70000-80000 এমন কী এক লাখের উপর আছে অর্ডার নেওয়া। সেগুলো অবশ্যই বারোয়ারী পুজো।
বিশ্বকর্মা ও গণেশের বিক্রি বাড়া, কমা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের দুই সুর। রাজ্যের বিরোধী মনভাবান্ন রাজনীতিকরা অনেকেই বলছেন, রাজ্যে শিল্প নেই। কলকারাখানার হাল খারাপ। একের পর এক কারখানায় তালা ঝুলছে ৷ খুব ছোট কারখানার বহু মালিক আর টিকে থাকতে পারেননি। তাই ঝাঁপ বন্ধ করেছে। এর যেতেই ফিকে হয়েছে বিশ্বকর্মা পুজো। কমেছে অর্ডার। ওদিকে একাংশের হাতে কাঁচা টাকা। তারা এখন মুম্বইয়ের আদলে কেউ বাড়িতে, কেউ বারোয়ারী গণেশ পুজোর আয়োজন করছেন। এদিকে শাসকপন্থী রাজনীতিকরা এসব মানতে চাননি। তাঁদের কাছে গোটাটাই স্বাভাবিক। এটা নিয়ে তারা রাজনীতির অঙ্ক কষতে চাইছেন না।
আরও পড়ুন: অতীতের শেফিল্ড থেকে বর্তমানের হাওড়া, মূর্তির পরিবর্তে ঘটেই হচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজো