ETV Bharat / state

বিবাহিতা কন্যাও পরিবারের সদস্য, অবিলম্বে প্রাপ্য চাকরি দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 8, 2023, 8:16 PM IST

Calcutta High Court: বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও কন্যা তাঁর পিতৃ পরিবারের সদস্য ৷ তাই সেই পরিবারের সদস্যের জন্য প্রাপ্য চাকরি তাঁকে অবিলম্বে দিতে হবে ৷ শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷

Calcutta High Court
কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা হাইকোর্ট

কলকাতা, 8 ডিসেম্বর: বিবাহিতা কন্যাও পরিবারের সদস্য । পরিবারের প্রাপ্য চাকরি বিবাহিতা কন্যাকে দিতে হবে ৷ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকেই মান্যতা দিল ডিভিশন বেঞ্চ ।

বিয়ের পরেও মেয়েরা বাবার সম্পত্তির অংশীদার । তাহলে বাবার মৃত্যুর পর কেন সেই মেয়ে পরিবারের সদস্য হবেন না ? এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক মহিলা । দশ বছর আগে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সেই নির্দেশ পালন করেনি বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ । এত বছর পর শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চও সেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকেই মান্যতা দিল ।

বীরভূমের বাসিন্দা রেখা পাল । তাঁর বাবার সম্পত্তি বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকার । গত 12 অক্টোবর 2012 সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয় । সেই নির্দেশিকা অনুসারে বিশেষ ছাড়ের কোটাতে আবেদন জানান রেখা পাল । সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ হিসেবে রেখা চাকরির আবেদন জানান । কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় এই কারণ দেখিয়ে যে, রেখা পাল বিবাহিতা । তাই তিনি বিশেষ কোটাতে চাকরি পাওয়ার উপযুক্ত প্রার্থী নন ।

কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর থেকেই তিনি বিধবা মায়ের দেখাশোনার দায়-দায়িত্ব পালন করে আসছেন । বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকারের প্রকাশিত নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে 2013 সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রেখা । বিচারপতি অশোক দাস অধিকারী 2014 সালে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাকে অসাংবিধানিক বলে তা খারিজ করে দেন । পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন, রেখা পাল বিবাহিত হলেও তাঁকে তাঁর বাবার পরিবারের সদস্য হিসাবে ঘোষণা করার এবং তাঁকে বিশেষ কোটায় অন্তর্ভুক্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয় । বিচারপতি তাঁর রায়ে জানান, জমিহারা হিসেবে বিশেষ কোটায় চাকরি পাওয়ার যোগ্য রেখা ৷

সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় । দীর্ঘ 10 বছর কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন এজলাস ঘুরে অবশেষে মামলা আসে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে । মামলাকারী রেখা পালের পক্ষের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী যুক্তি দেন, কেন বিবাহিতা মেয়েকে তাঁর পিতার পরিবারের সদস্য বলে গণ্য করা হবে না ? যদি পুত্র অথবা বিবাহ বিচ্ছিন্ন মেয়েরা পরিবারের সদস্য হন, তাহলে বিবাহিতা মেয়েরাও তাঁর পিতার পরিবারের সদস্য । তাই রাজ্যের নির্দেশিকা অসাংবিধানিক । তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার লিঙ্গ বৈষম্যের কারণ দেখিয়ে কারওকে এ ভাবে তাঁর সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে না । বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সাব্বির রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের দীর্ঘসূত্রিতা ও মামলা ঝুলিয়ে রাখার জন্য মামলাটি খারিজ করে দেন এবং অবিলম্বে ওই মহিলাকে চাকরিতে নিযুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন ।

আরও পড়ুন:

  1. চোর সন্দেহে থানায় নিয়ে গিয়ে অকথ্য অত্যাচার, আইসির বিরুদ্ধে তদন্তের রিপোর্ট পেশ হাইকোর্টে
  2. প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
  3. প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় দ্রুত চার্জ গঠন করে নিম্ন আদালতে বিচার শুরুর নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

কলকাতা হাইকোর্ট

কলকাতা, 8 ডিসেম্বর: বিবাহিতা কন্যাও পরিবারের সদস্য । পরিবারের প্রাপ্য চাকরি বিবাহিতা কন্যাকে দিতে হবে ৷ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকেই মান্যতা দিল ডিভিশন বেঞ্চ ।

বিয়ের পরেও মেয়েরা বাবার সম্পত্তির অংশীদার । তাহলে বাবার মৃত্যুর পর কেন সেই মেয়ে পরিবারের সদস্য হবেন না ? এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক মহিলা । দশ বছর আগে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সেই নির্দেশ পালন করেনি বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ । এত বছর পর শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চও সেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকেই মান্যতা দিল ।

বীরভূমের বাসিন্দা রেখা পাল । তাঁর বাবার সম্পত্তি বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকার । গত 12 অক্টোবর 2012 সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয় । সেই নির্দেশিকা অনুসারে বিশেষ ছাড়ের কোটাতে আবেদন জানান রেখা পাল । সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ হিসেবে রেখা চাকরির আবেদন জানান । কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় এই কারণ দেখিয়ে যে, রেখা পাল বিবাহিতা । তাই তিনি বিশেষ কোটাতে চাকরি পাওয়ার উপযুক্ত প্রার্থী নন ।

কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর থেকেই তিনি বিধবা মায়ের দেখাশোনার দায়-দায়িত্ব পালন করে আসছেন । বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকারের প্রকাশিত নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে 2013 সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রেখা । বিচারপতি অশোক দাস অধিকারী 2014 সালে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাকে অসাংবিধানিক বলে তা খারিজ করে দেন । পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন, রেখা পাল বিবাহিত হলেও তাঁকে তাঁর বাবার পরিবারের সদস্য হিসাবে ঘোষণা করার এবং তাঁকে বিশেষ কোটায় অন্তর্ভুক্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয় । বিচারপতি তাঁর রায়ে জানান, জমিহারা হিসেবে বিশেষ কোটায় চাকরি পাওয়ার যোগ্য রেখা ৷

সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় । দীর্ঘ 10 বছর কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন এজলাস ঘুরে অবশেষে মামলা আসে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে । মামলাকারী রেখা পালের পক্ষের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী যুক্তি দেন, কেন বিবাহিতা মেয়েকে তাঁর পিতার পরিবারের সদস্য বলে গণ্য করা হবে না ? যদি পুত্র অথবা বিবাহ বিচ্ছিন্ন মেয়েরা পরিবারের সদস্য হন, তাহলে বিবাহিতা মেয়েরাও তাঁর পিতার পরিবারের সদস্য । তাই রাজ্যের নির্দেশিকা অসাংবিধানিক । তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার লিঙ্গ বৈষম্যের কারণ দেখিয়ে কারওকে এ ভাবে তাঁর সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে না । বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সাব্বির রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের দীর্ঘসূত্রিতা ও মামলা ঝুলিয়ে রাখার জন্য মামলাটি খারিজ করে দেন এবং অবিলম্বে ওই মহিলাকে চাকরিতে নিযুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন ।

আরও পড়ুন:

  1. চোর সন্দেহে থানায় নিয়ে গিয়ে অকথ্য অত্যাচার, আইসির বিরুদ্ধে তদন্তের রিপোর্ট পেশ হাইকোর্টে
  2. প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
  3. প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় দ্রুত চার্জ গঠন করে নিম্ন আদালতে বিচার শুরুর নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.