কলকাতা, 10 মার্চ: 842 জন গ্রুপ-সি কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত (Group C Jobs Cancelled) করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। এই বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে শনিবার বেলা 12টার মধ্যে এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বেলা 3টের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলা হয়েছে । এখন থেকে মোট 842 জন প্রার্থী যেন কোনও বেতন বা অন্য কোনও সুবিধা না পান, শিক্ষা দফতরের অধিকর্তাকে তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ।
25 মার্চের মধ্যে ওয়েটিং লিস্টের প্রার্থীদের কাউন্সেলিং করে শূন্যপদে নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । তিনি বলেন, যদি দেখা যায় 842 জনের মধ্যে কোনও প্রার্থীর নাম ওয়েটিং লিস্টে রয়েছে, তাহলে তাঁকে বা তাঁদেরকে পুনরায় ডাকা যাবে না । বিচারপতির নির্দেশ, 785 জন প্রার্থী যদি পদত্যাগ করেন এবং আদালতে এসে জানান যে তাঁরা বেআইনি ভাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন, তাহলে তাঁদেরকে আদালত পরবর্তী সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সহয়তা করবে ।
স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, ওএমআর মার্কশিট সেন্ট্রাল কমিশনের রেকর্ড অনুযায়ী 785 জনের মার্কশিটে কারচুপি করা হয়েছে । তাঁদের জন্য বেআইনি ভাবে সুপারিশ করা হয়েছিল এবং কমিশনের ভিতরের আধিকারিকরা এটা করেছিলেন । এ সব শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 785 জনকে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে এসএসসি নিজেদের দায় এড়াতে পারে না । প্রকৃত যোগ্যরা মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে ঘুরছেন । তাঁদের চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে ।
এর পরই বিচারপতির নির্দেশ, 785 জনকে স্কুল সার্ভিস কমিশন আজই বরখাস্ত করবে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে । এঁদেরকে আর কর্মচারী হিসাবে বিবেচনা করা চলবে না । তাঁদেরকে স্কুলের ভিতর প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না । কর্মক্ষেত্রে তাঁরা যেন কোনও কাগজ বা নথি সরিয়ে না দেন তা দেখতে বলা হয়েছে । এই 785 জন প্রার্থী তাঁদের টাকা ফেরত দেবেন কি না, সেটা পরে আদালত বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে । বিচারপতি জানান, কমিশনকে আগামিকাল অর্থাৎ শনিবার বেলা 12টার মধ্যে একটা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে ।
আরও পড়ুন: চাকরি হারানো গ্রুপ ডি কর্মীদের বেতন ফেরতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ ডিভিশন বেঞ্চের
পাশাপাশি মধ্যশিক্ষা পর্ষদও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেবে বেলা তিনটের মধ্যে । কমিশন এ দিন হলফনামা দিয়ে আরও জানায় যে, 57 জন বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত কিন্তু তাঁদেরকে কমিশন সুপারিশই করেনি । স্বজন পোষণ করে গোপনে এঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল বলে দাবি কমিশনের । এই 57 জনকেও অবিলম্বে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় । কারণ দুর্নীতির কারণে এঁরা নিয়োগ পেয়েছিলেন । এঁদেরকেও কর্মক্ষেত্রে ঢুকতে দিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ।
এখনও পর্যন্ত গ্রুপ-সিতে 3478টি বিকৃত ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছে । এগুলি 20/3/23 এর মধ্যে প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ।
উল্লেখ্য, গ্রুপ-সি তে মোট 2037টি শূন্যপদ ছিল । এর মধ্যে থেকে 842 জনের চাকরি গেল শুক্রবার ।