কলকাতা, 20 এপ্রিল: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাজেয়াপ্ত দু'টি মোবাইল ফোনেরই ফরেনসিক পরীক্ষা করতে চায় সিবিআই ৷ সেই মর্মে বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন জানাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷ দিনকয়েক আগে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে প্রায় দু'দিনের টানা তল্লাশি অভিযান কার্যত নাটকীয় মোড় নেয় ৷ অভিযোগ, সিবিআইয়ের তল্লাশি অভিযানের সময়ই নিজের দু'টি ফোন বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন বিধায়ক ৷ এরপর বহু কষ্টে সেই ফোন গোয়েন্দারা উদ্ধার করলেও, তা কাজ করছে না বলে জানা গিয়েছে।
তথ্য গোপনের উদ্দেশেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের উপস্থিতিতে বাড়ির পাশের জলাশয়ে নিজের ব্যবহার করা দু'টি ফোনই ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। তবে ফেলে দেওয়া ফোন প্রায় দু'দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে অবশেষে উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। কিন্তু সেই ফোন থেকে এখনও কিছু উদ্ধার করতে পারেনি বলেই তদন্তকারীদের দাবি ৷ সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া বিধায়কের দু'টি ফোনই দীর্ঘক্ষণ জলে থাকায় সে দুটি কোনও কাজ করছে না ৷ সিবিআই সূত্রে খবর, উদ্ধারের সময় থেকেই ফোন দু'টি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় বা ইনঅ্যাক্টিভ হয়ে যায়। ফলে মোবাইল ফোন খুলে তারা তদন্ত করতে পারছেন না। এই বিষয়টি জানিয়ে এদিন তদন্তকারী আধিকারিকের তরফে আলিপুর আদালতে আবেদন করা হল ৷
সিবিআই আদালতে আবেদন করেছে, অবিলম্বে যেন জীবন সাহার দু'টি মোবাইল ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য তারা পাঠাতে পারেন। নিজাম প্যালেস সূত্রে খবর, এদিন তদন্তকারী আধিকারিক নিজে এসে আলিপুর আদালতে আবেদন করেন যে, জীবনকৃষ্ণ সাহার এই দু'টি মোবাইল থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাঁরা পেতে পারেন। সুতরাং ফোন দু'টিকে দ্রুত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য তাঁরা যাতে পাঠাতে পারেন, সেই নির্দেশ দেওয়া হোক ৷ ইতিমধ্যেই জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করে জেরা পর্ব শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে বিধায়কের বাড়িতে প্রায় আড়াই দিন ধরে তল্লাশি অভিযান চালানো হয় ৷ সেই সময় জীবনকৃষ্ণ সাহা নিজের ব্যবহার করা দুটি ফোন বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি জলাশয়ে ফেলে দেন। পরে অবশ্য জীবনকৃষ্ণ সাহার কাছ থেকে একাধিক অসঙ্গতিপূর্ণ বয়ান পাওয়ার পর তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ পরে লোক এনে কার্যত কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে সংশ্লিষ্ট জলাশয় থেকে জল ছেঁচে, কাদা ও পাকের ভিতর থেকে জীবনকৃষ্ণ সাহার দু'টি ফোন উদ্ধার করে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: কুন্তলের চিঠি মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর, জানালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়
যদিও সিবিআইয়ের অভিযোগ দু'দিন ধরে ওই দু'টি ফোন জলে পড়ে থাকার ফলে সেগুলি নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। সেগুলি আর খোলা যাচ্ছে না। তদন্তকারীদের দাবি নিয়োগ-দুর্নীতি কাণ্ডের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লুকিয়ে রয়েছে জীবনকৃষ্ণ সাহার ওই দু'টি ফোনে। ফলে ওই দু'টি ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আলিপুর আদালতে আবেদন জানালো সিবিআই।