কলকাতা, 21 ডিসেম্বর: কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ধাক্কা খেতে হল স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission) বা এসএসসি (SSC)-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে (Subires Bhattacharyya) ৷ বুধবার তাঁর জামিনের আবেদন (Bail Petition) খারিজ করে দেয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর (Justice Joymalya Bagchi) ডিভিশন বেঞ্চ ৷ একইসঙ্গে মামলার শুনানি চলাকালীন তাঁর পর্যবেক্ষণে কড়া মন্তব্য করেন বিচারপতি বাগচী ৷ তিনি বলেন, দুর্নীতিতে মদত দেওয়া হয়েছে ৷ তাই সুবীরেশের জামিন মঞ্জুর করা সম্ভব নয় ৷
এদিন মামলার শুনানিতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের আইনজীবী বলেন, "সুবীরেশ 2014 থেকে 2018 পর্যন্ত এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ৷ সেই সময় কোনও বেআইনি নিয়োগ হয়নি ৷"
আরও পড়ুন: জেরায় মুখ বন্ধ সুবীরেশের, বাধ্য হয়ে ভাগ্নেকে জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের
এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি সুবীরেশ ভট্টাচার্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, "ওঁর (সুবীরেশের) সময় কী হয়েছে, আদালত জানতে চায় ৷"
উত্তরে আইনজীবী বলেন, "ওই সময় পরীক্ষা হয়েছে এবং চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ৷"
অন্যদিকে, সিবিআইয়ের আইনজীবী অরুণ মাইতি আদালতকে জানান, "(জামিনের) আবেদনকারীর (সুবীরেশ ভট্টাচার্য) বিরুদ্ধে দু'টি মামলা রুজু হয়েছে ৷ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁকে ফের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ৷"
এরপর বিচারপতি ফের সুবীরেশের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, "আপনার (মক্কেলের) সময় কোনও সমঝোতা হয়নি তাহলে ?"
উত্তরে সুবীরেশের আইনজীবী দাবি করেন, "সেই সময় (দুর্নীতির সময়) সুবীরেশ দায়িত্বে ছিলেন না ৷ তখন প্রোগ্রাম অফিসার ছিলেন পর্ণা বসু ও সমরজিৎ আচার্য ৷ কিন্তু তাঁরা গ্রেফতার হননি ৷ এসপি সিনহা সব করেছেন ৷ ওঁকে (সুবীরেশকে) সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়েছিল ৷ পরে ওঁকে গ্রেফতার করা হয় ৷ পাঁচজনের সংশ্লিষ্ট কমিটির প্রধান ছিলেন এই এসপি সিনহা ৷ অথচ আমার মক্কেল 94 দিন জেলে রয়েছেন ৷ তিনি মেধাতালিকা তৈরি পর্যন্ত ছিলেন ৷"
এরপরই বিচারপতি বলেন, "আপনার (মক্কেলের) সময় তালিকা প্রকাশ করা হয় ৷ তালিকায় 'ম্যানিপুলেট' করা হয় ৷ আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ৷ তাহলে কি আপনি (সুবীরেশ) ষড়যন্ত্রে যুক্ত, এটা বলা যায় না?"
এরপর সুবীরেশের আইনজীবী ফের বলেন, "পর্ণা বসুর সঙ্গে কথা বলেই সুবীরেশকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷"
সব শুনে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, "আপনি এসএসসির প্রধান হয়ে এসব কিছুই জানলেন না, এটা হতে পারে ? ওএমআর শিটে যা পাওয়া গিয়েছে, সেটা অস্বীকার করতে পারেন ? আপনি যে চেয়ারে বসে আছেন, সেটা পোস্টমাস্টারের কাজ ! স্বচ্ছতা বজায় রাখাই আপনার কাজ ৷ আপনি যদি নিজের দায়িত্ব সঠিভাবে পালন না করেন, সেক্ষেত্রে আদালত কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে ৷ একজন পাবলিক সার্ভেন্টের উচিত তাঁর কর্তব্য পালন করা ৷ এই দুর্নীতিতে শিক্ষাব্যবস্থাকে বঞ্চিত করা হয়েছে ৷ আমরা একবছর পর এই জামিনের কথা ভাবব ! এখন জামিন মঞ্জুর করা সম্ভব নয় ৷"