কলকাতা, 1 নভেম্বর: বাঁকুড়ার মোহিনী মোহন ক্লাবের মাঠে বিজেপির বিজয়া সম্মিলনীর অনুমতি দিলেন না কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । ওই ক্লাবের মাঠে বুধবার বিকেল 5টার সময় বিজেপির বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান করার কথা ছিল । সেখানে ইতিমধ্যে কর্মী-সমর্থকরা হাজির হয়েছেন, অনুমতি না দিলে আর্থিক ক্ষতি হবে বলে জানানো হয় বিজেপির তরফে । কিন্তু পুলিশ জানায়, এ দিন ওই মাঠে অন্য একটি অনুষ্ঠান হচ্ছে । মাঠে প্রবেশের ও বেরোনোর দু’টি মাত্র গেট । ফলে কোনোরকম অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পদপিষ্ট হয়ে মারা যেতে পারেন লোকজন । পুলিশের এই যুক্তি শোনার পর সভার অনুমতি না দেওয়ার কথা বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । উল্লেখ্য, ওই সভায় শুভেন্দু অধিকারীরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল ৷
মামলাকারী বিজেপি কর্মীর তরফে অভিযোগ করা হয়, কোনও সভা-সমাবেশ করতে গেলে তাঁদের অনুমতি দেয় না পুলিশ-প্রশাসন । অথচ রাজ্যের শাসক দল এক ঘণ্টার মধ্যে তারা সভা-সমাবেশ অনুমতি পেয়ে যায় । জ্বলন্ত প্রমাণ রাজভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করতে একঘণ্টার মধ্যে পুলিশ অনুমতি দিয়ে ছিল ।
এ দিন অনুমতি কেন দেওয়া হচ্ছে না, তা জানতে চেয়ে বাঁকুড়া জেলার এসপিকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে তলব করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় । এসপি আদালতে জানান, 28 অক্টোবর আবেদন মেল করা হয় । 30 অক্টোবর আবেদন পত্র জমা দেওয়া হয়েছে । পুলিশ সুপার আরও জানান, সবে পুজো গেল । পুলিশ দিন-রাত এক করে মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছেন । অনেকে ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছেন । এই মুহূর্তে এই অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে যে পরিমাণে পুলিশের প্রয়োজন, তা দেওয়া সম্ভব নয় । পরে হলে নিশ্চই পুলিশ বিষয়টি দেখবে ।
বিচারপতি জানতে চান, বিজেপির পক্ষ থেকে বিজয়া সন্মিলনী করছে বলে পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ, এটা কি সত্যি ? পরে বিচারপতি এসপির কথা শোনার পর বলেন, "শেষ বেলায় কোর্টে এলে কী করে হবে ? আসানসোলে কম্বল বিতরণকে কেন্দ্র করে কী হয়ে ছিল সবাই জানে । এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে যদি কোনও অঘটন ঘটে তার দায়িত্ব কে নেবেন ?’’
যদি স্থানীয় পুলিশ যদি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করা যেতে পারে বলেও বিজেপির আইনজীবী জানায় । কিন্তু বিচারপতি বলেন, ‘‘আদালত অনুমতি দেওয়ার পরে যদি কিছু হিংসার ঘটনা ঘটে তাহলে ? পুলিশ, যারা ভিড় সামলাতে দক্ষ,তারা যেহেতু বলছে কিছু অপ্রতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তারা কিছু করতে পারবে না । ফলে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় ।’’ 4 নভেম্বরের পর পুলিশ জানাবে কোন দিন বিজয়া সম্মিলনী করা যাবে ।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর বড়দা কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে পুলিশি হেনস্তা ! এগরার এসডিপিও’কে 5 লাখ টাকা জরিমানা হাইকোর্টের