কলকাতা, ২ ফেব্রুয়ারি : কেউ সন্তানসম্ভবা, কেউ কোলে শিশু নিয়ে বসে। তবুও দাবিতে অনড় চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা বলছেন, স্কুল সার্ভিস কমিশন দাবি না মানলে এখান থেকে তাঁরা উঠবেন না। অনশন করে মরে যেতেও রাজি। তবে পিছু হটবেন না। গতকাল এই কথাই বললেন SSC-র চাকরিপ্রার্থীরা। গতকাল অনশনরতদের মধ্যে অসুস্থও হয়ে পড়েন কয়েকজন।
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে SSC চাকরিপ্রার্থীরা অনশনে বসেছেন। দাবি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও অনুমোদিত বিদ্যালয়গুলিতে নবম ও দশম স্তরে শিক্ষক ও শিক্ষিকা নিয়োগের ক্ষেত্রে ওয়েটিং লিস্টে থাকা সমস্ত চাকরি প্রার্থীদের চাকরি সুনিশ্চিত করতে হবে। গতকাল অনশনরতদের মধ্যে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনজনকে SSKM হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় স্যালাইন দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু স্যালাইন নিতে রাজি হননি তিনি। অসুস্থ অবস্থাতেই মঞ্চে ফিরে আসেন।
অনশনরত প্রতাপ গুহ রায়চৌধুরি বলেন, "২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর একাদশ ও দ্বাদশ স্তরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য SSC-র ওয়েবসাইটে চাকরি প্রার্থীদের মেরিট লিস্ট প্রকাশিত হয়। পরেরবছর ১২ মার্চ প্রকাশিত হয় নবম ও দশম স্তরে শিক্ষক নিয়োগের মেরিট লিস্ট। তারপর থেকেই আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আচার্য সদন ও বিকাশ ভবনে বারবার ডেপুটেশন দিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই যতদিন না আমাদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততদিন আমরা অনশন চালিয়ে যাব। যদি কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি কানে না তোলে তাহলে আমাদের লাশ উঠবে এখান থেকে। কারণ বাড়ি ফিরেও তো কোনও লাভ নেই। সেই তো গলায় দড়িই দিতে হবে অবশেষে।"
একই কথা শোনা গেল অনশনরত মৌসুমি মণ্ডলের মুখেও। বলেন, "আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। কিন্তু এখানেই থাকব। মরতে হল এখানেই মরব। এই মঞ্চ থেকে যাব না।"
দু'বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে দেবিকা রায় বলেন, "অনশনের দিন থেকে ছেলেকে নিয়ে এখানে থাকছি। খাওয়া-দাওয়া সব কিছু এখানেই করিয়েছি ছেলেকে। সঙ্গে যদিও ওর বাবা রয়েছে। কিন্তু ছোটো বাচ্চাকে নিয়ে খোলা আকাশের তলায় রাত কাটানো খুব মুশকিল।"