কলকাতা, 24 ডিসেম্বর : প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হল মামলা । গতকাল রাতে 16 হাজারের বেশি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ । আজই সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল মামলা । আগামী 4 জানুয়ারি বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে ।
মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, 2014 সালের প্রশ্ন ভুল মামলায় তাঁদের খাতা পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ খাতা পুনর্মূল্যায়ন না করেই কি করে প্রাথমিক শিক্ষা শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল ? আজ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিচারপতি মামলাটি গ্রহণ করেন ।
2014 সালের প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় প্রশ্ন ভুল সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন প্রায় 130 জন চাকরিপ্রার্থী । বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় 2018 সালে নির্দেশ দিয়েছিলেন আবেদনকারী সমস্ত চাকরিপ্রার্থীর টেট পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে । এবং মূল্যায়নের পরে যদি যোগ্য বলে বিবেচিত হয় তাঁদের নিয়োগপত্র দিতে হবে প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদকে । এই নির্দেশের পরপর 2014 সালের টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন এরকম আরও কয়েকশো চাকরিপ্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন । তাঁদেরও টেট পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে । কিন্তু সেই মামলা শেষ পর্যন্ত এখনও নিষ্পত্তি হয়নি । কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে ।
ইতিমধ্যে গত 23 নভেম্বর প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদ নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় এবং বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় 2014 সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা এই নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে পারবে । এই পরিস্থিতিতে বাবর শেখ , রিঙ্কু বর্মণ, হোসেন আলি সহ একাধিক চাকরিপ্রার্থী হয়ে জরুরি ভিত্তিতে বিচারপতি অরিন্দম সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন । বিচারপতি অরিন্দম সিনহা বিষয়টি শোনার পর প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদকে হলফনামা দিয়ে তাঁদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন । কিন্তু প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদ আদালতে জানায়, তারা এখনই চূড়ান্ত নিয়োগ করছে না ।
27 নভেম্বর আরেকটি মামলায় 2014 সালের প্রশ্ন ভুল মামলায় প্রথমে আবেদনকারী 130 জন প্রার্থীর মধ্যে থেকে বেশ কয়েকজনকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে তাতে আবেদন করতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট । বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এই নির্দেশ দিয়েছিলেন । কিন্তু এই 130 জনের বাইরেও 2014 সালে পরীক্ষায় বসেছিলেন কয়েক লাখ চাকরিপ্রার্থী । তাঁদের মধ্যে থেকে অনামিকা মণ্ডল সহ একাধিক চাকরিপ্রার্থী আজ কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন । এ ব্যাপারে মামলাকারীদের তরফের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, "প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দীর্ঘদিন পর স্কুলগুলোতে নিয়োগ করছে । কিন্তু 2014 সালে প্রাইমারি টেট পরীক্ষার প্রশ্নে যে ছটি ভুল ছিল সেই ব্যাপারে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও একাধিক যোগ্য চাকরিপ্রার্থীকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ । যোগ্য প্রার্থীরা যাতে সুযোগ পায় সেই দাবিতেই আমাদের মামলা ।"