কলকাতা, 30 অগস্ট: মিথ্যে মাদক মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ । জেলও খাটছেন । আদালতে সে কথা জানিয়েছেন । কিন্তু জামিনের আবেদন না জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে যে তদন্ত হচ্ছে, সেই তদন্তকারী সংস্থাকে পালটানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন মামলাকারী । পাশাপাশি পুলিশ কিছুদিন আগে তাঁর বিরুদ্ধে একই রকম মিথ্যা অভিযোগ করেছিল । হাইকোর্ট সেই জন্য পুলিশকে 2 লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশও দেয় । সেই বিষয়টিও আদালতের গোচরে এনেছেন মামলাকারী । যা সচরাচর দেখাই যায় না । পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়াতে সন্দিহান বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত । এ বিষয়ে রাজ্যের হলফনামা তলব করেছেন তিনি ।
মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, "তদন্তকারী সংস্থা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে না দেখেই তদন্ত শেষ করছে !"
যদিও সরকারি আইনজীবীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সিসিটিভি-র ফুটেজ ফরেনসিকে পাঠানোর কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি কলকাতা হাইকোর্ট । এরপরেই বিচারপতি ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, "তদন্ত সিআইডি করছে, আর সবই কি আদালত বলে দেবে ?"
বিচারপতি সেনগুপ্ত তাঁর নির্দেশে জানান, পুলিশের আচরণ সন্দেহজনক । বিশেষত হাইকোর্টের আগের নির্দেশে তা স্পষ্ট । রাজ্যকে আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে । থানার সিসিটিভি ফুটেজের ফরেনসিক করা হয়েছিল কি না তা জানতে চাইলেও বিচারপতি আপাতত সেই নির্দেশ দেননি ।
টিটাগড়ের বাসিন্দা মহম্মদ শাহরুখ ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য । স্থানীয় জমি মাফিয়ারা মুসলিম কবরখানাকে প্রোমোটরদের হাতে তুলে দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন । তারপরই তাঁকে ফাঁসানোর জন্য টিটাগড় থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হয় ৷ এর আগে, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা গাঁজার মামালা দিয়েছিল পুলিশ । তাতে তিনি ছাড়াও পেয়ে যান । কিন্তু 2022 সালের 19 নভেম্বর তিনি যখন নিজের দোকানে বসেছিলেন পুলিশ তাঁকে সন্ধ্যা নাগাদ ফের গ্রেফতার করে । মামলাকারীর মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয় । কিন্তু সিজার লিস্টে তা দেখানো হয়নি । পাশাপাশি তাঁর কাছ থেকে মাদক উদ্ধার হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় ।
আরও পড়ুন: চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্টের ভিডিয়ো ফুটেজ চাইলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
এ দিন মামলাকারীর তরফে আইনজীবী জানান, "আগের মামলাতে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য হাইকোর্ট পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল যে তাঁকে 2 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ৷ পাশাপাশি মামলাকারী এই তদন্ত অন্য কোনও সংস্থাকে দিয়ে করানোর আবেদন জানাচ্ছে ।" কিন্তু রাজ্যের বক্তব্য, "এই পরিস্থিতিতে তদন্ত অন্য এজেন্সির হাতে দেওয়া বড্ড তড়িঘড়ি হয়ে যাবে ।"
বিচারপতি সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রাজ্যকে আগে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন । পরে মনে করলে তিনি থানার সিসিটিভি ফুটেজের ফরেনসিক তদন্ত করতে নির্দেশ দেবেন বলেও জানিয়েছেন ।