ETV Bharat / state

লকডাউনে নিজের খাবার খাইয়ে দিলেন শিশুদের, হৃদয় জিতলেন জওয়ান

লকডাউনে নিজের খাবার খাইয়ে সোশাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের মন কাড়লেন জওয়ান ।

ছবি
ছবি
author img

By

Published : Apr 19, 2020, 2:26 PM IST

Updated : Apr 19, 2020, 4:02 PM IST

কলকাতা, 19 এপ্রিল: ছোট্টো দুই শিশু । আদুল পায়ে ধুলো জমেছে । শরীরে শ্রী হীনতার ছাপ । পরনে ছেঁড়া জামা । সকাল থেকে খাওয়া জোটেনি । জুটবে কী করে ? ওদের মা মহুয়া ফুল কুড়িয়ে বিক্রি করলে তবে না আসবে চাল ! লকডাউনের মাঝে ভুখা পেটের দুই শিশুকে দেখে কেঁদে ওঠে পার্থর মন । হাতের স্বয়ংক্রিয় রাইফেলটা মুহূর্তে মাটিতে নামিয়ে পিঠের ঝোলা থেকে বের করেন ব‍্যারাক থেকে আনা নিজের খাবার । ভাত-সবজি আর ডিম । পরম মমতায় খাইয়ে দেন ওই দুই শিশুকে । পার্থর সহকর্মী মহারাষ্ট্রের আর এক জওয়ান সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করে পোস্ট করে দেন সোশাল মিডিয়ায় । যা হৃদয় জিতে নিয়েছে নেটিজেনদের। সাবাসি কুড়িয়ে নিয়েছে CRPF সিনিয়রদের ।


ছত্তিশগড়ের সুকমার জঙ্গল । এ জঙ্গলের প্রতি পদে বিপদ । মাওবাদীদের বিছিয়ে রাখা মাইনে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা । সেখানেই স্বয়ংক্রিয় ভারী আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পাহারায় থাকতে হয় বর্ধমানের পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে । নিজের জীবন বিপন্ন করে দেশ বাঁচানোর এক ধনুক ভাঙা পণ । গত মাসেই এই সুকমার জঙ্গলে প্রাণ হারাতে হয়েছে 17 জন জওয়ানকে । মাওবাদীদের বড় জমায়েতের খবর পাওয়া গেছিল এলমাগুন্ডা এলাকায় । সেখানে অভিযান চালাতে গেলে প্রায় সাড়ে তিনশো মাওবাদী তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । ঘটনায় আহত হন আরও 15 জওয়ান । এই সুকমাতেই 2018 সালে 24 জন CRPF জওয়ানের দেহ ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল মাওবাদীরা । গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এই মুহূর্তে মাওবাদী শীর্ষনেতা বাসবরাজ এবং হিডমা ব্যাপক সক্রিয় রয়েছে সুকমার জঙ্গলে । সেখানেই পোস্টিং বর্ধমানের নাদনঘাট এলাকার কোরাপুরের পার্থর । বাড়িতে পেশায় চাষি বৃদ্ধ বাবা দুলাল চট্টোপাধ্যায় জানেন না, ছেলেকে জঙ্গলে মাওবাদীদের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় । ওঁর মা জানেন, ছেলে ছত্তিশগড়ের শহরে ডিউটি করেন ।


ছেলেবেলা থেকেই ঠাকুমার বড় প্রিয় ছিলেন পার্থ। ঠাকুমার ঝুলি থেকে বের হত রাক্ষস, রামায়ণের সব গল্প । কোলে শুয়ে সেসব শুনে শুনেই বড় হওয়া । শেষবার যখন জানুয়ারিতে বর্ধমানের বাড়িতে এসেছিলেন, তখনও ঠাকুমার সঙ্গে কত খুনসুটি। মনটা সেদিন ভালো ছিল না। বাড়ি থেকে ফোনে খবর আসে মৃত্যু হয়েছে ঠাকুমার । লকডাউনের জেরে বাড়ি ফেরার উপায় নেই । ভগ্নহৃদয়েই বের হয়েছিলেন ডিউটিতে । সুকমার জঙ্গলে টহলদারি । তখনই তাঁর চোখে পড়ে ওই দুই শিশু । বুঝতে পারেন, সকাল থেকে খাওয়া হয়নি তাদের । কিছুটা দূরে মহুয়া ফুল কুড়োতে ব্যস্ত ওদের মা । পরম যত্নে পার্থ ওই দুই শিশুকে খাইয়ে দেন নিজের খাবার ।

খাবার খাইয়ে দিচ্ছেন জওয়ান... ভিডিয়ো

সেদিন কী অভুক্ত ছিলেন ? ETV ভারতকে পার্থ বলেন, " না, না আমার সহকর্মীর যে খাবার ছিল সেটা দু'জনে ভাগ করে খেয়ে নিয়েছি । কিন্তু ওই দুই শিশু যদি অভুক্ত থাকত ঠাকুমার আত্মা কষ্ট পেতেন । তবে কী জানেন, এই ছবিটা বাইরের কেউ দেখুক চাইনি । আমি এমন কিছু তো আর করিনি । মানুষ হয়ে যেটা করা উচিত সেটুকুই করেছি ।"

কলকাতা, 19 এপ্রিল: ছোট্টো দুই শিশু । আদুল পায়ে ধুলো জমেছে । শরীরে শ্রী হীনতার ছাপ । পরনে ছেঁড়া জামা । সকাল থেকে খাওয়া জোটেনি । জুটবে কী করে ? ওদের মা মহুয়া ফুল কুড়িয়ে বিক্রি করলে তবে না আসবে চাল ! লকডাউনের মাঝে ভুখা পেটের দুই শিশুকে দেখে কেঁদে ওঠে পার্থর মন । হাতের স্বয়ংক্রিয় রাইফেলটা মুহূর্তে মাটিতে নামিয়ে পিঠের ঝোলা থেকে বের করেন ব‍্যারাক থেকে আনা নিজের খাবার । ভাত-সবজি আর ডিম । পরম মমতায় খাইয়ে দেন ওই দুই শিশুকে । পার্থর সহকর্মী মহারাষ্ট্রের আর এক জওয়ান সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করে পোস্ট করে দেন সোশাল মিডিয়ায় । যা হৃদয় জিতে নিয়েছে নেটিজেনদের। সাবাসি কুড়িয়ে নিয়েছে CRPF সিনিয়রদের ।


ছত্তিশগড়ের সুকমার জঙ্গল । এ জঙ্গলের প্রতি পদে বিপদ । মাওবাদীদের বিছিয়ে রাখা মাইনে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা । সেখানেই স্বয়ংক্রিয় ভারী আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পাহারায় থাকতে হয় বর্ধমানের পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে । নিজের জীবন বিপন্ন করে দেশ বাঁচানোর এক ধনুক ভাঙা পণ । গত মাসেই এই সুকমার জঙ্গলে প্রাণ হারাতে হয়েছে 17 জন জওয়ানকে । মাওবাদীদের বড় জমায়েতের খবর পাওয়া গেছিল এলমাগুন্ডা এলাকায় । সেখানে অভিযান চালাতে গেলে প্রায় সাড়ে তিনশো মাওবাদী তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । ঘটনায় আহত হন আরও 15 জওয়ান । এই সুকমাতেই 2018 সালে 24 জন CRPF জওয়ানের দেহ ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল মাওবাদীরা । গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এই মুহূর্তে মাওবাদী শীর্ষনেতা বাসবরাজ এবং হিডমা ব্যাপক সক্রিয় রয়েছে সুকমার জঙ্গলে । সেখানেই পোস্টিং বর্ধমানের নাদনঘাট এলাকার কোরাপুরের পার্থর । বাড়িতে পেশায় চাষি বৃদ্ধ বাবা দুলাল চট্টোপাধ্যায় জানেন না, ছেলেকে জঙ্গলে মাওবাদীদের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় । ওঁর মা জানেন, ছেলে ছত্তিশগড়ের শহরে ডিউটি করেন ।


ছেলেবেলা থেকেই ঠাকুমার বড় প্রিয় ছিলেন পার্থ। ঠাকুমার ঝুলি থেকে বের হত রাক্ষস, রামায়ণের সব গল্প । কোলে শুয়ে সেসব শুনে শুনেই বড় হওয়া । শেষবার যখন জানুয়ারিতে বর্ধমানের বাড়িতে এসেছিলেন, তখনও ঠাকুমার সঙ্গে কত খুনসুটি। মনটা সেদিন ভালো ছিল না। বাড়ি থেকে ফোনে খবর আসে মৃত্যু হয়েছে ঠাকুমার । লকডাউনের জেরে বাড়ি ফেরার উপায় নেই । ভগ্নহৃদয়েই বের হয়েছিলেন ডিউটিতে । সুকমার জঙ্গলে টহলদারি । তখনই তাঁর চোখে পড়ে ওই দুই শিশু । বুঝতে পারেন, সকাল থেকে খাওয়া হয়নি তাদের । কিছুটা দূরে মহুয়া ফুল কুড়োতে ব্যস্ত ওদের মা । পরম যত্নে পার্থ ওই দুই শিশুকে খাইয়ে দেন নিজের খাবার ।

খাবার খাইয়ে দিচ্ছেন জওয়ান... ভিডিয়ো

সেদিন কী অভুক্ত ছিলেন ? ETV ভারতকে পার্থ বলেন, " না, না আমার সহকর্মীর যে খাবার ছিল সেটা দু'জনে ভাগ করে খেয়ে নিয়েছি । কিন্তু ওই দুই শিশু যদি অভুক্ত থাকত ঠাকুমার আত্মা কষ্ট পেতেন । তবে কী জানেন, এই ছবিটা বাইরের কেউ দেখুক চাইনি । আমি এমন কিছু তো আর করিনি । মানুষ হয়ে যেটা করা উচিত সেটুকুই করেছি ।"

Last Updated : Apr 19, 2020, 4:02 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.