কলকাতা, 24 এপ্রিল : UNESCO নির্ধারিত 23 এপ্রিল দিনটি প্রতিবছর বিশ্ব বই দিবস হিসেবে পালিত হয়। কিন্তু, কোরোনার থাবায় এবার কোথাও যেন ভাটা পড়ল বিশ্ব বই দিবস উদযাপনে । বিশেষ এই দিনটিতে এই রাজ্যে প্রতিবছর সরকারের তরফে গ্রন্থাগারগুলিতে নানা অনুষ্ঠান হত। কিন্তু এ'বছর কোরোনার জেরে সব বন্ধ । এবার বই পাড়ায় ভিড় নেই । না বই কেনা, না দোকানগুলিতে বিশেষ ছাড় । আপাতত ফাঁকা কলেজ স্ট্রিট । অনলাইন সাহিত্য পাঠ, বিশ্ব বই দিবসের প্রয়োজনীয়তা থেকে শুরু করে কোরোনা পরিস্থিতি ইত্যাদি নানা বিষয়ে কথা বললেন কলেজ স্ট্রিটের প্রকাশক থেকে শুরু করে বাংলার বিশিষ্ট সাহিত্যিক,লেখকরা ।
বিশ্ব বই দিবস উদযাপনের তেমন কোনও প্রযোজনীয়তা নেই বলেই মনে করেন বাংলার বিশিষ্ট সাহিত্যিকরা । এই প্রসঙ্গে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, "বিশ্ব বই দিবস খাতায়-কলমে রয়েছে । তবে এখনও বাংলা সাহিত্যের যথেষ্ট পাঠক রয়েছে। তাঁরা কেবল নির্দিষ্টভাবে বই দিবসের দিনেই বই কেনেন এবং পড়েন তা নয়। বারো মাস পাঠকরা সাহিত্য, কবিতা, গল্প এবং বাংলা বই পড়েন।" অনলাইনে বই পড়ার নেশা যতই বাড়ুক, নতুন বইয়ের গন্ধ এখনও পাঠকদের টানে বলে, মনে করেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। এই দিনটিকে আলাদাভাবে কোনও গুরুত্ব দিতে চান না বুদ্ধদেব গুহ। অনলাইনে বই পড়ার পাশাপাশি, বহু মানুষ অনলাইনে বই কেনেন কলেজস্ট্রিট বা পৃথিবীর যেকোনও জায়গা থেকে। একটু সুখের কাছে, মাধুকরী, হলুদ বসন্ত, চানঘরে গান বইগুলি এখনও সমানভাবে পাঠকদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করে আসছে বলে জানানা তিনি। বিশ্ব বই দিবসে আলাদাভাবে বই পড়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না বুদ্ধদেব গুহ।
![image](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/wb-kol-05-world-book-day-7203847_23042020185903_2304f_1587648543_5.jpg)
এবার কোরোনার জেরে বই দিবসের উদযাপনে ভাটা পড়েছে। এই বিষয়ে কলেজ স্ট্রিটের দে'জ পাবলিশার্সের কর্ণধার সুধাংশু দে বলেন, "বিশেষ এই দিনটিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রতিবছর নানা অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু এবছর কোরোনার ভয়ে মানুষ গৃহবন্দী। দেশজুড়ে লকডাউন চলছে । ঘরে বসে মানুষ বই পড়ছেন। কিন্তু ব্যবসায় মন্দা।" প্রকৃত পড়ুয়ার কাছে বই পড়ার আকর্ষণ বিন্দুমাত্র কমেছে বলে, মনে করেন না তিনি । অনলাইনে যাঁদের বই পড়ার অভ্যাস রয়েছে, তাঁরাও বই পাড়া থেকে নিয়মিত বই সংগ্রহ করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সুধাংশু দে বলেন, "প্রতিবছর এই বিশেষ দিনে কলেজ স্ট্রিটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাঠকদের জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। 18 এপ্রিল থেকে 29 এপ্রিল পর্যন্ত এই ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু এবছর কলেজ স্ট্রিট শুনশান। তাই বই কেনা বা ছাড় দেওয়ার কোনও অবকাশ নেই।"
এই বিষয়ে সমরেশ মজুমদার বলেন, "এই কালবেলায় তার 'কালপুরুষ' এবং 'কালবেলা'র অনলাইন সংস্করণ ইতিমধ্যেই ভালো সাড়া ফেলেছে । ছাপার অক্ষর পুরোনো প্রজন্মের কাছে এখনও মহার্ঘ । তবে নতুন প্রজন্ম হাতের মুঠোফোনেই সাহিত্য পড়তে পারে । এর জন্য আলাদা বই দিবস পালন করতে হয় না।"