কলকাতা, 31 অক্টোবর: আবারও অসহায় চাকরিপ্রার্থীর সহায় হলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) ৷ টেট পাশ করার পরও নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নেফাউর শেখ নামে এক ব্যক্তি ৷ নির্ধারিত বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (Primary Education Board) তাঁকে চাকরির (Primary Teacher Recruitment) পরীক্ষায় বসতে দেয়নি বলে অভিযোগ ৷ অথচ, তিনি টেট উত্তীর্ণ ৷ এই অবস্থায় আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ওই মামলাকারীকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৷ একইসঙ্গে, অন্য একটি মামলাতেও পর্ষদের জবাব তলব করেছেন তিনি ৷
দ্বিতীয় এই মামলাটি পরীক্ষার্থীদের নম্বর বৃদ্ধির আবেদন সংক্রান্ত ৷ উল্লেখ্য, 2014 সালে যে টেট হয়েছিল, তাতে প্রশ্ন বিভ্রাটের ঘটনা ঘটে ৷ পরবর্তীতে তা নিয়ে মামলা রুজু হয় কলকাতা হাইকোর্টে ৷ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয় ৷ বিচারপতি ভরদ্বাজ নির্দেশ দেন, প্রশ্ন বিভ্রাটের জেরে সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষার্থীকেই ওই প্রশ্নের জন্য বরাদ্দ 6 নম্বর দিতে হবে ৷ কিন্তু, এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে পর্ষদের তরফে 25 হাজার পরীক্ষার্থীকে 6 নম্বর দেওয়া হলেও 738 জনকে সেই নম্বর দিতে টালবাহানা করা হয় বলে অভিযোগ ৷
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের জামিনের আবেদন মানিকের
মামলাকারীদের দাবি, নম্বর কম থাকায় পরপর বেশ কয়েকবার শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ও ইন্টারভিউতে বসতে পারেননি তাঁরা ৷ এবার সেই 6 নম্বরের দাবিতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাসে মামলা রুজু হয়েছে ৷ সোমবার মামলার শুনানি চলাকালীন মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, "সকলের পক্ষে আদালতে আসা সম্ভব নয় ৷ 12 লক্ষ 95 হাজার চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৷ কৃতকার্য হন 1 লক্ষ 25 হাজার ৷ বাকিদের ওএমআর শিট প্রকাশের নির্দেশ দিক আদালত ৷ আর তা করতে লম্বা সময় লাগবে ৷ তাই প্রয়োজনে টেট সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড পিছিয়ে দেওয়া হোক ৷"
মামলাকারীদের আবেদন শোনার পর এই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় পর্ষদের কাছে জানতে চান, তারা কি সমস্ত পরীক্ষার্থীকেই ওই 6 নম্বর দেবেন ৷ আগামী শুনানিতে পর্ষদকে এই প্রশ্নের জবাব আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে ৷ আগামী 4 নভেম্বর দুপুর 12টায় এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৷
একইসঙ্গে, চাকরিপ্রার্থী নেফাউর শেখের মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ হল, পর্ষদের ভুলে যদি আবেদনকারীর বয়সসীমা পেরিয়ে যায়, তার দায়ও পর্ষদকেই নিতে হবে ৷ প্রসঙ্গত, নেফাউর আদালতকে জানিয়েছেন, 2014 সালে তিনি প্রথমবার টেট দিয়েছিলেন ৷ এর 2 বছর পর তিনি জানতে পারেন, তিনি পাশ করেননি ! পরে 2021 সালে সালে তিনি টেট দিয়ে উত্তীর্ণ হন ৷ কিন্তু, তত দিনে তাঁর বয়স বেড়ে গিয়েছে ৷ ফলে পর্ষদ তাঁকে আর নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে দেয়নি ৷ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশ, আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে নেফাউরকে নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে ৷