কলকাতা, 15 জানুয়ারি : রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর প্রস্তুত । অপেক্ষা চলছে আগামীকাল, 16 জানুয়ারির জন্য। কারণ, সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে কলকাতার 18টি সেন্টারে আগামীকাল থেকে শুরু হতে চলেছে কোভিড-19 এর ভ্যাকসিনেশন। এদিকে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগামীকাল গোটা রাজ্যের মোট 204টি সেন্টারে এই ভ্যাকসিনেশন হতে চলেছে। তবে, এই ভ্যাকসিনেশনের গোটা পর্ব স্বাস্থ্য দপ্তরের কড়া নজরদারিতে রয়েছে। অন্যদিকে, এই ভ্যাকসিনেশনের মধ্যে পালস পোলিও-র ক্ষেত্রেও সুখবর যে, জরুরি ভিত্তিতে কোভিড-19 এর ভ্যাকসিনেশনের কারণে স্থগিত হয়ে যাওয়া পালস পোলিও কর্মসূচি আগামী 31 জানুয়ারি রাখা হয়েছে।
জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাকসিন, কোভিড-19 এর এই দুটি ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামীকাল, 16 জানুয়ারি এদেশে শুরু হতে চলেছে কোভিড-19 এর ভ্যাকসিনেশন। এর জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সেন্টারে পৌঁছে গিয়েছে ভ্যাকসিন। এখনও যে সব সেন্টারে কোভিড-19 এর ভ্যাকসিন পৌঁছয়নি, সেই সব সেন্টারে পৌঁছে যাবে আজ। এদিকে, কোভিড-19 এর ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড এসেছে এ রাজ্যে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, কলকাতার 18টি সেন্টারে হতে চলেছে এই কোভিশিল্ডের ভ্যাকসিনেশন। এই 18টি সেন্টারের মধ্যে রয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল, কলকাতা মেডিকেল কলেজ, এনআরএস মেডিকেল কলেজ, আরজি কর মেডিকেল কলেজ, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন, চিত্তরঞ্জন সেবাসদন, বিসি রায় শিশু হাসপাতাল, আইডি অ্যান্ড বিজি হাসপাতাল, এমআর বাঙুর হাসপাতাল, কলকাতা পৌরনিগমের 11, 31, 57, 82 ও 111 নম্বর ওয়ার্ডের আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার । এবং, বেসরকারি সেন্টার হিসাবে রয়েছে ঢাকুরিয়া এএমআরআই , ইএম বাইপাসের ধারে অবস্থিত অ্যাপোলো হাসপাতাল, মুকুন্দপুরে অবস্থিত আরএন টেগোর হাসপাতাল।
আরও পড়ুন : শনিবার কোরোনা টিকাকরণের সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী
এদিকে, আগামীকাল গোটা রাজ্যে মোট 354টি সেন্টারে ভ্যাকসিনেশন হতে চলেছে বলে প্রথমে জানা গিয়েছিল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত 354টির বদলে আগামীকাল গোটা রাজ্যের 204টি সেন্টারে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় দেওয়ার কাজ শুরু হবে। কোভিড-19 এর এই ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে দুটি করে ডোজ় দিতে হবে। এ রাজ্যে কোভিশিল্ডের প্রায় সাত লাখ ডোজ় এসেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে যত জনকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তাতে এই সাত লাখ ডোজ় দিয়ে দুটি করে ডোজ় সম্পূর্ণ হবে না। এর জন্য সেন্টারের সংখ্যা কমিয়ে 204টি করা হয়েছে। কোভিড-19 এর এই ভ্যাকসিন প্রথমে পেতে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, আজ শুক্রবারের মধ্যে প্রতিটি সেন্টারে পৌঁছে যাবে কোভিশিল্ডের দু'টি করে ডোজ় । তবে, যে সেন্টারে কোল্ড চেইন নেই অর্থাৎ, ভ্যাকসিন স্টোর করে রাখা যাবে না, সেই সেন্টারের কাছাকাছি কোনও সেন্টারে পৌঁছে যাবে কোভিশিল্ড। এর পরে শনিবার সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট সেন্টারে পৌঁছে যাবে এই ভ্যাকসিন। যেমন, স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন। এখানকার কোভিশিল্ড আজ, শুক্রবার কলকাতা মেডিকেল কলেজে পৌঁছে যাবে এবং সেখানে কোল্ড চেইন মেইনটেইন করে স্টোর করে রাখা হবে। এরপরে আগামীকাল কলকাতা মেডিকেল কলেজ লাগোয়া স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পৌঁছে যাবে কোভিশিল্ড। বেলেঘাটার আইডি অ্যান্ড বিজি হাসপাতালেও আজ শুক্রবার কোভিশিল্ড পৌঁছে যাবে। প্রতিটি সেন্টারে প্রতিদিন 100 জনকে দেওয়া হবে কোভিড-19 এর ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড । তবে, এই ভ্যাকসিনেশনের গোটা পর্বের উপর স্বাস্থ্য দপ্তরের কড়া নজরদারি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন :কমল দৈনিক সংক্রমণ, 24 ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে 17 জনের
এদিকে, কোভিড-19 এর ভ্যাকসিনেশনের জন্য এর পরে যাতে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও সেন্টার চালু করা সম্ভব হয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই 24টি বড় মাপের বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক সেরে নিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। যদিও, ভ্যাকসিনেশনের সেন্টার হওয়ার জন্য অনেক হাসপাতালের তরফে আগেই আবেদন জানানো হয়েছে। ভ্যাকসিনেশনের সেন্টার হিসাবে যাতে কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া-র প্রেসিডেন্ট রূপক বড়ুয়া।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "যে সব বেসরকারি হাসপাতালে 500 জনের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে ভ্যাকসিন দিতে হবে, সেই সব হাসপাতালে ভ্যাকসিনেশন সেন্টার চালুর জন্য চেষ্টা চলছে।"