কলকাতা, 3মে: ময়নার বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । বুধবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা কলকাতার কমান্ড হাসপাতালে মৃতদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন । তার জন্য কমান্ড হাসপাতাল একটি দল গঠন করা হবে । দেহের ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে । পরিবারের দুজন প্রতিনিধি ময়নাতদন্তের সময় চাইলে উপস্থিত থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি ।
সোমবার ওই বিজেপি কর্মীর ময়নাতদন্তের দ্বিতীয় রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি আক্রান্ত ও প্রতিবেশীকে আগামী একমাসের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা । তিনি এফআইআর-এ বিস্ফোরক উদ্ধার (এনআইএ) এবং এসসি, এসটি আইন যুক্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন ৷
রাজ্যের তরফে আইনজীবী অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বলেন, ঘটনাটা দুর্ভাগ্যজনক । ময়না পুলিশ স্টেশনের ডিউটি অফিসারকে ফোন করে জানানো হয় ঘটনার কথা । 2মে স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর হয় । যে ভাবে রাজনৈতিক দলগুলি আচরণ করছে, তাতে স্থানীয় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে । দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত কমান্ড হাসপাতালে করলে রাজ্যের আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দেন তিনি ৷
মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ময়না বিজেপি বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুইয়াঁ খুনে হাইকোর্টে মামলা করেছেন তাঁর ছেলে । অভিযোগ, 1মে বিজেপি নেতার উপর আক্রমণ হয় । তাঁর ছেলে, স্ত্রীর সামনে অপহরণ করে মারধর করা হয় তাঁকে । তখনই পুলিশকে জানানো হয় । সন্ধ্যায় অপহরণের পর রাত 12টায় তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । রাত তিনটে নাগাদ বিজেপি কর্মীরা এসপি ও ডিএম-কে মেইল করে ময়নাতদন্ত না করতে আবেদন করেন । তারপরেও বিকেল চারটের পরে ময়নাতদন্ত করে পুলিশ । যা বেআইনি । সৌমেন মহাপাত্র-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তফসিলি জাতিভুক্ত পরিবার ।"
প্রতিবেশী সঞ্জয় তাঁতির আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন, শেষ দু বছর ধরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে রাখা হয়েছে । পুলিশ দুষ্কৃতীদের সব রকম সহযোগিতা করছে । সঞ্জয় তাঁতি, বিজয়কৃষ্ণ ভুইয়াঁর প্রতিবেশী । তিনিও আক্রান্ত । তাঁকেও পুলিশ হেনস্থা করেছে । 1মে সন্ধ্যায় যে ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে তিনি জানান, বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয় । বোম ছোড়া হয় ।
বিচারপতি রাজ্যকে বলেন, কে পরিবারকে জানিয়েছে ময়নাতদন্তের ব্যাপারে ? কে রিফিউজ করেছে ? এখন দেহ কোথায় ? কোনও স্পট তদন্ত হয়েছে ? ঘটনার প্রথম 72 ঘণ্টা তদন্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । কোর্ট অভিযোগ পালটা অভিযোগ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না । নির্দিষ্টভাবে কয়েকজনের নামে অভিযোগ আছে । তাঁদের ব্যাপারে পুলিশ কী করেছে ?
জবাবে রাজ্যের বক্তব্য, "পোস্টমর্টেম নিয়ে আমাদের লুকনোর কিছু নেই । কোর্ট চাইলে আমরা নিজেদের দায়িত্বে দেহ কমান্ড হাসপাতালে পৌঁছে দেব । কিন্তু সেখানে কোনও ভাবে পরিবার বা কোনও দল দেহ হস্তগত করার চেষ্টা করবে না । আমাদের আশংকা দেহ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা হতে পারে ।"
আরও পড়ুন: ময়নায় বিজেপির 12 ঘণ্টার বনধে প্রভাব জনজীবনে, জোর করে দোকানপাট বন্ধের অভিযোগ