কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর: পশ্চিমবঙ্গে কেন 2020 সালে হঠাৎ করে কেন্দ্র সরকারের 'কমন সার্ভিস সেন্টার '(CSC) প্রকল্প বন্ধ করে দিল তা স্পষ্ট নয় । অবিলম্বে রাজ্যকে এ ব্যাপারে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । পাশাপাশি কেন্দ্র সরকার ও অন্যান্য পক্ষকে তাদের রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে সোমবার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । তাছাড়া বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজ্যে কী পরিষেবা দেওয়া হয় 15 দিনের মধ্যে তাও হলফনামায় জানাতে হবে রাজ্যকে ।
এই বিষয়ে মামলাকারী সুকান্ত মজুমদারের তরফে আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য এদিন জানান, 2006 সালে কেন্দ্র সরকার ই-গভর্নেন্স চালু করে । 2015 সালে জনকল্যাণমুখী প্রকল্প হিসাবে 2 লাখ 50 হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে সিএসসি চালু করা হয় ৷ প্রায় 200 সরকারি প্রকল্প এর মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হত । মূলত নীচুতলার মানুষের হাতে সরকারের দেওয়া সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়াই ছিল এর উদ্দেশ্য । এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য, আইন ও অর্থনৈতিক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হত গ্রামীণ এলাকায় । 2020 সালে হঠাৎ করে রাজ্য সরকার বাংলা কেন্দ্র চালু করে কেন্দ্রের কমন সার্ভিস সেন্টার বন্ধ করে দেয় । ফলে প্রায় 40 হাজার ছেলেমেয়ে বেকার হয়ে যায় । একইসঙ্গে কেন্দ্র সরকারের প্রায় 200 স্কিম পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয় সাধারণ মানুষকে ।
কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী বলেন, "রাজ্য সরকার যেভাবে কেন্দ্রের এই স্কিম বন্ধ করে দিয়েছে তা সংবিধান বিরোধী । জনগণনা প্রকল্পে গোটা দেশের অন্যান্য রাজ্য কাজ করলেও পশ্চিমবঙ্গ কোনও কাজ করেনি । 29টি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কেন্দ্রের এই 200টি প্রকল্প মানুষের কাছে দেওয়া হত সেগুলো কেন হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়া হল ?"
2019 সালের 7 মার্চ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ স্কিম চালু করতে আর্জি জানিয়ে চিঠিও দিয়েছিল কেন্দ্র । সংবিধানের 256 ও 257 ধারা অনুযায়ী এই স্কিম চালু রাখতে বাধ্য রাজ্য ৷ কিন্তু রাজ্য এতদিনে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি । মামলাকারী জানান, রাজ্য জোর করে এই প্রকল্প বন্ধ রাখার জন্য কেন্দ্রের আরও অনেক জনকল্যাণকর কাজের ক্ষেত্রেও রাজ্য পিছিয়ে পড়েছে দিনদিন ।
যদিও এদিন রাজ্যের তরফে কোনও আইনজীবী আদালতে হাজির ছিলেন না । বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের রিপোর্ট তলব করেছে এদিন । বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কয়েকদিন আগে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে কেন কমন সার্ভিস সেন্টার বন্ধ করে দিল রাজ্য সরকার তা জানতে চেয়েছেন । পাশাপাশি রাজ্য যাতে অবিলম্বে এই প্রকল্প চালু করে সাধারণ মানুষের সুবিধার কথা ভেবে আদালত সেই নির্দেশ দিক এই আর্জিও জানিয়েছিলেন তিনি ।
আরও পড়ুন : কেন্দ্রের ভাবনায় রেশন দোকান হবে 'কমন সার্ভিস সেন্টার', মিলবে পোস্ট অফিসের সুবিধাও