কলকাতা, 13 জুলাই : ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলায় চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন । নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ।
কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চের নির্দেশ, মানিকতলার নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের ভাইয়ের থেকে পরশু (15 জুলাই) সকাল 11 টায় ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করতে হবে । নমুনা পাঠাতে হবে কলকাতার সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে । পরীক্ষার রিপোর্ট সাত দিনের মধ্যে পেশ করতে হবে কলকাতা হাইকোর্টে । অভিজিৎ সরকারের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করা হলেও মৃতের ভাই দেহ শনাক্ত করতে পারছেন না । সেই জন্যই ডিএনএ পরীক্ষায় নির্দেশ দিল পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।
আজ মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনেরাল কিশোর দত্ত জানান, "নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের ভাই এবং পরিবার তদন্তে সাহায্য করছেন না । গোপন জবানবন্দির জন্য পাঁচ বার ডেকে পাঠানো হয়েছে । ই-মেল করা হয়েছে । কিন্তু কেউ কোনও উত্তর দেননি ।" এর পাশাপাশি অভিজিৎ সরকারের ভাইয়ের শরীর থেকে যখন নমুনা সংগ্রহ করা হবে, সেই সময় রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিও যাতে উপস্থিত থাকতে পারেন, তার অনুমতি চান অ্যাডভোকেট জেনেরাল । কিন্তু পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয় । 22 জুলাই মামলাটির পরবর্তী শুনানি ।
আরও পড়ুন : Violence in Bengal : মুখ্যমন্ত্রী নিজের চোখে দেখে আসুন, পরামর্শ মানবাধিকার কমিশনের
উল্লেখ্য ভোট-পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে 18 জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে একটি কমিটি গঠন করে রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আদালতকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ । এরপর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বেশ কয়েকটি টিম রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে এবং 30 জুন একটি গোপন অন্তর্বর্তী রিপোর্ট পেশ করে কলকাতা হাইকোর্টে ।
সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে 2 জুন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ তাদের নির্দেশে জানায়, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটেছে । কিন্তু পুলিশ সক্রিয় হয়ে তা প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা করেনি । এই ব্যাপারে রাজ্যের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট । নির্দেশে জানানো হয়েছিল, এখনও পর্যন্ত যত অভিযোগ জমা পড়েছে সব অভিযোগে এফআইআর দায়ের করার পাশাপাশি প্রয়োজনে আক্রান্তদের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত । একইসঙ্গে সমস্ত আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত ।
নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দেহের দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট । পাশাপাশি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল 13 জুলাই পর্যন্ত । আজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ কমিটি পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে প্রত্যেক বিচারপতিকে আলাদা আলাদা খামে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করেছে।