কলকাতা, 6 এপ্রিল : কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা জমা পড়েছে । কিন্তু সেই টাকায় রাজ্যের মানুষ ত্রাণ পাচ্ছেন না ৷ আজ এই অভিযোগ করলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী । এদিকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, "দরিদ্র মানুষের সাহায্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের টাকা মেলা, খেলায় না চলে যায় । "
আজ সুজনবাবু বলেন, "দলমত নির্বিশেষে কোরোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের পাশে আন্তরিকতার সঙ্গে রয়েছেন সকলে । রাজ্যের মানুষের পাশে থেকে সরকার সাহায্য করবে এটাই স্বাভাবিক । মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা জমা পড়েছে । কিন্তু সেই টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে " ।
এর আগে সর্বদলীয় বৈঠকে গিয়ে বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে এসেছিল, সকলের কাছে ত্রাণ সমানভাবে বণ্টন করতে হবে । আর ত্রাণ নিয়ে শাসকদল দলবাজি করছে বলেও এখন অভিযোগ করছে তারা ।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু অভিযোগ করেছিলেন, "শাসকদলের পরিচিত এবং শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হলে তার বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে যাচ্ছে । রাজ্যের বাকি মানুষের কাছে এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতেও পৌঁছাচ্ছে না ত্রাণের চাল-ডাল সহ অন্য খাদ্যসামগ্রী । " এবার আবদুল মান্নানের গলাতেও শোনা গেল সেই সুর ৷ তিনি ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, "আমাদের কাছে হিসেব আছে মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে কত টাকা কোরোনা ভাইরাস রুখতে জমা হয়েছে । রাজ্যের দরিদ্র মানুষ সহ অনেকের জন্য সেই অর্থের ব্যবহার প্রয়োজন । কোথায় যাচ্ছে সেই টাকা? রেশন নিয়ে কালোবাজারির পাশাপাশি জানা যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মানুষ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাচ্ছে না । তাহলে এবার ত্রাণের টাকাও কি তছরুপ হবে? "
এবিষয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন , "মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে রাজ্য সরকার । কয়েকশো কোটি টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা হয়েছে । সেই টাকা মুখ্যমন্ত্রী কোথায় কীভাবে খরচ করছেন । রাজ্যের বহু মানুষ অর্ধাহারে-অনাহারে রয়েছেন । কর্মহীন হয়েছেন রাজ্যের একাধিক জেলার বাসিন্দা । এখনও তাদের কাছে রাজ্য সরকারের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছায়নি। "
বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, "রাজ্যের একাধিক জেলার জেলাশাসকরা স্বেচ্ছায় সমস্ত মানুষকে ত্রাণের ব্যবস্থা করে দিয়েছে । প্রতিদিন চাল, ডাল, আলু দপ্তরের কর্মীদের মাধ্যমে পুলিশকে নিয়ে বিলি করা হচ্ছে । দরিদ্রদের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিলি করা হয়েছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অর্থ খরচ করা হয়েছে রাজ্যের দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিলির জন্য । তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে । পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে সেই টাকা খরচ করা হবে ৷ সব টাকা এখন খরচ করলে ভবিষ্যতে টাকা পাওয়া যাবে না । কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্য সরকার আন্তরিক । রাজ্যের কোনও মানুষ অভুক্ত থাকবে না । দু'বেলা দু'মুঠো খাবারের সংস্থান রাজ্য সরকারই করবে ৷ "