কলকাতা, 28 এপ্রিল: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মানেই এক ঐতিহ্য । সত্যজিৎ রায় থেকে শুরু করে অমর্ত্য সেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়-সহ বহু নামকরা ব্যক্তিত্ব, শিল্প-সাহিত্য জগতের বহু প্রতিভাশালী এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেছেন। এছাড়াও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে বহু বিদেশি গুণীজনের পায়ের ছাপ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আচার্য ও উপাচার্য ছিলেন যথাক্রমে গভর্নর জেনারেল লর্ড ক্যানিং ও স্যার উইলিয়াম কোলভিল । তবে স্বনামধন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে অভাব স্থায়ী উপাচার্যের ।
সোনালি চক্রবর্তীর পর প্রায় একমাস বাদে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য পদে আসেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায় । তারপর থেকেই কখনও একমাস বা তিন মাসের মেয়াদে তাঁকে বহাল রাখা হয় এই পদে । কিন্তু বর্তমানে ফের তাঁর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আবার উপাচার্যহীন হয়ে গিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় । একজন স্থায়ী উপাচার্য না-থাকায় সমস্যায় পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে শুরু করে পড়ুয়ারাও ।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের তরফে শঙ্খায়ন চৌধুরী বলেন, "কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই । যার ফলে বহু সমস্যা দেখা যাচ্ছে । নীতিগত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না সব আটকে থাকছে । আবার এর মাঝে দেখতে পাচ্ছি রাজ্যপাল তথা আচার্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন উপাচার্যদের নাম ঘোষণা করছেন । এর ফলে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের একটি সংঘাত তৈরি হচ্ছে । অতএব দু'পক্ষই তাদের ক্ষমতা দেখাচ্ছে । এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন পড়ুয়ারা ।"
ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও-এর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সম্পাদক সুব্রত খাটুয়া জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য নেই গত কয়েক মাস । স্থায়ী উপাচার্য না থাকার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে । সেমিস্টার পরীক্ষার পরে বহুদিন ধরে ফল প্রকাশিত হচ্ছে না । বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণের সর্বোচ্চ বডি সিনেট এবং সিন্ডিকেটের মিটিং করা যাচ্ছে না যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের স্বার্থে নতুন কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছে না । স্কলারশিপ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের ।
আরও পড়ুন: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে মামলা থেকে সরানো মানে অপশক্তির জয়, মত চাকরিপ্রার্থীদের
অন্যদিকে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্পৃক্তা বসু জানান, পড়ুয়ারা কোথায় তাঁদের অভিযোগ জানাবে তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না । কারণ কোনও রেজিস্ট্রার নেই । ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় কোনও ছাত্র প্রতিনিধিও নেই । তাই একটা নৈরাজ্য চলছে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ।