কলকাতা, 19 অগস্ট : ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court) । মূলত খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তিন সদস্যের সিট(SIT) গঠন করা হয়েছে । 6 সপ্তাহের মধ্যে সিবিআই ও সিটকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনা খতিয়ে দেখতে এবং সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল। প্রথম মামলা দায়ের করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অনিন্দ্য সুন্দর দাস । তারপর মামলা করেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তথা বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল ।
এরপর ভোট-পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে 18 জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে একটি কমিটি গঠন করে রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আদালতকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ । এরপর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বেশ কয়েকটি টিম রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে এবং 30 জুন একটি গোপন অন্তর্বর্তী রিপোর্ট পেশ করে কলকাতা হাইকোর্টে । সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে 2 জুন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ তাদের নির্দেশে জানায়, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটেছে । কিন্তু পুলিশ সক্রিয় হয়ে তা প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা করেনি । এই ব্যাপারে রাজ্যের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট ।
আরও পড়ুন, Post Poll Violence : ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলার শুনানি শেষ, রায়দান স্থগিত রাখল আদালত
3 অগস্ট এই মামলার শুনানি শেষ হয় । আজ তার রায়দান করার কথা ছিল কলকাতা হাইকোর্টের । মূলত, ধর্ষণ, অস্বাভাবিক খুনের মতো গুরুতর মামলার ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তম বেঞ্চ । অন্য অশান্তির ঘটনা যেমন ভাঙচুর করা, মারধর করা, ঘরছাড়ার মতো কম অশান্তির মামলায় সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট । মূলত, সুমন বালা সাহু, পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র, রণবীর কুমার- এই তিন সদস্যকে নিয়ে সিট গঠন করা হবে । সুপ্রিম কোর্টের অবসারপ্রাপ্ত বিচারপতির তত্ত্বাবধানে সিট কাজ করবে । সিবিআই ও সিট দুজনকেই ছয় সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । 4 অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে । এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে হাইকোর্টের কোনও ডিভিশন বেঞ্চে ৷ এদিকে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিক এই মামলায় যুক্ত হওয়ার যে আবেদন জানিয়েছিলেন, সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ৷
পাশাপাশি, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্তকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্যকে । সেইসঙ্গে যে ঘটনাগুলি ভোট পরবর্তী হিংসা ঘটনা বলে বিবেচিত হবে না, সেগুলি রাজ্য পুলিশের হাতে যাবে । এছাড়া রাজ্য যে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষপাত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, তাও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে ।
এছাড়া ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনায় নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, সমস্ত নথিপত্র সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত।
কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল, বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ আজ এই নির্দেশ দিয়েছেন ।