কলকাতা, 5 জুলাই: রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার অনুমতি দিল না কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বুধবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ৷ এর আগে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে এই ভোটে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার আবেদন খারিজ করেছিল। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ।
মঙ্গলবার এই মামলার দীর্ঘ শুনানি হয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ৷ তবে মামলার রায়দান স্থগিত ছিল । এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো সংস্থাকে রাজনৈতিক কাজে লাগানো যায় না । এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশনও বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের সেই বক্তব্যকেই সমর্থন করে ৷
এদিন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার স্বপক্ষে কোথাও কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নমুনা তুলে ধরতে পারেনি । এদিন হাইকোর্ট রায়ে আরও জানায়, রাজ্য নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা, যারা শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন করতে সচেষ্ট । কমিশন রাজ্যের স্পর্শকাতর জায়গাগুলি চিহ্নিত করেছে যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে তারা যে উৎসাহী তার প্রমাণ ।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন 12 জুন যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল তা মানবাধিকার কমিশনের এক্তিয়ার বহির্ভূত বলেও জানিয়েছে হাইকোর্ট ৷ একই সঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দলের তরফে একটি মামলায় প্রাক্তন কোনও বিচারপতিকে পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগের যে আর্জি জানানো হয়েছিল, তাও ইতিমধ্যেই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ খারিজ করে দিয়েছে । একটি সাংবিধানিক সংস্থা হিসাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পর্যবেক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব রাজ্য নির্বাচন কমিশনের, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সেই দায়িত্ব পালন করতে পারে না বলে ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানায় ।
আরও পড়ুন: গণনাকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বেও কেন্দ্রীয় বাহিনী, নির্দেশ হাইকোর্টের
এর পাশাপাশি, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আবেদন খারিজ করতে গিয়ে এদিন জানিয়েছে, এই আদালত রাজ্যে যাতে অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয় তার জন্য একাধিক নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে । ফলে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করার কোনও কারণ আছে বলে মনে করছে না আদালত ।