কলকাতা, 28 মার্চ: দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিরোধী হিসাবে বৃহৎ বাম ঐক্য গুরুত্বপূর্ণ । বামেরাই বিজেপিকে মোকাবিলা করতে সক্ষম । এমনটাই মনে করছে সিপিএই(এমএল) লিবারেশন (CPIML Liberation on Alliance)।
মঙ্গলবার লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, এখন সর্বাত্মক বাম ঐক্য প্রয়োজন । বামেরাই সমস্ত দিক থেকে বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে আছে । তার সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হলে আপত্তির কিছু নেই । সর্বগ্রাসী বিজেপিকে রুখতে ব্যাপক বিজেপি বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন । এই মুহূর্তে বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং বিরোধী ঐক্যকে গড়ে তুলতে বামপন্থীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেন তিনি । তাঁর আশা, আগামী দিনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং বিরোধী ঐক্য গড়ে উঠবে ।
সমস্ত দিক থেকে দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য । রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ যে পদ্ধতিতে খারিজ করা হয়েছে, তা সঠিক নয় বলেও দাবি করেন তিনি । একইভাবে দেশের যে সমস্ত রাজ্যে বিজেপি বিরোধী সরকার রয়েছে, সেখানে নানা রকম ভাবে কেন্দ্রের মোদি সরকার আক্রমণ শানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি ।
মনরেগা বা 100 দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়ে সাধারণ শ্রমিক শ্রেণিকে ভাতে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর । দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, "মনরেগা প্রকল্পে ব্যাপক হারে বরাদ্দ কমানো হয়েছে । গ্রামের সাধারণ মানুষের অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার ক্ষমতা নেই । তাঁরা ডিজিটালি সচেতন নন । তাঁরা যাতে কাজ করেও তাঁদের পারিশ্রমিক না নিতে পারেন তার বন্দোবস্ত করেছে সরকার । দিনে দুবার করে ছবি তুলে তাঁদের কাজের প্রমাণ দিতে হবে, তার জন্য অ্যাপ তৈরি করেছে সরকার । অর্থাৎ সরকার একদিকে যেমন বরাদ্দ কমিয়েছে, তেমনই কাজ করেও যাতে শ্রমিকরা তাঁদের মজুরি না পান তার বন্দোবস্ত করছে ।" এর বিরুদ্ধে আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, "দিল্লিতে অবস্থান বিক্ষোভ চলছে । আমাদের প্রতিনিধিরা সেখানে আছেন ।"
শুধু জাতীয় স্তরে নয় । সময়ের দাবি মেনে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষিত রাখতে মানুষের স্বার্থে রাজ্যভিত্তিক নিজেদের অবস্থান বদল করতে পারে লিবারেশন । সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে লিবারেশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কোনও সমস্যা় থাকবে না বলেও দাবি করেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য । বিহারে নীতীশ সরকারেরকে বাইরে থেকে সমর্থন করার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, "আমরা বরাবরই সময়ের দাবি মেনে গণতান্ত্রিক ও অধিকার রক্ষার স্বার্থে আন্দোলন করে এসেছি, আগামীতে সেটাই করব । সেই আন্দোলনের ধারা বজায় রাখতে রাজ্যভিত্তিক আমাদের অবস্থান বদল করতে কোনও অসুবিধা নেই । সেটা পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল হোক কিংবা অন্য কোনও রাজ্যের অন্য কোনও রাজনৈতিক বা আঞ্চলিক দল হোক ৷"