কলকাতা, 18 মার্চ: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে আবারও তলব করল সিবিআই । জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে 10টার মধ্যে তাঁকে কলকাতার নিজাম প্যালেসে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে । সিবিআই সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতেই তাঁর বাড়িতে নোটিশ পৌঁছয় । সোমবার সুজয়কৃষ্ণর মেয়ে এবং তাঁর স্ত্রী'র নামে যাবতীয় ব্যাংক একাউন্টের সমস্ত তথ্য নিজাম প্যালেসে আনতে বলা হয়েছে । এর আগে গত বুধবারও নিজাম প্যালেসে দু'জন আইনজীবী নিয়ে হাজিরা দেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু । তাঁকে ঘণ্টাতিনেক ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা (CBI Summons Sujoy Krishna Bhadra) ।
নিজাম প্যালেস সুত্রে খবর, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে ফোন করে সিবিআই অফিস থেকে বলা হয়, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় তাঁকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা ৷ সিবিআই সূত্রে খবর, এরপরেই গতকাল রাতে তাঁর বেহালার বাড়িতে গিয়ে দু'জন সিবিআই আধিকারিক নোটিশ দিয়ে আসেন ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত নেমে প্রথমে গোপাল দলপতির মুখে শোনা যায় 'কালীঘাটের কাকু'র নাম । এরপরেই 'কালীঘাটের কাকু' আদতে কোন ব্যক্তি তা খোঁজখবর করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কথা ৷ সিবিআইয়ের কাছে একাধিকবার গোপাল দলপতি জানান যে হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ তাঁকে বারবার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন । এছাড়াও তিনি টাকা আদায়ের জন্য বলতেন, কালীঘাটের কাকুর কাছে টাকা তাড়াতাড়ি পৌঁছে দিতে হবে ।
আরও পড়ুন: তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরও ‘কালীঘাটের কাকু’র উত্তরে সন্তুষ্ট নয় সিবিআই, খবর সূত্রের
এরপরে গোপাল দলপতি শুধু নয়, তাপস মণ্ডলের মুখেও কালীঘাটের কাকুর কথা শোনা যায় । এখনও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা । তিনি কী করেন, কেন কুন্তল ঘোষ ও গোপাল দলপতি তাঁকে চিনতেন এবং কী সংক্রান্ত ব্যবসার জন্য তাঁরা একাধিকবার বৈঠক করেছেন সেই বিষয়ে জানতেই আগামী সোমবার সকাল তাঁকে নিজাম প্যালেসে ডাকা হয়েছে ।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, শিক্ষা নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় কালো টাকা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের অ্যাকাউন্টে যেত । নিজের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না-করে তিনি তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা রাখতেন বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ । সেই জন্যই তাঁকে সোমবার সকালে স্ত্রী এবং মেয়ের ব্যাংকের যাবতীয় তথ্য সঙ্গে করে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে । মূলত কোন কোন ব্যক্তির সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আর্থিক লেনদেন হয়েছিল সেই বিষয়টি পরিষ্কার করতে চাইছেন সিবিআই আধিকারিকরা ।