কলকাতা, 17 ফেব্রুয়ারি: রাজনৈতিক চাপের কথা ভুলে যান ৷ রাজ্যের যে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম, তার অনুমোদন প্রত্যাহার করুন (Cancel school approval)। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরকে এমনই পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)৷ শুক্রবার এই পরামর্শ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ।
শিক্ষা দফতরকে পরামর্শ আদালতের: হাওড়ার একটি মামলার দেখা গিয়েছে যে, একটি স্কুলে 13 জন পড়ুয়ার জন্য শিক্ষক রয়েছেন 5 জন । অন্যদিকে, আর একটি স্কুলে প্রায় 550 জন পড়ুয়া রয়েছে ৷ কিন্তু বাংলার শিক্ষক সেখানে নেই 2016 সাল থেকে ৷ আর নেই গণিতের শিক্ষকও । এই তথ্য জানার পরই বিদ্যালয়ের অনুমোদন প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষা দফতরকে পরামর্শ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ।
উত্তরে শিক্ষা দফতরের আইনজীবী জানান, এটা করতে গেলে একটু সমস্যা আছে । স্থানীয় স্তরে সমস্যা হতে পারে ৷ রাজনৈতিক চাপ আসতে পারে । এর পরেই বিচারপতি বসু বলেন, রাজনৈতিক চাপের কথা ভুলে যান ৷ রাজ্যের যে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম, তার অনুমোদন প্রত্যাহার করুন ।
আগেও শিক্ষকদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বসু: বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এর আগে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলে বদলির আবেদন জানাচ্ছেন দেখে অত্যন্ত ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই শিক্ষকদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন । তারপর পুরুলিয়া জেলার ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত নিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শকের রিপোর্ট তলব করেছিলেন তিনি ।
আরও পড়ুন: নৌশাদের বন্ধুকে ভার্চুয়াল জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি, করা যাবে না কঠোর পদক্ষেপ
পাশাপাশি রাজ্যকে সরকারি স্কুলগুলিতে বদলির ব্যাপারে কড়া হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি এই ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলেন তিনি । সেই নির্দেশের ভিত্তিতে কিছুদিন আগে রাজ্য সরকার এই ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত যাচাই করে তারপর বদলির অনুমতি দেওয়া হবে ।
ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত নিয়ে জনস্বার্থ মামলা বিচারাধীন: এর আগে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চেও এই মর্মে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল । রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের ব্যাপারে সঠিক তথ্য রাজ্যের কাছে না থাকায় সরকারি ফান্ডের অপব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে । কারণ রাজ্যে বেশকিছু স্কুল আছে যেখানে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই । আবার বহু স্কুল আছে যেখানে ছাত্র নেই কিন্তু শিক্ষক রয়েছে বেশি । বছরের পর বছর সেই শিক্ষকরা স্কুলে যান ।
একইসঙ্গে ওই ধরনের স্কুলগুলি খতিয়ে না দেখে সরকারি অনুদান পাঠানো হয় । ফলে সেই টাকার অপব্যবহার হচ্ছে বলে দাবি করা হয় । প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কাছে এই ব্যাপারে হলফনামাও তলব করেছিল । মামলাটির এখনও নিষ্পত্তি হয়নি ।