কলকাতা, 4 এপ্রিল: কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া মহার্ঘভাতা আদায়ের দাবি ও মুখ্যমন্ত্রীর 'চোর ডাকাত' মন্তব্যের বিরোধিতা করে 6 এপ্রিল বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট-সহ রাজ্যের সব আদালতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে কর্মী সংগঠনগুলি । এই মর্মে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দফতরে কর্মী সংগঠনগুলি চিঠি দিয়েছে । প্রায় 62টি সরকারি কর্মচারী সংগঠনের যৌথ মঞ্চ এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ।
গত 29 মার্চ জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মহার্ঘভাতার দাবিতে আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের 'চোর' 'ডাকাত' বলে মন্তব্য করেছেন । সরকারি কর্মচারীরা নাকি, চিরকুটে চাকরি পেয়েছিলেন বলেও সেই জনসভা থেকে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । তারই প্রতিবাদে সব আদালতে বৃহস্পতিবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে কর্মী সংগঠনগুলি । উল্লেখ্য, রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে মহার্ঘভাতা না-পাওয়ায় শেষে ধর্মতলায় লাগাতার ধরনা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি বেশ কয়েকবার কর্মবিরতি পালন করেছেন । মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য বাজেট থেকে মাত্র 3 শতাংশ মহার্ঘভাতা ঘোষণা করার পর কর্মচারীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে যান । এর আগে, স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি হাইকোর্ট একাধিক বার ডিএ, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার বলে উল্লেখ করেছে । পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় হারেই কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত । কিন্তু রাজ্য তাতেও সাড়া দেয়নি । রাজ্য কোষাগারে টাকা নেই বলে আদালতে উল্লেখ করা হয়েছিল সরকারের তরফ থেকে ।
আরও পড়ুন: 'শিক্ষা চোর, চাকরি চোর, ডিএ চোর সরকার, আর নেই দরকার', ডিএ আন্দোলনের রেশ হাইকোর্টেও
এদিন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে সরকারি কর্মচারীদের 'চোর' 'ডাকাত' বলেছেন, তাতে তাঁদের সম্মানহানি করা হয়েছে । ডিএ তাদের ন্যায়সঙ্গত প্রাপ্য । তা থেকে বঞ্চিত করে উলটে মুখ্যমন্ত্রী তাদের 'চোর' 'ডাকাত' বলেছেন । এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় । তাই গোটা রাজ্যের আদালতগুলিতে প্রতিবাদস্বরূপ আগামী 6 এপ্রিল বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে কর্মী সংগঠনগুলির তরফে ।
এর আগেও 9 মার্চ মহার্ঘভাতার দাবিতে বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠনের পাশাপাশি হাইকোর্টের কর্মচারীরাও সামিল হয়েছিলেন । আদালতের মূল প্রবেশদ্বার আটকে সরকার-বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছিল বিক্ষুব্ধ কর্মীদের । মহার্ঘভাতা বঞ্চনার প্রতিবাদে কাজে অংশগ্রহণ করবেন না বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা । অংশ নিয়েছিলেন আদালতের ক্লার্ক থেকে শুরু করে সব শ্রেণির কর্মচারীরা ।