কলকাতা, 20 সেপ্টেম্বর: জনগণনা না করিয়ে মহিলা সংরক্ষণ বিল কার্যকর করা হচ্ছে কীভাবে ? মঙ্গলবার এভাবেই মোদি সরকারকে নিশানা করল লিবারেশন। সিপিএম লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এই প্রশ্ন তুলেছেন। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে মঙ্গলবার লোকসভায় পেশ হয়েছে মহিলা সংরক্ষণ বিল। তারপর থেকে জাতীয় রাজনীতিতে বিতর্ক থামছেই না। এই বিল তাদের কৃতিত্ব বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। অন্যদিকে, বামেদেরও দাবি তাদের লড়াই-আন্দোলন সফল হল এতদিনে। তবে লোকসভা নির্বাচনের মুখে আগে হঠাৎ করে একদিনের মধ্যে এই বিল পাসের উদ্যোগ নিয়ে রাজনীতির গন্ধও পাচ্ছে বাম শিবির।
অতিবাম সংগঠন সিপিআইএম লিবারেশনও বলছে, দেশের ইতাহাসে একমাত্র মোদি সরকার আদমশুমারি করাতে পারেনি। তারাই আবার তড়িঘড়ি মহিলা সংরক্ষণ বিল পাসের উদ্যোগ নিল। এই বিল পাস হলেও 2029 সালের আগে কার্যকর হবে না। তার মানে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মহিলারা সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন না। অথচ এই বিল পাস করিয়েই লোকসভার ভোটের আগে প্রচারে ঝড় তুলবে বিজেপি।
এই বিষয়ে সিপিআই লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, "মোদি সরকার আমাদের বিশ্বাস করাতে চায়, মহিলাদের সংরক্ষণের জন্য তারা এতটাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে বিলটি পাস করার জন্য একটি বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেছে। কিন্তু তা ঠিক নয় । কারণ, বিলের বাস্তবায়ন আদমশুমারির উপর নির্ভর করবে। তাছাড়া এটির ফলও সীমাবদ্ধতার উপর নির্ভরশীল ।"
এরপরই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য আরও বলেন, " স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে মোদি সরকারই একমাত্র সরকার যাঁরা একদশকেও আদমশুমারি পরিচালনা করতে ব্যর্থ। চিন, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো গুরুতরভাবে কোভিড-আক্রান্ত দেশগুলি আদমশুমারি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সেখানে মোদির অধীনে ভারত ব্যর্থ হয়েছে।" প্রসঙ্গত, 2021 সালে দেশে জনগণনা হওয়ার কথা থাকলেও তা করা যায়নি। শেষবার 2011 সালে জনগণনা হয়েছিল দেশে।
ঘটনাচক্রে মহিলা সংগঠনগুলি গত 27 বছর ধরে এই দাবিটি উত্থাপন করে আসছে। মহিলা সংরক্ষণ বিল পাসের দাবিতে দেশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে দিল্লি পর্যন্ত প্রচার চলেছে। তবে উপস্থাপিত বিল সম্পর্কে যে তথ্য আসছে, তাতে বলা হয়েছে, এই বিল পাস হলেও 2029 সালেই তা কার্যকর হবে। তার মানে 2024 সালর লোকসভা নির্বাচনে মহিলারা সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন না।
সংসদে পেশ করা বিলটি নিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিতর্ক করা উচিত এবং মহিলাদের মতামতও বিবেচনায় নেওয়া উচিত বলে বামেরা মনে করে। সংসদ ও বিধানসভায় নারীদের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকা জরুরি। তাঁদের আরও বক্তব্য, বিলটির আইনি গুরুত্ব অনেক। কিন্তু সেটিকে তাড়াহুড়ো করে তৈরি করা হয়েছে। এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যা সংসদীয় গণতন্ত্রের কার্যকারিতাকেই তুচ্ছ করে বিলটিকে আরেকটি নির্বাচনী কৌশলে পরিণত করেছে বলে তাঁর অভিযোগ।
আরও পড়ুন : 'মহিলা সংরক্ষণ বিল আমাদের', কেন বললেন সোনিয়া গান্ধি!