কলকাতা, 17 মে : পরেশ অধিকারীর (Paresh Chandra Adhikary) মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে স্কুলে চাকরি দেওয়া হল কীভাবে ! এ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মন্ত্রীকে আজ রাত 8 টায় সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের কাছে তাঁকে মন্ত্রী থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছে আদালত ৷
2016 সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষায় পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর মোট প্রাপ্ত নম্বর ছিল 61। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান জরুরি ভিত্তিতে অনলাইনে হাজির হয়ে জানান, অঙ্কিতা অধিকারী পেয়েছেন 61 (30 বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং 31 অ্যাকাডেমিক স্কোর) ৷ আর মামলাকারী ববিতা সরকারের নম্বর ছিল 77 (সাবজেক্ট 36,অ্যাকাডেমিক 33 ও পার্সোনালিটি টেস্ট 8)। এটা ছিল ওয়েটিং লিস্ট। এর মধ্যে থেকে 20 জনকে চাকরির সুপারিশ করা হয়েছিল। 20 নম্বরে নাম ছিল ববিতার ৷ কিন্তু পরে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম লিস্টের প্রথমে যোগ হওয়ায় ববিতা সরকার আর সুযোগ পাননি। এর পাশাপাশি মনি সরকার নামে আরও একজন র্যাঙ্ক জাম্প করে চাকরি পেয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷
31 অগস্ট 2018 অঙ্কিতার নাম সুপারিশ করা হয়। ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলে অঙ্কিতা অধিকারীকে নিয়োগ করা হয় ৷ অভিযোগ, পরেশ অধিকারী রাজ্যের শাসক দলে যোগ দেওয়ার পর তাঁর মেয়ের নাম এই লিস্টে যোগ হয়। এটা তদন্ত সাপেক্ষ। এই নিয়োগে স্ক্যাম রয়েছে বলে মনে করছেন বিচারপতি ৷ যেটার সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে এমনটাও মনে করছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । রাজ্যের তরফে আইনজীবী সম্রাট সেন এর বিরোধিতা করে বলেন, "যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আগে তাঁদের বক্তব্যগুলি শোনা হোক, তারপর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। অন্যান্য অনেক মামলাতেই সত্য সামনে আসছে সিবিআই তদন্ত ছাড়াই। অঙ্কিতা অধিকারী ও মনি দাসের বক্তব্য আগে শোনা হোক।"
তিনি আরও বলেন, "রাজ্যের পুলিশ তাঁদের দায়িত্ব পালনে কখনও অবহেলা করেননি । স্পেশাল অনুসন্ধানকারী টিম সেটা করতে পারে। স্কুল সার্ভিস কমিশন ভুল সংশোধন করতে পারে 1997-এর রুল 17 আইন অনুযায়ী ৷"
আরও পড়ুন : আনিশের বাড়িতে পুলিশি অভিযান বেআইনি ছিল, আদালতে স্বীকার এজি-র
এর প্রত্যুত্তরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,"কিন্তু অঙ্কিতা অধিকারীকে সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করছি না। রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা আছে আদালতের। কিন্তু তাদের হাতবাঁধা থাকে সব সময় রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের কাছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরি থেকে সরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু স্ক্যাম দূর করা যায় না। অঙ্কিতা অধিকারী ইন্টারভিউতে পর্যন্ত বসেননি। সেই কারণেই সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছি। সিবিআই প্রধানকে একটা টিম গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছি।" পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, "সিবিআইকে নির্দেশ দিচ্ছি পরেশ অধিকারীকে প্রথমেই ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের। আজ রাত 8টার সময় পরেশ অধিকারীকে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিচ্ছি। সিবিআই যাঁদের মনে করছে এই স্ক্যামে যুক্ত তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকতে পারে।"