কলকাতা, 23 জুলাই : লড়াইয়ের দ্বিতীয় ধাপ শুরুহয়ে গেল । আজ থেকে ফের নতুন করে লকডাউনের পথে বাংলা ।
লক্ষ্য, কোরোনার গোষ্ঠী সংক্রমণের হাত থেকেরাজ্যকে রক্ষা করা । আজ বৃহস্পতিবার এই দফায় প্রথম দিনের লকডাউন । পরবর্তীতে, শনিবার দ্বিতীয় দিন লকডাউন হবে ।পরিস্থিতি যতক্ষণ না নিয়ন্ত্রণে আসছে ততক্ষণ এভাবে ধাপে ধাপে প্রতি সপ্তাহেলকডাউনের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে নবান্ন ।
দিন দুয়েক আগেই রাজ্যেরস্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন এই সপ্তাহের দুই দিনএবং আগামী সপ্তাহে বুধবার লকডাউন হবে । অন্য কোন দিন লকডাউন হবে সে কথা আগামীসোমবার নবান্নে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ।
নবান্নের সিদ্ধান্ত, প্রয়োজনীয় এবং জরুরি পরিষেবা ছাড়াসমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি দপ্তর বন্ধ থাকবে সপ্তাহের এই দুই দিন । সব রকমগণপরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । দুটি সাপ্তাহিক লকডাউনেরদিনে রাজ্যে কোনও অপ্রয়োজনীয় কার্যকলাপের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেই নবান্নেরতরফে ঘোষণা করা হয়েছে ।
একইসঙ্গে রাজ্য প্রশাসনসিদ্ধান্ত নিয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন এর পাশাপাশি ‘ব্রড বেস কনটেনমেন্ট’ জোনগুলিতে ধারাবাহিক লকডাউন চলবে ।
এই সাপ্তাহিক লকডাউনে ওষুধেরদোকান, আদালত, সংশোধনাগারে পরিষেবা, মুদ্রণ এবং বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যম, রান্না করা খাবারের হোম ডেলিভারি-রমতো জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে । রাজ্য প্রশাসনের তরফে এ কথাস্পষ্ট করে বলা হয়েছে, জরুরিপরিষেবা ছাড়া আর কোনও ক্ষেত্রে কোনও রকম ছাড় দেওয়া হচ্ছে না ।
তবে, নবান্নের এই সিদ্ধান্তের পরেই বিরোধীমত ক্রমে তীব্র হয়েছে । সপ্তাহে দুই দিন লকডাউন কি প্রকৃত সমস্যার সমাধান করতেপারবে ? এইপ্রশ্ন ক্রমে বড় হয়ে দেখা দিতে শুরু করেছে । অনেকেই সপ্তাহে দু’দিন এর বদলে ধারাবাহিক ভাবে বেশকয়েকদিন লকডাউনের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন । কিন্তু, এক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা দেশের তথারাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি । টানা দুই মাসের বেশি লকডাউনের জেরে ইতিমধ্যেইদেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মত অবস্থা । চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ । হারাচ্ছেনওবহু । দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় চরম দারিদ্র্য বেঁধে ফেলেছে গোটা সমাজকে । দেশের অর্থনীতিখাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে । কিন্তু কোরোনার মত আতঙ্কের হাত থেকে কবে রেহাইমিলবে এ সম্পর্কে কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না । স্বাভাবিকভাবেই আর বেশিদিন লকডাউন চালালে দেশের অর্থনীতি আরও মারাত্মক অবস্থার মুখোমুখি হবে । এইপরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে দু-দিন করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেনবান্ন ।
এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের একটাতথ্য তুলে ধরা যাক । একটা সম্ভাব্য হিসেব দিয়েছেন তাঁরা । হাট-খোলা অবস্থায় চললেকোরোনা আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যার একটা সম্ভাব্য অনুমানের চেহারা তাঁরা দিয়েছেন, যা খুবই ভয়াবহ । 2021 সালের জুলাই মাসের যে সম্ভাব্য চেহারাতাঁরা দিয়েছেন , তাতেভারতে সম্ভাব্য আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াবে নাকি প্রায় 1.5 কোটি এবং মৃত্যু হতে পারে 7 লাখ ।
বিশেষজ্ঞরাবলছেন, এইসংখ্যা নেমে আসতে পারে প্রায় যথাক্রমে 70 লাখ এবং 2 লাখে যদি অন্তত সপ্তাহে 2 দিন সম্পূর্ণ লকডাউন করা যায় তবেই ।সঙ্গে টেস্টিং এবং বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে অবশ্যই ।