কলকাতা, 22 অগস্ট: বাঁশবেড়িয়া হাইস্কুলে স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা টেনে নামানোর অভিযোগে মামলা । মঙ্গলবার এই অভিযোগ পেয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । রাজ্য এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ ৷ মামলাকারী শুভেন্দু অধিকারী হওয়ায় এই ঘটনায় রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা ঠিক নয় বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি । ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল সে দিন, রাজ্যের কাছে তার রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট ।
বাঁশবেড়িয়ায় জাতীয় পতাকার অবমাননা, দেশবিরোধী স্লোগান, পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে একদল দুস্কৃতীর বিরুদ্ধে । প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের নির্দেশ, সরকারি স্কুলের ভিতরে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর । রাজ্য অভিযোগ খতিয়ে না দেখে কে মামলা করেছে সেইদিকে তাকিয়ে রয়েছে, এটা ঠিক নয় । রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ৷
বাঁশবেড়িয়া গ্যাঞ্জেস হাইস্কুলে ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল 15 অগস্ট ? তা জানতে চেয়ে রিপোর্ট তলব করেছেন প্রধান বিচারপতি ৷ স্কুলকে এই মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি । পাশাপাশি যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের কোন সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে, তাঁরা কারা এবং এই 31 জনের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা আছে কি না, তা রাজ্যকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত । আগামী 6 সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ।
এ দিন শুনানিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর তরফে আইনজীবী সূর্যনীল দাস বলেন, "বাঁশবেড়িয়া গ্যাঞ্জেস হাইস্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে । জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় প্রায় 30 জনেরও বেশি দুস্কৃতীদের একটি দল জাতীয় পতাকার প্রতি অবজ্ঞা ও অসম্মান করে, টেনে নামানো হয় পতাকা ৷ তারা দেশবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে এবং পাথর ছোড়ে ।"
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (এজি) বলেন, এটি স্কুলের বাইরের ঘটনা । দুটি এফআইআর দায়ের হয়েছিল । প্রায় 31 জনকে গ্রেফতার করা হয় । তারা এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে ।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এই শুনে বলেন, "যেহেতু জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগ, তাই রাজ্যকে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল । স্থানীয় পুলিশের স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে আরও আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল । আর সমস্ত অভিযোগে রাজ্যের রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা, এটা গ্রহণযোগ্য নয় । রাজ্য যদি চোখ বন্ধ করে থাকে, তাহলে সব কিছুই তাদের কাছে অন্ধকার লাগবে ।"
বিরোধী দলনেতার তরফে আর এক আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন, "যদি কিছু না ঘটে থাকে, তাহলে রাজ্য এতজনকে গ্রেফতার করল কেন ? এর যথাযথ তদন্ত করা হোক ।" তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, "স্কুলের বাচ্চাদের সামনে জাতীয় পতাকার অবমাননা এই রাজ্যের অবমাননা । পাথর ছোড়া হয়েছে । তারপর পুলিশ বলছে কিছু হয়নি ?"
আরও পড়ুন: গণধর্ষণের শিকার 11 বছরের নাবালিকার গর্ভপাত হবে এসএসকেএমে, জানাল হাইকোর্ট
উল্লেখ্য, 15 অগস্ট বাঁশবেড়িয়ায় জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয় । আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগে আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আর্জি জানান তিনি । তাঁর আরও আর্জি, আদালতে যথাযথ নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিক ৷