কলকাতা, 2 এপ্রিল : মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে । অথচ তাঁর দলের নেতা-নেত্রীদের একাংশই সেকথা মানছেন না বলে অভিযোগ। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিল বাম-কংগ্রেস । এবার তাদের অভিযোগ রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার বিরুদ্ধে । অভিযোগ, ত্রাণ বিলি কর্মসূচির সময় সামাজিক দূরত্ব মানেননি তিনি । বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে BJPও । তাদের বক্তব্য, "বিদ্যে থাকলেই চেতনা হয় না ।"
লকডাউনের ফলে দুস্থরা যাতে বিপদে না পড়ে তাই তাদের সাহায্যে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন । বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে দরিদ্রদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস । এই কাজে এগিয়ে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোও । অনেক ক্ষেত্রে শাসক দলের তরফে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ । সেই ত্রাণ কর্মসূচিতে পৌরসভা বা পৌরনিগমের কাউন্সিলর থেকে রাজ্যের মন্ত্রীরাও যোগ দিচ্ছে ।
কিছু দিন আগে নিজের বিধানসভা এলাকায় ত্রাণ বন্টন কর্মসূচির আয়োজন করেন রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা । গতকালও একটি ত্রাণ বণ্টন কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি । উদ্যোক্তা ছিল 10 নম্বর ওয়ার্ডের সংঘ তীর্থ দুর্গাপুজো কমিটির সদস্যরা । কমিটির পুজো প্রাঙ্গণেই অনুষ্ঠিত হয় এই ত্রাণ বিলি কর্মসূচি । সেখানে শতাধিক মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস । অভিযোগ, এই ত্রাণ বিলি কর্মসূচিতে মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব । আর তা নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা । তাদের প্রশ্ন, রাজ্যের মন্ত্রী উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেন মানা হল না সামাজিক দূরত্ব ।
বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "যা হচ্ছে সেটা ঠিক হচ্ছে না । মুখ্যমন্ত্রী বার বার সামাজিক দূরত্ব মানার কথা বলছেন । অথচ তাঁর দলের লোকজন সেটা না মেনে ত্রাণ দেওয়ার নামে নিজেদের প্রচার করছেন । ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি করছেন । এটা যেন বাংলার গর্ব প্রচারের একটা মঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছে । বিষয়টি নিয়ে আমি ও আবদুল মান্নান চিঠি দিয়েছি মুখ্যমন্ত্রীকে । রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে উনি কী করে এই কাজ করলেন সেটা একটা বড় প্রশ্ন ।"
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন BJP-র জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা । তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তো ক্যামেরার জন্য এখানে ওখানে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন । সেখানে ভিড় জমছে । মানুষের সর্বানশ হচ্ছে । আজ যেটা শশী পাঁজা করলেন তাতে ওঁর প্রচার হল ঠিকই, কিন্তু মানুষের সর্বনাশ হল । চিকিৎসক হিসেবে ওঁর পেটে হয়তো প্রচুর বিদ্যে আছে । কিন্তু শুধু বিদ্যে থাকলে হয় না । চেতনা থাকতে হয় । আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি ।"
এই বিষয়টি নিয়ে ETV ভারতের তরফে বার বার যোগাযোগ করা হয় শশী পাঁজার সঙ্গে । কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি ।