কলকাতা, 24 মার্চ: ধর্ষণের (Rape) অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ ৷ পুলিশের যুক্তি, যেহেতু অভিযুক্ত তদন্তে সহযোগিতা করছেন, তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি ৷ শুক্রবার পুলিশের এমন যুক্তি শুনে বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷ তাই মামলার তদন্তকারী অফিসারকে বদলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে ৷ তবে এই প্রথম নয়, এই মামলায় এর আগে দু’জন তদন্তকারী আধিকারিককে বদল করেছিল আদালত ৷ এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা (Justice Raja Sekhar Mantha) এই নির্দেশ দিয়েছেন ৷ একই সঙ্গে তিনি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে একজন এসিপিকে এই তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ।
গত 22 অক্টোবর দমদমের একটি গেস্ট হাউসে একজন মহিলাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে ৷ গত 9 নভেম্বর অভিযোগ দায়ের হয় দমদম থানায় । মহিলার দাবি, এয়ার পোর্ট 2 নম্বর গেট এলাকার একটি গেস্ট হাউসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ৷ তদন্তে নামে পুলিশ ৷ কিন্তু ওই গেস্ট হাউসের সিসিটিভি ফুটেজ পায়নি পুলিশ । অভিযুক্তের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে ওই মহিলা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ।
এদিন অভিযুক্তের তরফে আদালতে জানানো হয়, ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন যে পুলিশ যতক্ষণ না গ্রেফতার করছেন অভিযুক্তকে, ততদিন পর্যন্ত মেডিক্যাল করার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় । এদিকে পুলিশ জানাচ্ছে, অভিযুক্ত সবরকম ভাবে সহযোগিতা করছেন তদন্তে । আগামীতে তিনি সবরকম ভাবে সহযোগিতা করতে রাজি আছেন । তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি ৷
আক্রান্ত মহিলার তরফে আদালতে আইনজীবী বলেন, ‘‘376 ধারায় ধর্ষণের অভিযোগের কোনও মামলায় 41 এ তে নোটিশে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতেই পারে । কারণ, এক্ষেত্রে অন্তত 10 বছরের সাজা হয় । পুলিশ ইচ্ছে করেই গ্রেফতার করছে না ।’’
উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার পরিবর্তন করতে । ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে একজন এসিপিকে এই তদন্তে নিযুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । তাঁর আরও নির্দেশ,
দমদম থানার তদন্তকারী অফিসার সমস্ত নথি হস্তান্তর করে দেবেন । এক মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পূর্ণ করার নির্দেশ ।
আগের দিন শুনানিতে বিচারপতি ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিকে চূড়ান্ত ভর্ৎসনা করেছিলেন ৷ কারণ, 11 নভেম্বর পাঠানো মেডিক্যাল পরীক্ষার নমুনা রিপোর্ট এতদিনেও ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি দেয়নি । ফরেনসিক রিপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে অযথা দেরি করছে বলে ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবের অধিকর্তাকেও আদালতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি ।
আরও পড়ুন: চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে, সিবিআই চেয়ে মামলা হাইকোর্টে