কলকাতা, 24 জুন: নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের স্বার্থে ফের একবার রাজ্যের শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে তলব করতে চলেছে সিবিআই। সম্প্রতি শিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য ও নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছিল সিবিআইয়ের তরফে ৷ নিজাম প্যালেস সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে সেই নথি শিক্ষা দফতর থেকে নিজাম প্যালেসে পাঠানো হয়েছে। আর সেই নথির উপর ভিত্তি করেই ফের একবার রাজ্যের শিক্ষা সচিবকে তলব করতে চলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ৷
সূত্রের খবর, এর আগে শিক্ষা দফতরকে পাঠানো সিবিআইয়ের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য, নথিপত্র তাদের হাতে দিতে হবে। সিবিআই সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দু'বার শিক্ষা সচিবকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছে সিবিআই। জানা গিয়েছে, শিক্ষা সচিবের দেওয়া প্রথম বয়ান এবং দ্বিতীয় বয়ান মিলিয়ে দেখেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
তদন্তকারীদের দাবি, একাধিকবার শিক্ষা সচিব একই প্রশ্নের উত্তর ভিন্ন ভিন্ন দিয়েছেন ৷ সে ক্ষেত্রে তাঁকে ফের একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি শিক্ষা দফতর থেকে যে সকল নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য এবং দলিল নিজাম প্যালেসে পাঠানো হয়েছে, সেগুলিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। মূলত কী প্রক্রিয়ায় রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল এবং কোন কোন আধিকারিক এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেই সব বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের অনুমান, শিক্ষা দফতর থেকে তাদের হাতে আসা বিভিন্ন কাগজপত্র ঘেঁটে আপাতত এই বিষয়টি তাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে, যে শিক্ষা সচিবের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে কাগজপত্রের তথ্যের বিস্তর ফারাক ৷ শিক্ষা সচিবের বক্তব্যেও একাধিক বৈষম্য রয়েছে। এই বৈষম্য দূরীকরণের জন্যই ফের শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে তলব করতে পারে সিবিআই।
আরও পড়ুন: কুন্তলের 'বিতর্কিত' চিঠি কাণ্ডে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের চিকিৎসককে তলব সিবিআইয়ের
যদিও এই বিষয় শিক্ষা সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মূলত সিবিআইয়ের অভিযোগ, রাজ্যের শিক্ষা সচিবের সঙ্গে এই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিও যুক্ত ৷ এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক সময়ে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকরা অভিযোগ এনেছেন, যে তৎকালীন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে একাধিকবার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকতে বাধ্য করেছিলেন। সূত্রের খবর, কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে, একাধিক সময়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম করে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি বরং সিবিআইয়ের অভিযোগ তদন্তকে ঘুর পথে পরিচালনার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।