কলকাতা, 14 সেপ্টেম্বর: পাড়ায় সমাধান প্রকল্পের মাধ্যমে 87 জন শিক্ষকের বদলি হল কীভাবে, এই প্রশ্নে রাজ্য সরকার যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট নয় কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ।
গতকাল এই মামলার শুনানিতে আদালত রাজ্যকে হলফনামা পেশ করে জানাতে বলেছিল যে, এই পাড়ায় সমাধানটা কী ? এর সদস্যই বা কারা ? সেই নির্দেশমতো রাজ্য এ দিন আদালতে হলফনামা পেশ করে জানায়, পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে বদলি হওয়ার যে কথা উঠেছে, তা সম্পূর্ণ ভুল । আরটিআই-তে লেখা আছে । কিন্তু অন্য প্রমাণ দেখুন । পাড়ায় সমাধান দুয়ারে সরকারের একটি প্রকল্প । যেখানে বাড়ির সামনে থেকে পরিষেবা দেওয়া হয় । এ কথা শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন, "এই মামলায় সঠিক যুক্তি না পেলে আরও বৃহত্তর সিদ্ধান্ত নিতে পারি ।"
রাজ্যের রিপোর্টে খুশি নয় আদালত । ফের বোর্ড ও রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করে হাইকোর্ট । এই 87 জন কোথায় কীভাবে চাকরি পেয়েছেন, তা আদালতে জানাতে হবে রাজ্যকে । 28 সেপ্টেম্বর দুপুর দুটোয় এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ।
এ দিন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, "2021 সালের অগস্টে উৎসশ্রী প্রকল্পের ক্ষমতা তুলে নেওয়া হয় । টেম্পোরারি সাসপেন্ড হয় এই রুলের । তারপরেও কী করে এই প্রকল্পে কাজ করছে কমিশন ? পাড়ায় সমাধান কি সালিশি সভা ? এটার কি কোনও বিজ্ঞপ্তি আছে ? বাড়ির পরিচারিকা না এলে কি সেটারও সমাধান হয় এই 'পাড়ায় সমাধানে' ? এরপর তো 'পাড়ায় সমাধানের' মাধ্যমে ডিভোর্সও দিয়ে দেবে । বলবে, আদালতের কোনও দরকার নেই । এইসব ক্যাম্প করা যায়, কিন্তু সেখানকার বিভিন্ন সমস্যা শুনে তা নির্দিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া দরকার । এ রকম ভাবে পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে সেখানেই সবকিছু করে দেওয়া বেআইনি । এরা বেআইনি কাজ করছে । বদলির ব্যাপারে কমিশন ও শিক্ষা দফতরের নিজ নিজ দায়িত্ব আছে । এরা একক ভাবে কেউ কাজ করতে পারেন না । এটা করছে কোন নিয়মে ?"
আরও পড়ুন: কুন্তলের চিঠি প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
যদিও সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, "দেখছি, কোনও বিজ্ঞপ্তি আছে কি না । তবে এটা কোনও সালিশি সভা নয়, এটা একটি সরকারি ক্যাম্প । এখানে সমস্যা এলে নিয়ম মেনে তার সমাধান করা হয় ।"
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান, "2021 সালে ঘটনাটি ঘটেছে । তাঁদের বদলির রিপোর্ট পেয়েছে বোর্ড । কিন্তু 87 জনের বদলি হয়েছে কি না, তা জানতে তাঁদের একটু সময় চাই ।"
উল্লেখ্য, পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে সারা রাজ্যে 87 জন শিক্ষকের বদলি হয়েছে । কিন্তু নিয়ম মেনে উৎসশ্রী প্রকল্পে আবেদন করলেও বদলি হয়নি উলুবেড়িয়ার শিক্ষিকা পূজা মণ্ডলের । তিন বছর ধরে তিনি এই বদলির চেষ্টা করছেন । কিন্তু কোনও লাভ হয়নি । তখন তিনি বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ।