কলকাতা, 30 জুন: সরকারি নির্দেশিকাকে থোড়াই কেয়ার ! মানুষ গড়ার কারিগররাই ভাঙছেন আইন ! স্কুলের চাকরি থাকা সত্ত্বেও বেআইনিভাবে গৃহশিক্ষকতা করার অভিযোগ (Private Tuition Controversy) উঠছে অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ৷ বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে গৃহশিক্ষকদের সংগঠন ৷ এবার এ নিয়ে কঠোর বার্তা দিল রাজ্যের শিক্ষা দফতরও (Department of School Education) ৷ জারি করা হল নয়া নির্দেশিকা ৷ 27 জুনের সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, সরকারি স্কুলে কর্মরত যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিয়ম ভেঙে প্রাইভেট টিউশন দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ এমনকী, দোষ প্রমাণে শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৷ রাজ্য সরকারের এমন পদক্ষেপে খুশি গৃহশিক্ষকরা ৷
প্রসঙ্গত, 2009 সালের সংশ্লিষ্ট আইন (Right of Children to Free and Compulsory Education Act, 2009) অনুসারে, অবৈতনিক এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রত্যেক শিশুরই অধিকার ৷ একইভাবে, সরকারি শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন পড়ানোও বেআইনি ৷ কিন্তু, অনেকেই তা মানেন না ৷
আরও পড়ুন: Private Tuition : স্কুলের শিক্ষা নয়, রাজ্যের অধিকাংশ পড়ুয়া প্রাইভেট টিউশনে নির্ভরশীল
শিক্ষা দফতরের নয়া নির্দেশিকা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে 'ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন'-এর রাজ্য সভাপতি হীরালাল মণ্ডল বলেন, "আমরা বহুদিন ধরেই এই অনিয়মের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছি ৷ শিক্ষা দফতর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দিয়েছি ৷ করোনাকালে সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা টানা প্রায় দু'বছর কার্যত বাড়িতে বসেই বেতন পেয়েছেন ৷ পাশাপাশি, তাঁদের অনেকেই অনলাইনে প্রাইভেট টিউশনও চালিয়ে গিয়েছেন ৷ কিন্তু, আমাদের ক্ষেত্রে সেই উপায় ছিল না ৷ কারণ, আমরা যেসব বাড়িতে কোচিং চালাই, সেখানে আমাদের ঢুকতে দেওয়া হত না ৷ উপরন্তু, স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ থাকায় প্রাইভেটে পড়ার উৎসাহও কমে গিয়েছিল ৷ ফলে আমরা খুব বেশি হলে 10 শতাংশ ছাত্রছাত্রী পেয়েছিলাম ৷ তাদের নিয়েই অনলাইন ক্লাস করিয়েছি ৷"
এই অবস্থায় সরকারি নির্দেশিকা জারি হলেও স্কুলগুলি আদৌ অভিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কি না, তা নিয়ে সন্দীহান গৃহশিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা ৷ তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা আরও কিছুদিন অপেক্ষা করবেন ৷ কিন্তু, তারপরও যদি অনিয়ম বন্ধ না হয়, তাহলে সরকারের নয়া নির্দেশিকাকে হাতিয়ার করে নিয়মভঙ্গকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও জোরাল করবেন তাঁরা ৷ প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিতে গিয়ে নিজেদের প্রতিবাদ জানাবেন ৷