কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর: ভুল ভাঙল সিপিআইএম লিবারেশনের ? 27-28 সেপ্টেম্বর মৌলালি যুব কেন্দ্রে সিপিআই(এমএল)-এর রাজ্য সম্মেলনে এই প্রশ্ন উঠে এল । এখানে পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ও সব বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপি-তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছে তারা (CPIML calls for united fight against BJP and Trinamool) ।
সম্প্রতি রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতিতে নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারি সহ একাধিক ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের চিত্র সামনে এসেছে । বিজেপি বা আরএসএস সম্পর্কে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একেক সময় একেক রকম মন্তব্যে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে ঘাসফুলের অবস্থানও ঝাপসা । তাই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের 'নো ভোট টু বিজেপি' (No Vote to BJP) ক্যাম্পেন চালিয়ে ঘুরপথে তৃণমূলকে ভোট পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টায় সফল হয়েছিল বামদলগুলি ৷ তা ঠিকঠাক কাজে লাগায়নি তৃণমূল । তাই তৃণমূলকে এবার একটুও ছাড় না দেওয়ার কথা বললেন সিপিআইএম লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য (Dipankar Bhattacharya Calls for Left Unity) ।
লিবারেশনের আরও বক্তব্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা ছিল । সেটা কখনওই চায়নি লিবারেশন । তাই, 'নো ভোট টু বিজেপি' ক্যাম্পেন চালিয়ে তৃণমূলের সুবিধে করে দিয়েছিল তাঁরা । বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার । ঘুরপথে তৃণমূলকে সাহায্য করেছিল লিবারেশন । কিন্তু যে কারণে এই সাহায্য করা হয়েছিল তা পূরণ হয়নি । বরং, আনিশ খান হত্যা থেকে শুরু করে দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্প বা এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মতো একাধিক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের রায়ের বিরূদ্ধে যাচ্ছে তৃণমূল সরকার ।
আরও পড়ুন: পিএফআই-এর উপর নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন করে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করার দাবি কংগ্রেস-আইইউএমএলের
লিবারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে একুশের নির্বাচনের সময় আমাদের কথা ছিল বিজেপিকে রুখতে আমাদের একজোট হতে হবে । ভোট পরবর্তীতে যখন তৃণমূল সরকারের অপশাসন চলছে সেখানে আমরা খোলাখুলিই বলেছি তৃণমূলকে একটুও ছাড় নয় । কিন্তু এখনকার জোটে পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গটা সম্পূর্ণ আলাদা । রাজ্যজুড়ে বামপন্থীদের প্রতি ফের ভরসা করতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ । তাই এই মুহূর্তে রাজ্যের সকল বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলির ঐক্যবদ্ধ হওয়াটা জরুরি ।"
তাই একদিকে রাজ্য সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব রাজনৈতিক বামপন্থী দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানাচ্ছেন তারা । ঠিক তেমনই বিভিন্ন রাজ্যের শাসক-আঞ্চলিক দলগুলির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের ক্ষেত্রে লিবারেশন লড়াই চালিয়ে যাবে । তবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সেই আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপিকে হঠানো প্রয়োজন, জানান সাধারণ সম্পাদক ৷ এরপরেই দীপঙ্করবাবুর মন্তব্য, "কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধী ঐক্যকে আন্দোলনমুখী করতে গেলে কৃষক আন্দোলন কিংবা ছাত্র আন্দোলন থেকে শেখা উচিত । তবেই কৃষি আইনের মতো অগ্নিপথ প্রকল্পও কেন্দ্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবে ।"
আরও পড়ুন: সিপিএমের আন্দোলন ঘিরে ধুন্ধুমার রায়গঞ্জ