কলকাতা, 9 জুন: বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চের সামনে স্লোগান এবং ঝামেলা করার ঘটনায় অভিযুক্ত 9 আইনজীবীকে মামলা থেকে রেহাই দিল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ ৷ ওই নয় আইনজীবী হলফনামা দিয়ে ক্ষমা চাওয়ায় তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ৷ সেই সঙ্গে পুলিশি তদন্তে বিচারপতির বাড়ি ও কলকাতা হাইকোর্টে পোস্টার লাগানোর অভিযোগে ধৃত 6 জনকেও শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে ৷ তবে, এই মামলায় নতুন 2 জনের নাম উঠে এসেছে পুলিশের রিপোর্টে ৷ কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের আগামী শুনানির দিন অর্থাৎ, 7 জুলাই আদালতে পেশ করতে ৷
উল্লেখ্য, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বাড়িতে পোস্টার লাগানো ও তাঁর এজলাসে গণ্ডগোলের মামলার আজ শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে ৷ সেখানেই যে নয় আইনজীবী বিচারপতির বিরুদ্ধে স্লোগান এবং এজলাসে গণ্ডগোল করেছিলেন, তাঁরা হলফনামা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন আদালতের কাছে ৷ সেই কারণে এ দিন বৃহত্তর বেঞ্চের তরফে তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ৷ পাশাপাশি, যে 6 জনকে কলকাতা পুলিশ বিচারপতির বাড়ি ও কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে পোস্টার লাগানোর জন্য গ্রেফতার করেছিল, তাঁদেও আজ মুক্তি দিয়েছেন বিচারকরা ৷
তবে, তাঁদের সতর্ক করেছে বেঞ্চ ৷ বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে যেন এমন কাজ না হয় ৷ এমনটা করলে সেক্ষেত্রে আদালত কঠিন পদক্ষেপ নেবে ৷ তবে, এই মামলার শুনানিতে আজ দু’টি নতুন নাম উঠে এসেছে ৷ একটি আইনজীবী দ্বীপনীল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক মান্না নামে এক ব্যক্তির নাম পুলিশের পেশ করা রিপোর্ট উঠে এসেছে ? কিন্তু, কারা এরা ? পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, আইনজীবী দ্বীপনীল বন্দ্যোপাধ্যায় রাজাশেখর মান্থার বাড়ি ও আদালত চত্বরে পোস্টার লাগানোর জন্য 50 হাজার টাকা দিয়েছিলেন অভিষেক মান্নাকে ৷
আরও পড়ুন: ফের হরিশ মুখার্জি রোডে মিছিলের অনুমতি বিচারপতি মান্থার
কিন্তু, অভিষেক মান্না কে ? কলকাতা হাইকোর্ট বা আইনজীবী মহলের সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক ? এসবের কোনও জবাব পাওয়া যায়নি ৷ এ দিন বৃহত্তর বেঞ্চ তাঁদের দু’জনকে 7 জুলাইয়ের শুনানিতে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছে ৷ এর জন্য কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের আদালতে পেশ করানোর জন্য ৷
অন্যদিকে, এই পোস্টার মামলায় এ দিন তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা আরও একটি ইস্যু আদালতে তুলে ধরেন ৷ তা হল, মে দিবস অর্থাৎ, শ্রম দিবসের দিন কলকাতা হাইকোর্টে ছুটির দাবিতে পোস্টার লাগানোর ইস্যু ৷ সূত্রের খবর, সেই পোস্টারগুলি বামপন্থী আইনজীবীরা লাগিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ৷ আর যেহেতু তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে বিচারপতি মান্থার এজলাসে ঝামেলার অভিযোগ ছিল ৷ সেই কারণে পালটা 1 মে-র পোস্টার ইস্যুকে তুলে ধরা হয় ৷
আরও পড়ুন: পৌরনিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে আপাতত কোনও স্থগিতাদেশ দিল না হাইকোর্ট
জানা গিয়েছে, 31 এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে একটি চিঠি লেখেন বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ৷ সেখানে প্রধান বিচারপতির কাছে 1 মে আদালত ছুটি রাখার আবেদন করা হয় ৷ কিন্তু, আবেদনের পাশাপাশি অভিযোগ, আদালত চত্বরে ছুটির দাবিতে 1 মে পোস্টার পড়ে ৷ বিষয়টি আজ বেঞ্চের কাছে জানাতেই বিষয়টি নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করে বৃহত্তর বেঞ্চ ৷ কারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ? তা তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে ৷