কলকাতা, 28 জুলাই : কয়লা পাচার, গরু পাচার কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের আবেদন আজ খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) । করোনা পরিস্থিতিতে তাকে ভার্চুয়ালি জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক, কলকাতা হাইকোর্টে এই আবেদন জানিয়েছিল বিনয় । পাশাপাশি তাকে গ্রেফতার না করলে সে দেশে ফিরে সিবিআই-এর (CBI) সঙ্গে তদন্তে সহযোগিতায় রাজি থাকার মত প্রকাশ করেছিল আদালতে । কিন্তু তার সব আবেদন খারিজ করে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চ সিবিআই (CBI) তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে । এর সঙ্গে এও জানানো হয়েছে যে, আদালত আপাতত এই তদন্তে কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ করবে না ৷
অতিমারি পরিস্থিতিতে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে তার বক্তব্য শোনার আর্জি জানিয়ে গত 7 জুন কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল গরু পাচার, কয়লা পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্র ৷ পাশাপাশি তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জিও জানিয়েছিল বিনয় । বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে লুকআউট সার্কুলার (Look out circular, LOC) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ৷ তারপর থেকে বেপাত্তা হয়ে যায় বিনয় মিশ্র ৷ পরে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানায় এক সময়ের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের এই যুব নেতা ।
আরও পড়ুন : বিনয় মিশ্র মামলায় সময় চাইল সিবিআই, পিছিয়ে গেল শুনানি
সেই মামলায় গত 22 এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল বিনয়কে আপাতত গ্রেফতার করা হবে না । তবে তাকে মে মাসে শুরুতে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে ৷ তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে আর আদালতের নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে । কিন্তু বিনয় নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী সিবিআই দফতরে হাজিরা না দিয়ে প্রথমেই আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করে ৷ উল্টে কলকাতা হাইকোর্টে ভার্চুয়ালি জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানায় । তার সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে দীর্ঘদিন ধরে চলে মামলার শুনানি । এমনকি শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত ।
আদালতে সিবিআই যুক্তি দিয়েছিল বিনয় মিশ্র এই মুহূর্তে বিদেশে লুকিয়ে রয়েছে । তার কাছে একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে । তাকে যদি ভার্চুয়ালি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, সে সত্য তথ্য নাও দিতে পারে । পাশাপাশি গরু পাচার, কয়লা পাচার সংক্রান্ত বিষয়ে জড়িত রয়েছে বিএসএফ আধিকারিক থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন আধিকারিকেরা । তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে পাচারের কাণ্ড চালিয়েছে বিনয় । তাই বিষয়টির প্রাসঙ্গিকতা শুধু রাজ্যে বা ব্যক্তিতে সীমাবদ্ধ নয়, যুক্ত রয়েছে জাতীয় স্বার্থ । তাই বিনয় মিশ্রের তদন্তে সিবিআই-এর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন ।