ETV Bharat / state

TMC Congress: জোট রাজনীতির কথা বললেও তৃণমূলের অন্য দল ভাঙানোকে সমর্থন করছেন না বিশেষজ্ঞরা

author img

By

Published : Oct 26, 2021, 5:55 PM IST

ত্রিপুরা, অসম, গোয়া, উত্তরপ্রদেশ - একের পর রাজ্য থেকে কংগ্রেস (Congress) ছেড়ে তৃণমূলে (TMC Joining) যোগ দিচ্ছেন নেতারা ৷ এই রাজনীতি কতটা সমর্থনযোগ্য, তা নিয়ে মতামত জানালেন বিশেজ্ঞরা ৷

congress leaders joining tmc, is it good for opposition alliance ? experts opinion on this
জোট রাজনীতিতে তৃণমূলের অন্য দল ভাঙানো কতটা সমর্থনযোগ্য ?

কলকাতা, 26 অক্টোবর: প্রথমে ত্রিপুরা । তারপর অসম । তারপর গোয়া এবং সবশেষে উত্তরপ্রদেশ । একের পর এক কংগ্রেস (Congress) নেতাদের টার্গেট করছে তৃণমূল কংগ্রেস । জাতীয় ক্ষেত্রে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছেড়ে আসা দল থেকে নেতাদের নেওয়াকেই (TMC Joining) অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ।

এই অবস্থায় রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সব বিরোধী দলকে একছাতার তলায় আসার কথা বলছেন, ঠিক তখনই এ ভাবে একের পর এক কংগ্রেস নেতাদের তৃণমূলের দিকে টানা কতটা যুক্তিযুক্ত ! আর সবচেয়ে বড় কথা একুশের নির্বাচনে প্রমাণিত তৃণমূল স্তর থেকে সংগঠন শক্তিশালী না-করতে পারলে শুধুমাত্র দল ভাঙিয়ে সফল হওয়া যায় না । কারণ বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দল থেকে নেতাদের দলে নিয়েছিল, তার পরেও কিন্তু এ রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে পারেনি গেরুয়া শিবির । এই অবস্থায় বাস্তবে তৃণমূলের সফল হওয়ার সম্ভবনা কতটা ?

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘দলবদলের প্রবণতা যদিও এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে, আসলে এই সংস্কৃতি উত্তর ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ।’’ তাঁর মতে পশ্চিমবঙ্গে এর তেমন চল না-থাকলেও, অন্য রাজ্যে দল ভাঙিয়ে সরকার বদল যে সম্ভব তাও বারবার দেখা গিয়েছে । তাঁর কথায়, "এটা একটা সহজ পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায় । কিন্তু এখানে প্রশ্নটা শুধু দল ভাঙানোর নয়, গতকাল অধীর চৌধুরী বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস কেন বিজেপি নেতাদের ভাঙাচ্ছে না । একদিকে জোটের কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে কংগ্রেস ভাঙিয়ে কংগ্রেসকে দুর্বল করা হচ্ছে, এটা পরস্পরবিরোধী । আমার মনে হয়, এই ঘটনা জোট রাজনীতি আস্থার ক্ষেত্রে একটা বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিতে পারে ৷"

congress leaders joining tmc, is it good for opposition alliance ? experts opinion on this
নয়া কৌশল তৃণমূলের

আরও পড়ুন: Goa TMC : গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি তৃণমূলের

একইভাবে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং সমাজবিজ্ঞানী অমল মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এতে কোনও সন্দেহ নেই যে কংগ্রেসের নিজস্ব দুর্বলতা রয়েছে ।’’ তাদের দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বই এই মুহূর্তে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় বলে তাঁর মত । তিনি বলেছেন, "জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতা থাকে । আমরা এ রাজ্যে দেখেছি ছোট বড় মিলে প্রায় 15টি দল বামফ্রন্টের সঙ্গে দীর্ঘদিন একমঞ্চে ছিল । কখনও বড় শরিক হিসেবে সিপিএম ছোট শরিকদের থেকে দল ভাঙানোর চেষ্টা করেনি । সেক্ষেত্রে আগামী দিনে অসম বা গোয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফল হবেন কি না তা তো সময় বলবে । তবে এই রাজনীতি কখনওই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না ৷"

আরও পড়ুন : TMC-Goa: জোড়াফুলে নাম লেখাচ্ছেন লাকি আলি! গোয়ায় প্রচার শুরু তৃণমূলের

যদিও তৃণমূলের এই অবস্থানে দোষের কিছু দেখছেন না প্রবীণ তৃণমূল নেতা সৌগত রায় । তিনি বলেছেন, "যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে আমরা কংগ্রেসের ঘর ভাঙতে যাচ্ছি না । যেখানে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার জন্য বিজেপি শক্তিশালী হচ্ছে, সেখানে গিয়ে আমরা চেষ্টা করছি তাদের সঙ্ঘবদ্ধ করে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে । এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই, গত কয়েকটি নির্বাচনে কংগ্রেস গোটা দেশেই তাদের প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে । তাদের ইতিহাস, অতীত, শক্তি সবকিছু মনে রেখেই বলছি, এই মুহূর্তে দেশে সবথেকে গ্রহণযোগ্য বিরোধী মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাই কংগ্রেস নেতারা যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায় তাদের সঙ্গ দেওয়ায় দোষ কোথায় ? এই মুহূর্তে কংগ্রেসের উচিত তৃণমূলকে দোষারোপ না-করে নিজের ঘর সামলানো ৷"

congress leaders joining tmc, is it good for opposition alliance ? experts opinion on this
মমতার সঙ্গে সুস্মিতা

আরও পড়ুন : Amarinder Singh: বুধবারই নয়া দলের ঘোষণা করতে পারেন অমরিন্দর, দোলাচল অব্যাহত কংগ্রেসে

এই প্রসঙ্গে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য একপ্রকার তৃণমূলকে উপেক্ষাই করেছেন । তিনি নাম না-করে বলেন, ‘‘অন্যকে দোষারোপের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না । কংগ্রেস বিশালাকার সমুদ্রের মতো । তার থেকে কিছু জল তুলে নিলে কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলা যাবে না । তবে এটাও ঠিক, আমাদের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে । একই সঙ্গে এটাও বলব, জোট রাজনীতির মূল বক্তব্য পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস । সেটা সবারই মেনে চলা উচিত ।’’

আরও পড়ুন : Lakhimpur Kheri Case : লখিমপুর কাণ্ডে প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি দ্রুত রেকর্ডের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

কলকাতা, 26 অক্টোবর: প্রথমে ত্রিপুরা । তারপর অসম । তারপর গোয়া এবং সবশেষে উত্তরপ্রদেশ । একের পর এক কংগ্রেস (Congress) নেতাদের টার্গেট করছে তৃণমূল কংগ্রেস । জাতীয় ক্ষেত্রে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছেড়ে আসা দল থেকে নেতাদের নেওয়াকেই (TMC Joining) অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ।

এই অবস্থায় রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সব বিরোধী দলকে একছাতার তলায় আসার কথা বলছেন, ঠিক তখনই এ ভাবে একের পর এক কংগ্রেস নেতাদের তৃণমূলের দিকে টানা কতটা যুক্তিযুক্ত ! আর সবচেয়ে বড় কথা একুশের নির্বাচনে প্রমাণিত তৃণমূল স্তর থেকে সংগঠন শক্তিশালী না-করতে পারলে শুধুমাত্র দল ভাঙিয়ে সফল হওয়া যায় না । কারণ বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দল থেকে নেতাদের দলে নিয়েছিল, তার পরেও কিন্তু এ রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে পারেনি গেরুয়া শিবির । এই অবস্থায় বাস্তবে তৃণমূলের সফল হওয়ার সম্ভবনা কতটা ?

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘দলবদলের প্রবণতা যদিও এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে, আসলে এই সংস্কৃতি উত্তর ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ।’’ তাঁর মতে পশ্চিমবঙ্গে এর তেমন চল না-থাকলেও, অন্য রাজ্যে দল ভাঙিয়ে সরকার বদল যে সম্ভব তাও বারবার দেখা গিয়েছে । তাঁর কথায়, "এটা একটা সহজ পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায় । কিন্তু এখানে প্রশ্নটা শুধু দল ভাঙানোর নয়, গতকাল অধীর চৌধুরী বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস কেন বিজেপি নেতাদের ভাঙাচ্ছে না । একদিকে জোটের কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে কংগ্রেস ভাঙিয়ে কংগ্রেসকে দুর্বল করা হচ্ছে, এটা পরস্পরবিরোধী । আমার মনে হয়, এই ঘটনা জোট রাজনীতি আস্থার ক্ষেত্রে একটা বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিতে পারে ৷"

congress leaders joining tmc, is it good for opposition alliance ? experts opinion on this
নয়া কৌশল তৃণমূলের

আরও পড়ুন: Goa TMC : গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি তৃণমূলের

একইভাবে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং সমাজবিজ্ঞানী অমল মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এতে কোনও সন্দেহ নেই যে কংগ্রেসের নিজস্ব দুর্বলতা রয়েছে ।’’ তাদের দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বই এই মুহূর্তে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় বলে তাঁর মত । তিনি বলেছেন, "জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতা থাকে । আমরা এ রাজ্যে দেখেছি ছোট বড় মিলে প্রায় 15টি দল বামফ্রন্টের সঙ্গে দীর্ঘদিন একমঞ্চে ছিল । কখনও বড় শরিক হিসেবে সিপিএম ছোট শরিকদের থেকে দল ভাঙানোর চেষ্টা করেনি । সেক্ষেত্রে আগামী দিনে অসম বা গোয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফল হবেন কি না তা তো সময় বলবে । তবে এই রাজনীতি কখনওই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না ৷"

আরও পড়ুন : TMC-Goa: জোড়াফুলে নাম লেখাচ্ছেন লাকি আলি! গোয়ায় প্রচার শুরু তৃণমূলের

যদিও তৃণমূলের এই অবস্থানে দোষের কিছু দেখছেন না প্রবীণ তৃণমূল নেতা সৌগত রায় । তিনি বলেছেন, "যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে আমরা কংগ্রেসের ঘর ভাঙতে যাচ্ছি না । যেখানে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার জন্য বিজেপি শক্তিশালী হচ্ছে, সেখানে গিয়ে আমরা চেষ্টা করছি তাদের সঙ্ঘবদ্ধ করে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে । এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই, গত কয়েকটি নির্বাচনে কংগ্রেস গোটা দেশেই তাদের প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে । তাদের ইতিহাস, অতীত, শক্তি সবকিছু মনে রেখেই বলছি, এই মুহূর্তে দেশে সবথেকে গ্রহণযোগ্য বিরোধী মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাই কংগ্রেস নেতারা যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায় তাদের সঙ্গ দেওয়ায় দোষ কোথায় ? এই মুহূর্তে কংগ্রেসের উচিত তৃণমূলকে দোষারোপ না-করে নিজের ঘর সামলানো ৷"

congress leaders joining tmc, is it good for opposition alliance ? experts opinion on this
মমতার সঙ্গে সুস্মিতা

আরও পড়ুন : Amarinder Singh: বুধবারই নয়া দলের ঘোষণা করতে পারেন অমরিন্দর, দোলাচল অব্যাহত কংগ্রেসে

এই প্রসঙ্গে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য একপ্রকার তৃণমূলকে উপেক্ষাই করেছেন । তিনি নাম না-করে বলেন, ‘‘অন্যকে দোষারোপের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না । কংগ্রেস বিশালাকার সমুদ্রের মতো । তার থেকে কিছু জল তুলে নিলে কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলা যাবে না । তবে এটাও ঠিক, আমাদের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে । একই সঙ্গে এটাও বলব, জোট রাজনীতির মূল বক্তব্য পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস । সেটা সবারই মেনে চলা উচিত ।’’

আরও পড়ুন : Lakhimpur Kheri Case : লখিমপুর কাণ্ডে প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি দ্রুত রেকর্ডের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.