কলকাতা, 9 এপ্রিল: মদ্যপান ও নেশার কারণে বাড়ছে হৃদরোগের সমস্যা ৷ তাই চিকিৎসকদের মদ্যপান থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিল কেন্দ্র ৷ এমনকি বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের তরফে চিঠিও পাঠান দেশের চিকিৎসক সংগঠনগুলিকে ৷ এক্ষেত্রে কেন্দ্রীর নীতি স্পষ্ট, আপনি আচারি ধর্ম এই প্রবাদ মেনে নিজেরাই আগে এই নেশায় লাগাম টানুন চিকিৎসকরা ৷ কেন্দ্রের এই চিঠি ইতিমধ্যেই রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য বিভাগ ও চিকিৎসক সংগঠনগুলির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷
বর্তমান যুগে নেশা, মদ্যপানের হিড়িক যেভাবে মাত্রাছাড়া পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে এই বিষয়টি নিয়ে অশনি সংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তাঁদের মতে, নেশার কারণেই অনেকের জীবনে নেমে আসছে অন্ধকার ৷ এমনকি যে চিকিৎসকরা নেশা ও মদ্যপানের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে আমজনতাকে সচেতন করেন, অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় তাঁরাও সুরার নেশায় আসক্ত ৷ এবার চিকিৎসকদের এই সুরা প্রেমে লাগাম টানতে সক্রিয় হল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ কেন্দ্রের তরফে সমস্ত চিকিৎসক সংগঠনকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছে তাঁদের সম্মেলন বা কর্মশালায় মদ্যপানের আয়োজনে ইতি টানতে ৷ সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধিকর্তা অতুল গোয়েল এই মর্মে দেশের চিকিৎসক সংগঠনগুলির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন ৷
'নন কমিউনিকেবল ডিজিজ' থেকে কী ধরনের মারণরোগ হয় এবং ফি বছর কত মানুষের মৃত্য়ু হয় তার একগুচ্ছ তালিকা তুলে ধরা হয়েছে কেন্দ্রের এই চিঠিতে । সেই সব উদাহরণ তুলে ধরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য অধিকর্তা অধ্যাপক ডাঃ অতুল গোয়েল প্রস্তাব দিয়েছেন, যে কোনও আলোচনা, কর্মশালা, শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের পর লাঞ্চ বা ডিনারের যে আয়োজন করা হয় সেখানে মদ্যপানের আসর বসানো থেকে বিরত থাকতে হবে ৷
এই চিঠি প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মানস গুমটা বলেন,"আমরা কেন্দ্রের এই ভাবনাকে স্বাগত জানাচ্ছি । কিন্ত এরসঙ্গে একটা প্রশ্ন উঠে আসছে । আমাদের রাজ্যেই পাড়ায় পাড়ায় মদের দোকান আছে । তাদের লাইসেন্সও হয়ে যাচ্ছে । এই মদ বিক্রির জন্য যে রাজস্ব আসছে সেটা নাকি রাজ্য সরকারের অর্থ উপার্জনে একটা বড় অংশ । তাই এই দুটো বিষয়ে কিন্তু দ্বিচারিতা আছে ৷ চিকিৎসকরা অবশ্যই পথপ্রদর্শক হবেন কিন্তু সরকারকেও সে নীতি নিয়ে চলতে হবে ।"
আরও পড়ুন: কেন দেশে বন্দর পরিচালনার অনুমতি আদানিদের ? চিনা সংযোগ টেনে প্রশ্ন কংগ্রেসের
কেন্দ্রের তরফে এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সংক্রামক রোগ ছাড়া দেশে প্রায় 63 শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয় নন কমিউনিকেবল ডিজিজে । যার নেপথ্যে রয়েছে সুরা পান এবং তামাক বা গুটখা জাতীয় নেশা । এর ফলে বাড়ছে হৃদরোগের বিভিন্ন সমস্যা ৷ এর মধ্যে কার্ডিও ভাসক্যুলার ডিজিজে 27 শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয় । এছাড়াও সিওপিডিতে 11 শতাংশ, ক্যানসারে 9 শতাংশ এবং ডায়াবেটিসে 3 শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয় । এসবের পিছনে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মদ্যপান, ধূমপান বা তামাকজাতীয় নেশার বড় প্রভাব আছে বলে কেন্দ্রের এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে ।