কলকাতা, 8 এপ্রিল: লকডাউনে সব কিছু বন্ধ । সরকারিভাবে বন্ধ রয়েছে মদ বিক্রিও । আর সেই ফের সুযোগে ডানা মেলছে চোলাই চক্র । পাশাপাশি কলকাতা বা শহরতলির কোথাও কোথাও চার থেকে পাঁচগুণ বেশি দামে পাওয়া যাচ্ছে বিলেতি মদ । তার বেশিরভাগটাই নকল । সেই বিষয়ে ধরপাকড় চালাচ্ছে রাজ্যের আবগারি দপ্তর । সব মিলিয়ে রীতিমতো চিন্তিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তারা ।
সংগ্রামপুর বিষমদ কাণ্ডের কথা মনে পড়ে ? ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ পড়লেও ঘা শুকোয়নি এখনও । 2011 সালের সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল 200 জনের । সেই ঘটনায় 2018 সালে খোঁড়া বাদশা সহ 4 জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেয় আদালত । ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে চোলাই মদের কারবার বন্ধ করতে তৎপর হয়ে উঠেছিল রাজ্য আবগারি দপ্তর । পুলিশের সাহায্য নিয়ে চোলাইয়ের কারবার অনেকটাই ঠেকানো গিয়েছিল । দক্ষিণ 24 পরগনার উস্তি, উত্তর 24 পরগনার তালবান্দা, হাওড়ার সাঁকরাইল, নদিয়া, হুগলি ও ডায়মন্ড হারবারের বেশ কয়েকটি জায়গায় যে চোলায় তৈরি হতো, তাতে রাশ টানা গিয়েছিল । তার পরিবর্তে রাজ্য সরকার সহজলভ্য করে দিয়েছিল বাংলা মদ । কিন্তু লকডাউনের জেরে সরকারি অন শপ, অফ শপ কিংবা বারগুলি বন্ধ রয়েছে । তার জেরে মদ্যপরা পড়েছেন রীতিমতো সমস্যায় । আর যারা বাংলা মদ খেতে অভ্যস্ত তারা চোলাইয়ের ঠেকের দিকে পা বাড়াচ্ছে । বিভিন্ন সূত্র মারফত আবগারি দফতরের কর্তারা এমন খবরই পাচ্ছে ।
রাজ্য আবগারি দপ্তর অবশ্য হাত গুটিয়ে বসে নেই । সংগ্রামপুর বিষমদ কান্ডের স্মৃতি ফিরে আসুক তা কোনওভাবেই চাইছেন না দপ্তরের আধিকারিকরা । সেই সূত্রে সব জেলার আবগারি কর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে । ফলও মিলেছে হাতেনাতে । আবগারি দপ্তর সূত্রে খবর, গত 28 মার্চ পুরুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর চোলাই উদ্ধার হয়েছে ।
সক্রিয় হয়ে উঠেছে দক্ষিণ 24 পরগনার চোরাকারবারীরা । তার প্রমাণ মেলে গত 6 এপ্রিল । দক্ষিণ 24 পরগনা থেকে নদীপথে মহিষাদলে 1000 লিটার জলহীন চোলাই পাচারের চেষ্টা ভেস্তে দেওয়া হয় । উদ্ধার করা হয়েছে সেই মদ । এই চোলাইয়ের সঙ্গে জল মিশিয়ে অন্তত তৈরি হতো 5 হাজার লিটার চোলাই । ওই একই দিনে অন্ডালে চোলাইয়ের ঠেক ভাঙে আবগারি কর্তারা । পরপর এই ঘটনাগুলোই আবগারি কর্তাদের মনে তৈরি করেছে আশঙ্কা । লকডাউনে যেভাবে চোলাইয়ের রমরমা বাড়ছে, তাতে আবার ঘটবে না তো কোনও বড়সড় ঘটনা ?