ETV Bharat / state

Chandi Mela: 230 বছরের পা দিল ঐতিহ্যবাহী চণ্ডীপুজো ,পুজো ঘিরে মেলা সপ্তাহভর - Chandi mela at Behala

1792 সালে সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বংশের মহেশচন্দ্র রায়চৌধুরী শুরু করেন এই পুজোর(Chandi Mela)। দুর্গাপুজোর মহাষ্টমীর দুই মাস পর অগ্রহায়ণের শুক্লাষ্টমীতে মায়ের বার্ষিক পুজো হয়। আজও প্রথা মেনে সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়িতে দেবীর অষ্টধাতুর কলসির নিত্য সেবা হয় । আর বছরে একবার দেবীর মৃন্ময়ী বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে পুজো করা হয়।

Chandi Mela
ETV Bharat
author img

By

Published : Nov 14, 2022, 11:23 AM IST

Updated : Nov 15, 2022, 8:10 AM IST

কলকাতা, 14 নভেম্বর: কলকাতার ঐতিহ্যশালী পুজোগুলির অন্যতম বড়িশার চণ্ডীমেলা(Chandi Mela)। ঐতিহাসিক তাৎপর্যপূর্ণ এই চণ্ডীপুজো 230 বছরে পদার্পণ করতে চলেছে এই বছর । এই পুজো উপলক্ষ্যে আয়োজিত মেলা আগামী 30 নভেম্বর থেকে 9 ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে ৷
আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক তথা জগৎচন্দ্র রায়চৌধুরীর বংশধর শুভদীপ রায়চৌধুরী ৷ এই চণ্ডীপুজো ও মেলা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ঐতিহ্যবাহী চণ্ডীপুজোর ইতিহাস বর্ণনা করেন ৷ আগে পাঁঠাবলি এবং মোষবলিও হত এই পুজোয়। তবে মূর্তি পুজোটি বর্তমানে সর্বজনীন পুজোয় পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুন : বিশ্বনাথ ধামে অকারণে ঘোরাঘুরি, ধৃত সন্দেহভাজন 3 যুবক

জানা গিয়েছে, মহেশচন্দ্র রায়চৌধুরী মাতৃসাধক ছিলেন। বসতবাড়ি সংলগ্ন একটি পুকুরে অষ্টধাতুর একটি ঘড়া পেয়েছিলেন ৷ কথিত আছে দেবীর আদেশে তিনি সেই কলসি প্রতিষ্ঠা করেন। আর ওই পুকুর চণ্ডীপুকুর নামে পরিচিত। কলসিতে পরানো হয় বেনারসি শাড়ি এবং তার ওপরে রাখা আছে সিঁদুর লাগানো শিষ ডাব। ডাবে রুপোর চোখ, শিষে সোনার নথ-সহ নানান পারিবারিক অলঙ্কার এবং মাথায় মুকুট। কিন্তু বছরে একটি বার দেবীর নির্দেশ অনুযায়ী মূর্তি তৈরি করে পুজো করা হয়। শুক্লপক্ষের অষ্টমী, নবমী এবং দশমীতে পুজো দেওয়ার লাইন চোখে পড়ার মতো। এছাড়া পুজোকে কেন্দ্র করে বিরাট মেলার আয়োজন করা হয় ৷

ETV Bharat
বেনারসি ও গয়না পড়ানো অলংকারে সুসজ্জিত প্রতিষ্ঠা করা কলসি
অতীতে এই চণ্ডীমেলায় বসত সার্কাস, পুতুল নাচের আসর ৷ সার্কাসে বাঘের খেলা ছিল অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া, চণ্ডীপুজো ঘিরে যে সাংস্কতিক অনুষ্ঠানের প্রচলন ছিল তার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে এই প্রজন্মও। রবিশঙ্কর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, মান্না দে, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, অংশুমান, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্গীত পরিবেশন করতেন মনোময়, শ্রীরাধা, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, শম্পা কুণ্ডুর মতো তাবড় তাবড় শিল্পীরা ৷ মেলার আরও একটা দিক আছে। প্রতিবন্ধী দিবস, নারী দিবস, যুব দিবস, শিশু দিবস পালন করা হয় একাধিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে।
ETV Bharat
দেবীর মৃন্ময়ী বিগ্রহ

আরও পড়ুন : আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস, ইতিহাস থেকে গুরুত্ব জেনে নিন বিশদে

প্রসঙ্গত, শিল্পীরা দেবীর মৃন্ময়ী বিগ্রহ তৈরি করেন নিষ্ঠা ভরে ৷ মূর্তি তৈরির আগে চণ্ডীপুকুরে স্নান করে বিগ্রহের একটি কাঠ নিয়ে সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের প্রতিষ্ঠিত মঙ্গলচণ্ডীর কাছে পুজো দিয়ে আসেন। সেই কাঠটি পুজোর আগে অবধি চণ্ডীবাড়িতেই পূজিত হয়। অষ্টমীর দিন ভোরবেলা রায়চৌধুরী পরিবারের সদস্য সেই কাঠ এবং পরিবারের প্রাচীন শালগ্রামশিলা নিয়ে মূল মন্দিরে গেলে তবেই শুরু হয় পুজো।
এছাড়া অষ্টমী এবং নবমীর দিন সাবর্ণদের বাড়ি থেকে মন্দিরে ভোগ নিয়ে যাওয়ার এক প্রথা বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে বড়িশার সাবর্ণপাড়া ও রায় বাহাদুর কালিকুমার রায়চৌধুরী রোডে ভিড় চোখে পড়ার মতো। বার্ষিক পুজোর আগেই মাকে রাজবেশে সাজানো হয়। নানা অলংকারে সেজে তিনি জ্যোতির্ময়ী রূপে বিরাজ করেন মন্দিরে। পুজোর দিন সকাল থেকে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে চণ্ডীবাড়িতে। দুপুরে খিচুড়ি, সাদাভাত, পোলাও, ভাজা, তরকারি, নানান রকমের মাছ, চাটনি, পায়েস, মিষ্টি নিবেদন করা হয় এবং রাত্রে লুচি, তরকারি, মিষ্টি দেওয়া হয়। বর্তমানে মহেশচন্দ্রের দ্বিতীয় পুত্র হরিশ্চন্দ্রের জ্যেষ্ঠপুত্র সতীশচন্দ্র এবং দ্বিতীয় পুত্র জগৎচন্দ্রের প্রপৌত্ররা এই বাড়ির পুজো পরিচালনা করেন।

কলকাতা, 14 নভেম্বর: কলকাতার ঐতিহ্যশালী পুজোগুলির অন্যতম বড়িশার চণ্ডীমেলা(Chandi Mela)। ঐতিহাসিক তাৎপর্যপূর্ণ এই চণ্ডীপুজো 230 বছরে পদার্পণ করতে চলেছে এই বছর । এই পুজো উপলক্ষ্যে আয়োজিত মেলা আগামী 30 নভেম্বর থেকে 9 ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে ৷
আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক তথা জগৎচন্দ্র রায়চৌধুরীর বংশধর শুভদীপ রায়চৌধুরী ৷ এই চণ্ডীপুজো ও মেলা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ঐতিহ্যবাহী চণ্ডীপুজোর ইতিহাস বর্ণনা করেন ৷ আগে পাঁঠাবলি এবং মোষবলিও হত এই পুজোয়। তবে মূর্তি পুজোটি বর্তমানে সর্বজনীন পুজোয় পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুন : বিশ্বনাথ ধামে অকারণে ঘোরাঘুরি, ধৃত সন্দেহভাজন 3 যুবক

জানা গিয়েছে, মহেশচন্দ্র রায়চৌধুরী মাতৃসাধক ছিলেন। বসতবাড়ি সংলগ্ন একটি পুকুরে অষ্টধাতুর একটি ঘড়া পেয়েছিলেন ৷ কথিত আছে দেবীর আদেশে তিনি সেই কলসি প্রতিষ্ঠা করেন। আর ওই পুকুর চণ্ডীপুকুর নামে পরিচিত। কলসিতে পরানো হয় বেনারসি শাড়ি এবং তার ওপরে রাখা আছে সিঁদুর লাগানো শিষ ডাব। ডাবে রুপোর চোখ, শিষে সোনার নথ-সহ নানান পারিবারিক অলঙ্কার এবং মাথায় মুকুট। কিন্তু বছরে একটি বার দেবীর নির্দেশ অনুযায়ী মূর্তি তৈরি করে পুজো করা হয়। শুক্লপক্ষের অষ্টমী, নবমী এবং দশমীতে পুজো দেওয়ার লাইন চোখে পড়ার মতো। এছাড়া পুজোকে কেন্দ্র করে বিরাট মেলার আয়োজন করা হয় ৷

ETV Bharat
বেনারসি ও গয়না পড়ানো অলংকারে সুসজ্জিত প্রতিষ্ঠা করা কলসি
অতীতে এই চণ্ডীমেলায় বসত সার্কাস, পুতুল নাচের আসর ৷ সার্কাসে বাঘের খেলা ছিল অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া, চণ্ডীপুজো ঘিরে যে সাংস্কতিক অনুষ্ঠানের প্রচলন ছিল তার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে এই প্রজন্মও। রবিশঙ্কর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, মান্না দে, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, অংশুমান, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্গীত পরিবেশন করতেন মনোময়, শ্রীরাধা, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, শম্পা কুণ্ডুর মতো তাবড় তাবড় শিল্পীরা ৷ মেলার আরও একটা দিক আছে। প্রতিবন্ধী দিবস, নারী দিবস, যুব দিবস, শিশু দিবস পালন করা হয় একাধিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে।
ETV Bharat
দেবীর মৃন্ময়ী বিগ্রহ

আরও পড়ুন : আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস, ইতিহাস থেকে গুরুত্ব জেনে নিন বিশদে

প্রসঙ্গত, শিল্পীরা দেবীর মৃন্ময়ী বিগ্রহ তৈরি করেন নিষ্ঠা ভরে ৷ মূর্তি তৈরির আগে চণ্ডীপুকুরে স্নান করে বিগ্রহের একটি কাঠ নিয়ে সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের প্রতিষ্ঠিত মঙ্গলচণ্ডীর কাছে পুজো দিয়ে আসেন। সেই কাঠটি পুজোর আগে অবধি চণ্ডীবাড়িতেই পূজিত হয়। অষ্টমীর দিন ভোরবেলা রায়চৌধুরী পরিবারের সদস্য সেই কাঠ এবং পরিবারের প্রাচীন শালগ্রামশিলা নিয়ে মূল মন্দিরে গেলে তবেই শুরু হয় পুজো।
এছাড়া অষ্টমী এবং নবমীর দিন সাবর্ণদের বাড়ি থেকে মন্দিরে ভোগ নিয়ে যাওয়ার এক প্রথা বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে বড়িশার সাবর্ণপাড়া ও রায় বাহাদুর কালিকুমার রায়চৌধুরী রোডে ভিড় চোখে পড়ার মতো। বার্ষিক পুজোর আগেই মাকে রাজবেশে সাজানো হয়। নানা অলংকারে সেজে তিনি জ্যোতির্ময়ী রূপে বিরাজ করেন মন্দিরে। পুজোর দিন সকাল থেকে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে চণ্ডীবাড়িতে। দুপুরে খিচুড়ি, সাদাভাত, পোলাও, ভাজা, তরকারি, নানান রকমের মাছ, চাটনি, পায়েস, মিষ্টি নিবেদন করা হয় এবং রাত্রে লুচি, তরকারি, মিষ্টি দেওয়া হয়। বর্তমানে মহেশচন্দ্রের দ্বিতীয় পুত্র হরিশ্চন্দ্রের জ্যেষ্ঠপুত্র সতীশচন্দ্র এবং দ্বিতীয় পুত্র জগৎচন্দ্রের প্রপৌত্ররা এই বাড়ির পুজো পরিচালনা করেন।

Last Updated : Nov 15, 2022, 8:10 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.